Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

কোরআনের জ্ঞানচর্চার বিশেষ মর্যাদা

ধর্ম ডেস্ক

অক্টোবর ১, ২০২১, ১২:৩৫ পিএম


কোরআনের জ্ঞানচর্চার বিশেষ মর্যাদা

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দ্বিনি ইলম (ধর্মীয় জ্ঞান) অর্জনের উদ্দেশ্যে কোনো রাস্তা অবলম্বন করে আল্লাহ তার জন্য বেহেশতের রাস্তা সহজ করে দেবেন। যখন কোনো জনসমষ্টি আল্লাহ তাআলার ঘরগুলোর মধ্যে কোনো ঘরে (মসজিদে) সমবেত হয় এ উদ্দেশ্যে যে তারা আল্লাহর কিতাব (কোরআন) তিলাওয়াত করবে এবং তাদের মধ্যে পরস্পর তার মর্ম শিখবে, তখন তাদের ওপর শান্তি অবতীর্ণ হয়, রহমত তাদের ঢেকে নেয়, ফেরেশতারা তাদের ঘিরে রাখে, আল্লাহ নিকটস্থ্থ ফেরেশতাদের সঙ্গে তাদের বিষয় আলোচনা করেন। যে ব্যক্তির আমল তাকে পিছিয়ে দেয় বংশপরিচয় তাকে এগিয়ে দিতে পারবে না।’ (মুসলিম, হাদিস : ৭০২৮)

ইসলামী জ্ঞানচর্চার বিশেষ মর্যাদা : দ্বিনি ইলম বা ইসলামবিষয়ক জ্ঞানচর্চার বিশেষ মর্যাদা কোরআন-হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। হাদিসের ভাষ্য মতে, দ্বিনি ইলম মানুষকে জান্নাতের দিকে নিয়ে যায় এবং আলেমরা তাকে ‘সাবিলুল্লাহ’ তথা আল্লাহর পথ হিসেবে গণ্য করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে আর যাদের জ্ঞান দান করা হয়েছে, আল্লাহ তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন।’ (সুরা মুজাদালা, আয়াত : ১১)

অন্য আয়াতে এসেছে, ‘আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই এবং ফেরেশতারা ও ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত আলেমরা সাক্ষ্য দেন তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই।’ সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৮)

ইমাম কুরতুবি (রহ.) বলেন, ‘আয়াতটি ইলমের মর্যাদা এবং আলেমদের সম্মানের প্রমাণ। কেননা যদি আলেমদের চেয়ে কেউ বেশি সম্মানী হতো, তাহলে তিনি অবশ্যই তাদের তাঁর নামের সঙ্গে ও ফেরেশতাদের নামের সঙ্গে সংযুক্ত করতেন; যেমনি আলেমদের সংযুক্ত করা হয়েছে।’ (তাফসিরে কুরতুবি : ৪/৪১)

কোরআনচর্চা উত্তম ইবাদত : সব ধর্মীয় জ্ঞানের মধ্যে কোরআনচর্চার মর্যাদা সবচেয়ে বেশি। রাসুলুল্লাহ (সা.) কোরআনচর্চাকে উত্তম ইবাদত এবং কোরআনচর্চাকারীকে উত্তম ব্যক্তি বলেছেন। তিনি বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি যে কোরআন শিক্ষা করে এবং তা শিক্ষা দেয়।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ১৪৫২)

কোরআন গবেষকের বিশেষ মর্যাদা : প্রাজ্ঞ আলেম ও ফকিহরা (ইসলামী আইনজ্ঞ) বলেন, কোরআনচর্চার প্রতিস্তর ইবাদত হিসেবে গণ্য। যেমন তিলাওয়াত করা—তা না বুঝে হলেও। এমনকি কেউ যদি কোরআন তিলাওয়াত শেখার জন্য আরবি বর্ণমালা শেখে তবে তাও ইবাদত হিসেবে গণ্য হবে। তবে কোরআনের একাধিক আয়াতে মুসলিম উম্মাহকে কোরআন গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, ‘কোরআনে কারিমের চাহিদা হলো তার অর্থ বোঝা ও তার ওপর আমল করা। অতঃপর যদি এ বিষয়ে কারো হিম্মত না হয়, তাহলে সে আলেম ও দ্বিনদারদের দলভুক্ত হবে না।’ (আল ইজাবাতুল মুখতাসারাহ : ১/৯)

ইমাম নববী (রহ.) বলেন, ‘এবং তিলাওয়াতকারীর উচিত আল্লাহ তাআলার ভয়ে বিনম্র হওয়া, গভীর ধ্যানের ও বিনয়ের সঙ্গে পড়া। এটাই উদ্দিষ্ট ও প্রত্যাশিত। কেননা এর দ্বারা বক্ষ প্রসারিত হয় ও অন্তর আলোকিত হয়।’ (ইরশাদাতুল ইবাদি ইলা সাবিলির রাশাদ : ১/১৬৮)

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তবে কি তারা কোরআন সম্পর্কে অভিনিবেশসহ চিন্তা করে না? না তাদের অন্তর তালাবদ্ধ? (সুরা মুহাম্মদ, আয়াত : ২৪)

নবী করিম (সা.) সেসব মানুষের নিন্দা করেছেন, যারা কোরআন অধ্যয়ন করে কিন্তু তা অনুধাবনের চেষ্টা করে না। তিনি বলেন, ‘তারা কোরআন তিলাওয়াত করে; কিন্তু তা তাদের কণ্ঠনালি অতিক্রম করে না।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১০৮৬)

আমারসংবাদ/আরএইচ