Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

উজিরপুরে মানবপাচার মামলায় বাবা-মেয়েসহ ৩ জন কারাগারে

উজিরপুর প্রতিনিধি (বরিশাল)

ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২১, ০১:০০ পিএম


উজিরপুরে মানবপাচার মামলায় বাবা-মেয়েসহ ৩ জন কারাগারে

বরিশালের উজিরপুর, বাবুগঞ্জ ও মুলাদী উপজেলার ১৬ জনকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর কথা বলে অবৈধভাবে দ্বীপরাষ্ট্র ভানুয়াতুতে পাঁচারের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামির স্ত্রী, বাবা ও শ্বশুড়কে কারাগারে পাঠিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। একই সাথে ওই মামলার অপর দুই আসামিকে স্থায়ী জামিনের আদেশ দেওয়া হয়েছে। 

বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বরিশাল মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মঞ্জুরুল হোসেন এই আদেশ দেন। 

ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (বিশেষ পিপি) অ্যাডভোকেট কাইউম খান কায়সার এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, কারাগারে পাঠানো আসামিরা হলো- মামলার প্রধান পলাতক আসামি মো. জসিম উদ্দিনের স্ত্রী জান্নাতুর রহমান জুথি, জসিমের বাবা হারুনর রশিদ এবং তার শ্বশুর কাজী শামসুর রহমান। জামিনপ্রাপ্ত দুইজন আসামিরা হলেন, জসিমের ভাই এনামুল হক ও শ্যালক ইমন কাজী। 

ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে, বরিশালের উজিরপুর, বাবুগঞ্জ ও মুলাদী উপজেলার ১৬ জনকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর কথা বলে দ্বীপরাষ্ট্র ভানুয়াতুতে অবৈধভাবে পাচার করেন বাবুগঞ্জের রাহুতকাঠীর মো. জসিম উদ্দিন, তার স্ত্রী জান্নাতুর রহমান জুথি, ভাই এনামুল হক, বাবা হারুনর রশিদ, শ্বশুর কাজী শামসুর রহমান, শ্যালক ইমান কাজী ও ভোট ভাই পলাশ হাওলাদার। ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে ২০১৮ সালের মে মাস পর্যন্ত মধ্যকার সময়ে এই অবৈধ মানবপাচার করা হয়। 

প্রতিশ্রুত দেশে না পাঠিয়ে ভানুয়াতুতে নিয়ে জসিমসহ অন্যান্যরা ওই ১৬ জনকে অনাহারে একটি জাগায় আটকে রাখে। সেখান থেকে ১২জন পালিয়ে সেই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানান। পরবর্তীতে সে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অবৈধ মানব পাঁচারের অন্যতম হোতা পলাশ হাওলদারসহ চারজনকে গ্রেফতার এবং পাচারের শিকার সবাইকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ভানুয়াতুতে একটি মামলা করা হয়। ওই মামলায় এখনও ভানুয়াতুর জেলে রয়েছেন মানব পাচারকারী পলাশ। 

ট্রাইব্যুনাল সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশ সরকার ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব মাইগ্রেশন (আইওএম) সংস্থার সহায়তায় ভানুয়াতুতে পাচার হওয়া ওই ১৬ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনে। পরে টাকা ফেরত চাইলে পাচারকারী চক্র উল্টো ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধে অপহরণ, চাঁদাবাজি এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দু’টি মামলা দিয়ে বিপাকে ফেলেন। 

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ১৬ জনের পক্ষে উজিরপুরের বাসিন্দা মোফাজ্জেল হোসেন বাদী হয়ে মানবপাচারকারী মো. জসিম উদ্দিন ও পলাশ হাওলাদারসহ তাদের নিকটাত্মীয় ৭ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর বরিশাল মানবপাঁচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন। গত ২৯ সেপ্টেম্বর এই মামলার পলাতক ৭ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। পরে তারা উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জামিন নেন। 

গত মঙ্গলবার আসামিদের জামিনের মেয়াদ শেষ হলে তারা বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ধার্য তারিখে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে বিচারক দুই জনের স্থায়ী জামিন মঞ্জুর করেন এবং অপর তিন জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।


আমারসংবাদ/এমএ