Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪,

সড়কেই শেষ বিসিএসের স্বপ্ন

ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১, ১০:০০ এএম


সড়কেই শেষ বিসিএসের স্বপ্ন

ডা. শারমিন আক্তার অন্তরা। স্বপ্ন ছিলো বিসিএস পাস করে মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখবেন। তাইতো স্বপ্ন পূরণে দুই সন্তানকে বাড়িতে রেখে বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। সঙ্গে ছিলেন স্বামী ডা. আল মাহমুদ সাদ ইমরান খান। তবে শারমিনের সেই আশা আর পূরণ হলো না।

শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রশিদপুরে এনা পরিবহন ও লন্ডন এক্সপ্রেসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত হন ডা. শারমিনের স্বামী ডা. আল মাহমুদ সাদ ইমরান খান। গুরুতর আহত হয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায় শারমিন।

ডা. ইমরান সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র প্রভাষক ছিলেন। তিনি সিলেট নগরীর ফাজিলচিস্ত আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ও ওসমানী হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আমজাদ হোসেন খানের ছেলে।

ডা. শারমিন সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্নি চিকিৎসক। চিকিৎসকদের বিসিএসে (বিশেষ) অংশ নিতে ঢাকায় যাওয়ার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এই চিকিৎসক দম্পতির তিন ও চার বছরের দুটি মেয়ে রয়েছে।

এদিকে, ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন ডা. ইমরানের মা ফরিদা খানম ও স্বজনরা। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। তাদের আহাজারিতে হাসপাতাল এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। সকালে যে ছেলেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে বিদায় দেন মা ফরিদা। এর ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই মৃত্যুর খবর মেনে নিতে পারছেন না তিনি। একই অবস্থা ইমরানের শ্বশুর বাড়ির লোকজনেরও। শোকে স্তব্ধ দুই পরিবারের সদস্যরা।

নিহত ডা. ইমরানের বোন ডা. ইন্নরী খান বলেন, স্ত্রীকে নিয়ে বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে সকালে ঢাকায় যাচ্ছিলেন আমার ভাই। এনা পরিবহনের একটি বাসে রওনা দেন তিনি। যাওয়ার সময় তার দুই মেয়েকে আমাদের কাছে রেখে যান। সকাল সাড়ে সাতটায় খবর পেলাম তারা সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন।

ডা. ইমরানের শ্বশুর মো. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আমার মেয়ে শারমিনও উইমেন্স মেডিকেলে ইন্টার্নি করছে। সে চিকিৎসকদের বিশেষ বিসিএসে অংশ নিতে স্বামীকে নিয়ে সকালে সিলেট থেকে রওনা হয়েছে। এরপর সকালে খবর পেলাম মেয়ের জামাই মারা গেছে।

তিনি বলেন, সকালে ঢাকায় রওনা দেয়ার আগে তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। কিন্তু কীভাবে কি হলো আমরা বুঝতে পারছি না।

এ দুর্ঘটনায় চিকিৎসক ছাড়াও আরো সাতজন নিহত হন। এছাড়া গুরুতর আহত হন আরো ১৮ জন।

নিহত অন্যরা হলেন- এনা পরিবহনের বাসচালক ওসমানীনগর উপজেলার বরখা গ্রামের মঞ্জুর আলী, হেলপার একই গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন, সুপারভাইজার সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার মিঠাভরা গ্রামের সালমান খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানার রাজানিয়াকান্দি পশ্চিম পাড়ার নুরুল আমিন, ঢাকার ওয়ারি এলাকার নাদিম আহমদ সাগর, সিলেট নগরীর আখালিয়া নতুন বাজার এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে শাহ কামাল ও সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার বাংলাবাজার এলাকার রাহিমা বেগম।

পুলিশ জানায়, ঢাকাগামী এনা পরিবহনে চালক হেলপারসহ ১১ জন ও লন্ডন এক্সপ্রেসে ৩১ জন যাত্রী ছিলেন। সংঘর্ষে প্রায় সবাই হতাহত হয়েছেন।

আমারসংবাদ/কেএস