Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

মুড়ি কাটা পেঁয়াজের বাম্পার ফলন, দামে হতাশ কৃষক

হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি

জানুয়ারি ২৫, ২০২১, ০৫:৪০ এএম


মুড়ি কাটা পেঁয়াজের বাম্পার ফলন, দামে হতাশ কৃষক

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায় চলতি বছরে মুড়ি কাটা পেঁয়াজের (সাগা) বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে, বাজার দর কম থাকায় পেঁয়াজ চাষিরা হতাশ। 

পেঁয়াজচাষিরা জানান, গতবছর উপজেলায় পাইকারি বাজারে প্রতি মণ পেঁয়াজ এক হাজার ৮০০ থেকে চার হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। এ বছর প্রতি মণ পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৯৬০ টাকা থেকে এক হাজার টাকায়। এতে কোনো রকমে উৎপাদন খরচ উঠলেও লাভ হবে না।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছর উপজেলায় ৫৩৭ হেক্টর জমিতে মুড়ি কাটা পেঁয়াজের আবাদ হয়েছিল। উৎপাদন হয়েছিল ১১ হাজার ৬ মেট্রিক টন। চলতি বছরে আবাদ হয়েছে ৩৯০ হেক্টর জমিতে। 

যার মধ্যে ৩৩২ হেক্টরে তাহেরপুরি এবং ৬৭ হেক্টরে সুপার কিং জাতের পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। চলতি বছরে উপজেলায় পেঁয়াজ চাষের প্রণোদনা বাবদ ৪০০ বিঘা জমির জন্য বারি পেয়াজ-১ ও কিং জাতের পেঁয়াজ বীজ দেয়া হয়েছে। 

এছাড়া, ২০০ বিঘার জন্য বিঘাপ্রতি পাঁচ কেজি ডিএপি ও পাঁচ কেজি এমওপি সার এবং বাকি ২০০ বিঘার জন্য বিঘাপ্রতি ২০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি করে এমওপি সার দেয়া হয়েছে। এ বছর এ পর্যন্ত ৩৫ হেক্টর জমির পেঁয়াজ উঠানো হয়েছে, যার উৎপাদন ২৮ মেট্রিক টন।

এ ব্যাপারে উপজেলার কয়েকজন পেঁয়াজচাষির সাথে কথা বললে তারা জানান, জমি তৈরি, সার, বীজ, পরিচর্যা খরচসহ প্রতি শতাংশে খরচ হয় প্রায় এক হাজার ১০০ এক হাজার ৩০০ টাকা। শতাংশ প্রতি উৎপাদন হয় প্রায় দেড় মণ।

গত পরশু উপজেলার সবচেয়ে বড় ঝিটকা বাজার পেঁয়াজ আড়তে ৯৬০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। সে হিসেবে প্রতি শতাংশে উৎপাদিত পেঁয়াজের মূল্য পড়ে ১৪৪০ টাকা। এতে উৎপাদন খরচ উঠলেও খুব বেশি লাভ হবে না। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির কারণেই মূলত পেঁয়াজের দাম কম বলেও জানান তারা।

উপজেলার বাল্লা ইউনিয়নের দক্ষিণ গোড়াইল গ্রামের মো. বাদশা জানান, তিনি এ বছর ১৮ শতাংশ জমিতে মুড়ি কাটা পেঁয়াজের আবাদ করেছিলেন। জমি তৈরি, সার, বীজ, পরিচর্যা খরচ বাবদ তার প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ২১ মণ। ইতিমধ্যে তিনি ১৬ মণ পেঁয়াজ ১০৪০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। এখন বাজার দর আরও কমেছে। এতে কোনরকমে খরচ উঠলেও কোন লাভ হবে না।

গোপীনাথপুর ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের প্রান্ত নয়ন জানান, তিনি এ বছর আড়াই বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছিলেন। প্রতি শতাংশে দেড় মণের বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। গত পরশু কয়েকমণ পেঁয়াজ তিনি ৯৬০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। 

যেখানে গতবছর তিনি এক হাজার ৮০০ টাকা থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা দরে প্রতিমণ পেয়াজ বিক্রি করেছেন। এ বছর ভারত থেকে পেঁয়াজ আসার কারণেই মূলত পেঁয়াজের দাম কমে গেছে। 

তিনি বলেন, যে টাকা খরচ হয়েছে, তা কোনরকম উঠলেও কোন লাভ থাকবে না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল গফ্ফার বলেন, গতবছর মূল্য বেশি পাওয়ায় কৃষকরা এ বছর অধিক জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছে। পরিচর্যাও করেছে বেশি। এছাড়া, বন্যায় পলিমাটি এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে।

আমারসংবাদ/এআই