Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

জনপ্রতিনিধিরা কথা রাখেনি, গ্রামবাসী মিলে সড়ক নির্মাণ

জানুয়ারি ২৯, ২০২১, ০২:৫০ পিএম


জনপ্রতিনিধিরা কথা রাখেনি, গ্রামবাসী মিলে সড়ক নির্মাণ

নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার সিংধা ইউপি'র মল্লিকপুর গ্রামে সাড়ে তিন কিলোমিটারের মতো মাটির সড়ক রয়েছে। সড়কটি মোহনগঞ্জ-নেত্রকোনা হাইওয়ের অতিথপুর থেকে কংশ নদী পার হয়ে মল্লিকপুর গ্রামের ভেতর দিয়ে গেরিয়া (চন্দ্রপুর) বাজারের পাকা সড়কে গিয়ে যু্ক্ত হয়েছে। তবে দেশব্যাপী রাস্তা-ঘাটের বিরাট উন্নয়ন ঘটলেও এই সড়কটি দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে অবহেলিত রয়ে গেছে। 

এই সড়ক দিয়ে মল্লিকপুর, ধারাম, তেলিকুড়ি, চন্দ্রপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার লোক যাতায়ত করে। শুকনো মৌসুমটা পায়ে হেঁটে কোন রকম পার করতে পারলেও বর্ষায় লোকজনের কষ্টের সীমা থাকে না। নিত্য প্রয়োজনীয় বাজার করা, উৎপাদিত পণ্য বাজারে নেয়া, বয়স্ক বা ডেলিভারি সক্রান্ত কোন জরুরি রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বিড়ম্বনা পোহাতে হয়।

বারহাট্টা উপজেলাটি নেত্রকোনা সদরের সঙ্গে সংসদীয় আসনে যুক্ত হওয়ায় এই আসনের এমপি সাধারণত জেলা সদরেরই একজন নির্বাচিত হন। ফলে এদিকটায় তারা তেমন নজর দেন না।

[media type="image" fid="107993" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

তবে যখনি স্থানীয় বা জাতীয় নির্বাচন আসে তখন প্রার্থীদের কাছে এলাকার মানুষের একটাই দাবি থাকে যেন এই সড়কটি পাকাকরণ করা হয়। প্রার্থীরাও গ্রামের মানুষের সরলতার সুযোগ নিতে ওয়াদা দেন, মানুষ চোখ বন্ধ করে ভোট দেন। কিন্তু জিতে গিয়ে সব ওয়াদা ভুলে যান জনপ্রতিনিধিরা। এভাবে কেটে গেছে দেড় যুগ, পার হয়েছে কত নির্বাচন। তিবু রাস্তা যেমন ছিল, তেমনি আছে, কোন উন্নয়ন হয়নি।

অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে মল্লিকপুর গ্রামের লোকজন মিলে গ্রামের সড়কটি নির্মাণে লেগে পড়ে। শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় গ্রামের প্রায় আড়াইশ লোক মিলে মাটি কেটে সড়ক নির্মাণ করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক নির্মাণে উদ্ধুদ্ধকারী লালন বখত মজুমদার বলেন, এই একটি সড়কে বছরের পর বছর ধরে কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। সড়কটা পাকা করে দেবে সেই আশায় এতটা বছর ধরে যত চেয়ারম্যান-এমপি হয়েছেন তাদের ভোট দিয়েছেন তারা। কিন্তু তারা কিছুই করেনি। শেষে বাধ্য হয়ে নিজেরাই চাঁদা তুলে স্বেচ্ছাশ্রমে মাটি কেটে সড়কটি সংস্কার করছেন। প্রায় একমাস যাবৎ তারা প্রায় আড়াইশো মানুষ মিলে সড়কে মাটি কাটছেন। আর কয়েক দিনের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে যাবে।

[media type="image" fid="107994" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

সড়কে মাটি কাটছেন সাবেক মেম্বার রিয়াজ উদ্দিনও। তিনি জানান, জনপ্রতিনিধিদের জন্য অনেক অপেক্ষা করেছেন। ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে, তাই গ্রামের লোকজন মিলেই কাজ শুরু করেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই আসনের সাবেক যুব ও ক্রীয়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ও এই সড়কটি নির্মাণে এলাকাবাসীকে ওয়াদা দিয়ে ভোট নিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি পাশ করার পর তা ভুলে যান। বর্তমান সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরুও এই সড়ক নির্মাণের কথা বলেছিলেন। তবে এখনো তিনি কোন পদক্ষেপ নেননি। কথা দিয়েছিলেন বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান শাহ মাহবুব মোর্শেদ কাঞ্চনও। এমনকি নির্বাচনের আগে ভোট নেয়ার জন্য গ্রামবাসীর আস্থা অর্জনে লোকজন দিয়ে পুরো সড়কটিতে ফিতা টেনে মাপামাপি করেছিলেন তিনি। পাশ করার পর অন্য সবার মতো তিনিও ভুলে যান সব। 

আমারসংবাদ/এমএ