Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪,

কেরানীগঞ্জে সূর্যমুখী ক্ষেতে দর্শনার্থীদের ভিড়, কৃষকের পাহারা!

ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১, ০৭:১০ এএম


কেরানীগঞ্জে সূর্যমুখী ক্ষেতে দর্শনার্থীদের ভিড়, কৃষকের পাহারা!

এক সূর্য আকাশে আর হাজারো সূর্য কৃষকের জমিনে! সূর্য মামা নাগালের বাহিরে হলেও কেরানীগঞ্জের সোনাকান্দা, মুগারচর এবং দক্ষিণ বালুচর কৃষকদের সূর্য বাগান শতশত মানুষের পদচারণায় মুখর। সকাল থেকে সন্ধ্যা পাশের গ্রাম, ইউনিয়ন এমনকি দূরদূরান্তের মানুষও ভিড় করে তৈল বিচ সংগ্রহের জন্য লাগানো সূর্যমুখী ক্ষেতে। 

যেখানেই খোঁজ মিলছে সূর্যমুখী বাগানের সেখানেই বাগান ও প্রকৃতি প্রেমীদের উপচে পড়া ভিড়। মানুষের ভিড়ে ফলন পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক। তাই জমিতে পাহারা বসাতেও বাধ্য হয়েছে অনেকে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার হযরতপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে এক বিঘা জমিতে সরকারিভাবে পাওয়া সূর্যমুখী বীচ বুনেছেন কৃষক শাহাবুদ্দিন তালুকদার। তেমন কিছু না ভেবেই লাগানো সূর্যমুখীতে এখন তার মুখেও সূর্যের হাসি। 

তিনি বলেন, ফলন যেমনই পাই কোনো সমস্যা নাই। প্রতিদিন শতশত মানুষ আমার জমিতে আসছে, মানুষ হাসছে, আনন্দ পাচ্ছে এটাই আমার আনন্দ। তবে সকলকে বলবো ফসলের ক্ষতি না করে সৌন্দর্য উপভোগ করতে। আমার বাগানের জন্য জাতে পাশের কৃষকের কোনো ক্ষতি না হয় তাই লাগাতার পাহারা দিতে হচ্ছে।

সোনাকান্দা গ্রামের কৃষক আহসানউল্লাহ বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসারের দেয়া বীচ ও পরামর্শে ১ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ শুরু করেছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আশা করছেন ভালো আয় হবে। 

[media type="image" fid="112590" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

পাশাপাশি ফুল দেখতে ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ আসছে, দেখছে, সৌন্দর্য উপভোগ করেছে, এতে আমিও খুশি, তবে অনেকে ফুলের ক্ষতিও করছে, ফুল ছিড়ে নিচ্ছে, যা আমাকে কষ্ট দেয়। আগামীতে আরও বেশী করে সূর্যমুখীর আবাদ করবো ইনশাআল্লাহ।

সবুজের মাঝে হলুদ হাসি দেখতে উপজেলার লংকারচর গ্রাম থেকে আইরিন তার বোন ও বোন জামাইকে সঙ্গে নিয়ে সূর্যমুখীর বাগান দেখতে এসেছেন রসুলপুরে। অন্যের কাছে শুনে এসে বাগান দেখে খুব খুশি তিনি। 

উপভোগের পাশাপাশি স্মৃতি ধরে রাখতে ছবি ও ভিডিও ধারন করে নিয়ে যাচ্ছেন। একই ভাবে সাভারের তাসিব, মনির, ইমরানরাও এসেছে খোলা পরিবেশে কৃষকের জমিতে সুর্যের হাসি দেখতে। এক সাথে এতো ফুল দেখে নানা ভঙ্গিতে ছবি তুলতে ভুল করছেন না কেউই।

[media type="image" fid="112591" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

এ ব্যাপারে কেরানীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল আমিন বলেন, আমরা কেরানীগঞ্জের কৃষকদের মাঝে সূর্যমুখীকে পরিচিত করতে এ বছর ১৫০ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীচ বিতরণ করেছি। 

কম সময় ও পরিশ্রমে অধিক ফলন ও ভালো দাম পাওয়া যায় বলে আমরা কৃষককে সূর্যমুখী চাষে উদ্বুদ্ধ করছি। প্রতি বিঘা জমিতে ১ কেজি বীজ দিতে হয়। দেড় ফুট অন্তর অন্তর একটি করে বীজ বপণ করতে হয়। একটি সারি থেকে আরেকটি সারির দূরত্ব রাখতে হয় দেড় ফুট। 

মাত্র ৮৫ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে বীজ বপণ থেকে শুরু করে বীজ উৎপাদন করা সম্ভব। প্রতিবিঘা সূর্যমুখীতে ফলন হয় ৬ থেকে ৭ মণ। যা অন্য যেকোনো ফসলের তুলনায় ভালো। তবে তৈল সংগ্রহ করতে সবাইকে একটু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এক সাথে বেশি তেল না ভাঙানোই উত্তম।

আমারসংবাদ/এআই