Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

পাল্টে যাচ্ছে তিস্তার চরের মানুষের জীবনযাত্রা

শরিফুল ইসলাম রতন, লালমনিরহাট

ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১, ০২:৫০ পিএম


পাল্টে যাচ্ছে তিস্তার চরের মানুষের জীবনযাত্রা

তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করে লাখো কৃষক তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছে। তিস্তার চরে বিভিন্ন সবজি আবাদে পাল্টে যাচ্ছে লালমনিরহাটের তিস্তার চরের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা। অভাব আর অনটন নিত্য সঙ্গী ছিল চরাঞ্চলের মানুষগুলোর। পতিত জমিতে সবজি চাষ করে এখন পাল্টে গেছে ভাগ্য। উৎপাদিত শাক সবজি গুলো কীটনাশকমুক্ত হওয়ায় চাহিদাও দারুণ।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এ বছর চরাঞ্চলে ১০ হাজার ৮শ হেক্টর জমিতে সবজির চাষ হয়েছে। কম খরচে লাভবান হওয়ায় গত বছরের তুলনায় এ বার তিস্তার জেগে ওঠা চরে সবজির আবাদ হয়েছে অনেক বেশি। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ঔষধের পরিবর্তে চাষিরা জৈব সার ব্যবহার করায় আলু, সিম, করলা, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, বাদামসহ বিভিন্ন সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে।

তিস্তা তীরবর্তী চর বালাপাড়া, কুটিরপাড় বাঁধসহ জেলার ৫ উপজেলার অন্তত শতাধিক চরাঞ্চলের গ্রামগুলোতে ব্যাপক আবাদ হয়েছে মিষ্টি কুমড়া, লাল শাক, কলমি শাকসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি। চরে সেচ পাম্প বসিয়ে তা দিয়ে পানির ব্যবস্থা করে এসব ফসল চাষাবাদ করছেন কৃষকরা।

এ বিষয়ে স্থানীয়রা বলেন, চরের জমি চাষ করতে কষ্ট হলেও প্রচুর পরিমাণ লাভ আছে। চর এলাকাতে ফসল ভালো হয়। তবে আমরা বিশেষ পদ্ধতিতে জমি চাষ করছি। তিস্তা নদীর চরে আমরা আলুসহ অনেক ধরনের সবজি চাষ করি।

[media type="image" fid="112684" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

গোকুন্ডা ইউনিয়নের তিস্তা চর গোকুন্ডার কৃষক ফয়জার আলী বলেন, তার যে টুকু জমি ছিল তার সবটুকুই তিস্তার পেটে চলে যায়। প্রতি বছরের এই সময় তিস্তা নদী পানি শুন্য হয়ে জেগে উঠে চর। এরপর ওইসব জমিতে জৈব সার ব্যবহার করে আলু, সিম, করলা, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, বাদামসহ বিভিন্ন সবজির চাষ করি। ফলনও ভাল হওয়ায় কিছু টাকার মুখ দেখি।

অপর কৃষক ফরিদুল আলম বলেন, তিস্তার ভাঙ্গনের মুখে পড়ে একে একে তার সব জমি তিস্তার বুকে বিলিন হয়ে যায়। ভাঙনের কারণে সেই সাথে তিনিও নিঃস হয়ে যান। এক বেলা আধ বেলা খেয়ে কোন রকমে পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে আছি। বর্ষা শেষ হলেই সেই তিস্তার বুকে জেগে উঠা, জমিতে আলু, লাউ, সিমসহ বিভিন্ন শাকসবজি আবাদ করে দুটো টাকার মুখ দেখতে পাই।

তিস্তার চরের চাষাবাদ নিয়ে লালমনিরহাটের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামীম আশরাফ বলেন, চরের জমির পানির যে লেভেল আছে তাতে সেচ দেওয়ার সময় কিছুটা সমস্যা হয়। আমরা নিয়মিতভাবে পরামর্শ দিয়ে আসছি কিভাবে চাষাবাদ করবে। জেলার ৫টি উপজেলার চরাঞ্চলে আবাদি জমির পরিমাণ ১০ হাজার ৮শ হেক্টর। চরাঞ্চলের এ জমিকে কাজে লাগাতে কৃষকদের কে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

আমারসংবাদ/কেএস