Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

ভ্রমণের সময় বিশ্বনবি নামাজ পড়তেন যেভাবে

মো. মাসুম বিল্লাহ

মে ২০, ২০২২, ০২:৫৩ পিএম


ভ্রমণের সময় বিশ্বনবি নামাজ পড়তেন যেভাবে

আরবিতে কসর শব্দের অর্থ হলো- কম করা, কমানো। মুসাফির (ভ্রমণকারী) ব্যক্তি চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজ দুই রাকাত (কসর) পড়বেন। আর তিনি যদি সেখানে ১৫ দিনের কম সময় থাকার নিয়ত করেন, তবুও চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজ দুই রাকাত পড়বেন। এই সংক্ষেপে আল্লাহপ্রদত্ত কল্যাণ রয়েছে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমরা যখন জমিনে সফর করবে, তখন তোমাদের জন্য নামাজের কসর করায় কোনো আপত্তি নেই। (সুরা নিসা, আয়াত: ১০১)

মূলত কোনো ব্যক্তি তার অবস্থানস্থল থেকে ৪৮ মাইল তথা ৭৮ কিলোমিটার দূরে সফরের নিয়তে বের হয়ে তার এলাকা পেরিয়ে গেলেই শরিয়তের দৃষ্টিতে সে মুসাফির। আর মুসাফিরের নামাজকে শরিয়তের পরিভাষায় কসর বলা হয়। (জাওয়াহিরুল ফিক্কহ ১-৪৩৬, আহসানুল ফাতাওয়া ৪-১০৫)

শহরের ক্ষেত্রে ওই শহরের করপোরেশনের নির্ধারিত সীমানা থেকে সফরের সীমা নির্ধারিত হবে। অনুরূপ সফর থেকে ফিরে আসার ক্ষেত্রেও নিজ এলাকার সীমানায় প্রবেশের সঙ্গেই তার সফরের বিধান শেষ হয়ে যাবে। (রদ্দুল মুহতার ২-১২৮)

সফরে রোজা না রেখে পরবর্তী সময়ে কাজা করলেও চলবে। অনুরূপভাবে মোজায় মাসেহ করা ইত্যাদি বিধানে সাধারণ অবস্থা থেকে ভিন্নতা রয়েছে। মুসাফির সফর অবস্থায় কোনো মুকিম (স্থানীয়) ইমামের পেছনে নামাজের নিয়ত না করলে, তার জন্য চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজ দুই রাকাত পড়া জরুরি। এটাকে কসরের নামাজ বলে। এটাই ইসলামের বিধান।

মুসাফির চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজ একাকী পড়লে বা তার মতো মুসাফির ইমামের পেছনে আদায় করলে, নামাজ কসর করা জরুরি। এক্ষেত্রে পূর্ণ নামাজ পড়া ঠিক নয়। এ প্রসঙ্গে হাদিসে বলা হয়েছে- হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘আল্লাহতাআলা তোমাদের নবির জবানে নামাজকে মুকিম অবস্থায় চার রাকাত ও সফর অবস্থায় দুই রাকাত ফরজ করেছেন।’ (মুসলিম, হাদিস নং: ৬৮৭)

মুসাফির ব্যক্তি স্থানীয় ইমামের পেছনে ইকতিদা করলে সে ইমামের অনুসরণে পূর্ণ নামাজই আদায় করবে। (আল মাবসুত, সারাখসি ১-২৪৩)। এ বিষয়ে হাদিসে বলা হয়েছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, মুসাফির যদি মুকিমদের সঙ্গে নামাজে শরিক হয় তবে সে তাদের মতো (চার রাকাত) নামাজ পড়ে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ৩৮৪৯)

স্থানীয় কোনো ব্যক্তি যদি মুসাফির ইমামের পেছনে ইকতিদা করে, তাহলে চার রাকাতবিশিষ্ট নামাজগুলোতে ‘মুসাফির ইমাম’ নামাজ দুই রাকাত পড়ে সালাম ফিরানোর পর মুকিম (স্থানীয়) মুক্তাদি দাঁড়িয়ে সুরা পড়া ছাড়া বাকি দুই রাকাত নামাজ পড়ে নিবে।

তবে মাগরিব, বিতর ও ফজরের নামাজ পূর্ণই আদায় করতে হবে। এগুলোর কসর নেই। তেমনিভাবে সুন্নত নামাজেরও কসর হয় না। তাই সুন্নত পড়লে পুরোটাই পড়বে।

কোনো জায়গায় ১৫ দিন বা ততধিক অবস্থানের নিয়ত করলে সে সেখানে মুকিম হয়ে যাবে। সেখান থেকে সামানা-পত্রসহ প্রস্থানের আগ পর্যন্ত সেখানে পূর্ণ নামাজ পড়বে এবং মুকিমের বিধান জারি থাকবে। (বাদায়েউস সানায়ে ১-১০৪)

সফর অবস্থায় ছুটে যাওয়া নামাজ মুকিম অবস্থায় (আবাস্থলে এসে) কাজা করলে ‘কসর’ই আদায় করবে, আর মুকিম অবস্থায় ছুটে যাওয়া নামাজ সফরে কাজা করলে তা পূর্ণ আদায় করবে। (হেদায়া ১-৮১)

Link copied!