Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

বেরোবিতে অবৈধ বিভাগীয় প্রধানকে বয়কট ঘোষণা

বেরোবি প্রতিনিধি

জানুয়ারি ৬, ২০২১, ০৩:৫০ পিএম


বেরোবিতে অবৈধ বিভাগীয় প্রধানকে বয়কট ঘোষণা

উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) রসায়ন বিভাগে বৈধ বিভাগীয় প্রধান ড. বিজন মোহন চাকির নেতৃত্বে বিভাগের একাডেমিক কার্যক্রম চালু করার ঘোষণা দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে বিভাগটির ১১ জন (২ জন শিক্ষাছুটিতে) শিক্ষকের মধ্যে ৭ জন শিক্ষক।

বুধবার (০৬ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের গ্যালারি রুমে সংবাদ সম্মেলন করেন বিভাগটির সচেতন ও সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষকরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এইচ. এম. তারিকুল ইসলাম বলেন, ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ আমরা রসায়ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ রাষ্ট্রীয় আইন মোতাবেক বিভাগীয় প্রধান নিয়োগের দাবিতে কর্মবিরতী ঘোষণা করেছিলাম। আপনারা জানেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য যে রাষ্ট্র কতৃক নিযুক্ত তিনি নিজ স্বার্থ চরিতার্থে সে রাষ্ট্রেরই আইন মানেন না। মহামান্য আদালত কে অবমাননা করতে কোনরূপ দ্বিধা করছেনা বর্তমান উপাচার্য। স্বেচ্ছাচারী প্রশাসনের রাষ্ট্রীয় আইন ভঙ্গের এরূপ চর্চা সাধারণভাবে চলতে থাকলে আমাদের রাষ্ট্রের রাষ্ট্রযন্ত্র ভেঙ্গে পড়া অবশ্যম্ভাবী। রাষ্ট্র বিরোধী এরূপ কার্যক্রম প্রতিহত করা রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিকের একান্ত কর্তব্য বলে আমরা মনে করি।
 
তিনি আরও বলেন, এ অবস্থায় রাষ্ট্রের ২৯ নং আইন এবং মহামান্য আদালতের রায় বিবেচনায় নিয়ে আইন মোতাবেক বিভাগীয় প্রধান নিয়োগের দাবিতে আমরা রসায়ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ কর্মবিরতী ঘোষনা করেছিলাম। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন আইন অবমাননা করতে যেমন দ্বিধা করেন না তেমনই শিক্ষার্থীদের পাঠ-পরিক্রমা বন্ধ করে হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতে পিছপা হন না। রাষ্ট্রের নাগরিক হিসাবে এক দিকে যেমন রাষ্ট্রীয় আইন সমুন্নত প্রশ্নে আপোষ করার সুযোগ নেই অপরদিকে শিক্ষক হিসাবে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা বিষয়ে আপোষ করার অবকাশ নেই।

একই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় আইন এবং শিক্ষা কার্যক্রম সমুন্নত রাখতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৯ এবং মহামান্য আদালতের রায় মোতাবেক বৈধ বিভাগীয় প্রধান ড. বিজন মোহন চাকী'র নেতৃত্বে আমরা বিভাগের একাডেমিক কমিটি রসায়ন বিভাগের একাডেমিক কার্যক্রম (পরীক্ষা ও অনলাইন ক্লাস পরিচালনা) চালুকরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।

এমতাবস্থায়, তারা রসায়ন বিভাগের একাডেমিক কমিটির অন্যায়, অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারীতার অভিযোগে অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের রাষ্ট্রীয় আইন বিরোধী সকল কার্যক্রমসহ অবৈধ ভাবে নিযুক্ত বিভাগীয় প্রধান জনাব তানিয়া তোফাজ এর সকল কার্যক্রমকে বয়কট করেন।
 
জানা যায়, বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের বিগত ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০খ্রীঃ তারিখে স্মারক নং- বেরোবি/রেজি/শিক্ষক নিয়োগ-বিজ্ঞপ্তি/২০২০/৭০৩ অনুযায়ী বিজ্ঞাপন প্রদানে বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির অনুমোদন নেওয়া হয়নি। রাষ্ট্রের ২৯ নং আইন তথা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৯ বিশ্লেষণ করে বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটির সভার সকলে এই মতে একমত হন যে, যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সংবিধি ৩৯(২) এর ১১ (৯) (খ) অনুযায়ী শিক্ষক, অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ প্ল্যানিং কমিটির কার্যাবলী সম্পাদনের মধ্যে পড়ে। কাজেই, বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞাপন বিভাগের প্ল্যানিং কমিটি কর্তৃক অনুমোদন অপরিহার্য ছিল।

যেহেতু উক্ত নিয়োগ বিজ্ঞাপন প্রদানে বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির অনুমোদন উপেক্ষা করা হয়েছে সেহেতু রাষ্ট্রীয় আইন দ্বারা প্রদত্ত রসায়ন বিভাগের এখতিয়ারকে খর্ব করা হয়েছে এবং বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের চাহিদা উক্ত বিজ্ঞাপনে পরিস্ফুট হয়নি বলে সভার সকলের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে।
 
সার্বিক বিষয় আমলে নিয়ে বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির অনুমোদন উপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সংবিধি ৩৯(২) এর ১১ (৯) (খ) ধারা লঙ্ঘন করে প্রকাশিত স্মারক নং বেরোবি/রেজি/শিক্ষক নিয়োগ-বিজ্ঞপ্তি/২০২০/৭০৩, তারিখ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ অনুযায়ী রসায়ন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞাপনটি অগ্রহণযোগ্য হিসাবে গণ্য করতে সর্বসম্মতভবে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।


আমার সংবাদ/এমএ