Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

কলারোয়া পৌরসভা নির্বাচন: বিএনপি ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর ভোট বর্জন

কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি

জানুয়ারি ৩০, ২০২১, ১১:৪৫ এএম


 কলারোয়া পৌরসভা নির্বাচন: বিএনপি ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর ভোট বর্জন

শনিবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোট গ্রহণে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগে সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী শেখ শরিফুজ্জামান তুহিন ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী নারগীস সুলতানা সহ বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। 

শনিবার (৩০ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২ টার মধ্যে প্রার্থীরা নিজ নিজ বাসভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

বিএনপির ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী শেখ শরিফুজ্জামান তুহিন অভিযোগ করে বলেন, তিনি ৩ ও ৮ নং কেন্দ্রে ঢুকতে গেলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে বাধা দেয়।

অধিকাংশ ভোট কেন্দ্রেই বিএনপি দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কোনো নির্বাচনী এজেন্ট নেই। কোথাও বিএনপি প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্টদের ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। সকাল থেকেই কেন্দ্র দখলের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। 

ভোট কেন্দ্রের বাহিরে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখতে পাওয়া যাচ্ছে কিন্তু ভেতরে প্রকাশ্যে নৌকার সিল মারতে হচ্ছে। তাই পৌরসভার সকল ভোট কেন্দ্রে অনিয়ম, ভোট ডাকাতি, ভোট দিতে না দেওয়া ও ভোট কারচুপির অভিযোগে আমি ভোট বর্জন করছি।

অপরদিকে ব্যাপক ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন জগ প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী নারগীস সুলতানা। 

তিনি জানান, সকাল থেকেই সরকারী দল ও পুলিশ জোর পূর্বক ভোট কেন্দ্র দখল করে নৌকা প্রতীকে সিল মারছে। সকল কেন্দ্র থেকেই আমার জগ প্রতীকের নির্বাচনী এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের নামে ভোটারদের সাথে এ ধরনের তামাশা করা ঠিক নয়। 

দেশে মানুষের ভোটাধিকার নেই, কলারোয়াবাসী আজ আবারও তা প্রত্যক্ষ করলো। কলারোয়ার কোনো কেন্দ্রেই সুষ্ঠু ভোট হচ্ছে না। ভোটকেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখতে পাওয়া যাচ্ছে কিন্তু ভেতরে প্রকাশ্যে নৌকার সিল মারতে হচ্ছে।

ভোটারদের কাছে সিল মারা ব্যালট দেয়া হচ্ছে, তিনটি ব্যালটের মধ্যে মেয়রের প্রতীকের ব্যালট দেয়া হচ্ছে না, দিলেও তাতে সিল মেরে দেওয়া হচ্ছে, তাহলে এটি কিসের ভোট! একজন প্রার্থীকে বিজয়ী করতে এত আয়োজনের কি দরকার ছিল। 

রাষ্ট্রের টাকা অপচয় না করে সরাসরি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর নামে গেজেট প্রকাশ করলেই ভাল হতো। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভোট বর্জন করতে বাধ্য হচ্ছি।

এছাড়া ৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আসাদ খান, মোঃ রফিকুল ইসলাম ও মোঃ মোজাহিদুল ইসলাম এবং ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আসাদুজ্জামান তুহিন, আব্দুল হাকিম ও বাবু অনিয়মের অভিযোগে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। অনুরুপ অভিযোগে আরো কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

তবে জেলা নির্বাচন ও রির্টানিং কর্মকর্তা নাজমুল কবীর জানান, কলারোয়া পৌরসভায় ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। তার কাছে ভোটে অনিয়মের তেমন কোন গুরুতর অভিযোগ আসেনি। কোন প্রার্থীও তার কাছে লিখিত ভাবে অনিয়মের অভিযোগ জানাননি। সকল প্রকার বিচ্ছিন্ন ঘটনা এড়াতে প্রশাসন সদা তৎপর রয়েছে, চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।

সকাল ৭টার মধ্যে সকল কেন্দ্রে ব্যালট পেপার প্রেরণ করা হয়েছে। নির্বাচনী পরিবেশ-পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ ও আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাঠে রয়েছেন।

এদিকে সকাল ৮টা থেকে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ভোট গ্রহণ শুরু হলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। আ’লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মনিরুজ্জামান বুলবুল সকালেই তার নিজ কেন্দ্র তুলসীডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন। ভোটার উপস্থিতি ও নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতিতে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।

এবারের কলারোয়া পৌরসভা নির্বাচনে ৫জন মেয়র প্রার্থী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হন। এদের মধ্যে বিএনপি নেতা ও পরপর দু’বার নির্বাচিত সাবেক মেয়র আক্তারুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী (নারিকেল গাছ প্রতীক) হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নাম লেখালেও গত ১৮ জানুয়ারী সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। 

অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী (মোবাইল প্রতীক) সাজেদুর রহমান খান চৌধুরী মজনু নির্বাচনের আগের দিন নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। ফলে তিনজন প্রার্থী নির্বাচনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হন। 

পৌরসভার ৯টি কেন্দ্রের ৬৩ টি কক্ষে ভোট গ্রহণ করা হয়। মোট ভোটার ২১ হাজার ২৮০ জন। 

আমারসংবাদ/এআই