Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

শেরপুরে অবৈধ স’মিলের ছড়াছড়ি, উজার হচ্ছে বনাঞ্চল

তপু সরকার হারুন, শেরপুর

মার্চ ১৪, ২০২১, ০৯:২০ এএম


 শেরপুরে অবৈধ স’মিলের ছড়াছড়ি, উজার হচ্ছে বনাঞ্চল

শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা শ্রীবরর্দী, ঝিনাইগাতি ও নালিতাবাড়ী উপজেলা তিনটি ঘিরে রয়েছে সরকারের .সংরক্ষিত, রক্ষিত, অর্পিত বিশাল বনাঞ্চল। 

সরকারের আইন অনুযায়ি সংরক্ষিত, রক্ষিত, অর্পিত বা অন্য যে কোনো ধরনের সরকারি বন ভূমির সীমানা হতে ন্যূনতম ১০ কিলোমিটার মধ্যে করাত কল (স’মিল) স্থাপন করা যাবে না।

করাত কল স্থাপনের আগেই সরকারি অনুমোদন নিতে হবে। সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পূর্বে বা পরে কোনো করাতকল পরিচালনা করা যাবে না। উক্ত বিধান লংঘন করলে যথাযথ কর্তৃপক্ষ আইনগত ব্যবস্থা নিবেন। 

এই বিধি লংঘন করে ওই তিন উপজেলায় বনাঞ্চলের এক থেকে পাঁচ কিলোমিটার মধ্যে অন্তত ৩০টি, ১০ কিলোমিটার এর মধ্যে ৫৫টি স’মিল অবৈধ চলছে রাতদিন। এতে উজার হচ্ছে বনাঞ্চল।

জানা গেছে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী স’মিল স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি, সর্বশেষ বন বিভাগ থেকে নিবন্ধন নিতে হয়। লাইসেন্স বাধ্যতামূলক হলেও কেউ মানছে না আইন। 

আর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। ইচ্ছা হলেই বসানো হচ্ছে স’মিল। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত দাপটের সাথে কাটা হচ্ছে গাছ।রাতের অন্ধকারে চোরাই পথে আসা গাছ দিয়ে চলছে অধিকাংশ স’মিল।

স্থানীয়দের অভিযোগ বন বিভাগের এক শ্রেনী অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারি ও নেতাদের লেনদেন আশ্রয় প্রশ্রয়ে গড়ে উঠছে এসব স”মিলি। অবৈধ স’মিল থেকে মাসোয়ারা নেয়া হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বন বিভাগের তথ্যমতে, ওই তিন উপজেলায় অন্তত ১৭৫টি স’মিল আছে। যার মধ্যে লাইসেন্স আছে মাত্র ২৮টির। তিনটি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা শ্রীবরর্দী উপজেলায়।

শ্রীবরর্দী উপজেলায় মোট স’মিল আছে ৭৫টি। আর লাইসেন্স আছে ৯টির, লাইসেন্স এর জন্য আবেদন আছে ৯টি। শ্রীবরর্দী উপজেলার বন সংলগ্ন রাণি শিমুল ইউনিয়নের আশেপাশে গড়ে উঠেছে স’মিল, সরকারি হিসাবেই বনাঞ্চচলের মধ্যে ১৭টি স’মিল চলছে।

এখানে বন বিভাগের লোকেরাও অসহায়। নালিতাবাড়ী উপজেলায় মোট স’মিলের সংখ্যা ৭০টি। এরমধ্যে নিবন্ধন আছে ১৫টির।

নিবন্ধনের আবেদন আছে আরও ১০টির মতো। ২০টির মতো স’মিল আছে বনাঞ্চলের মধ্যে। ঝিনাইগাতি উপজেলায় সমিলের সংখ্যা ৩০টির মত।নিবন্ধন আছে মাত্র ৪টির। উপজেলার বনাঞ্চল ধানশাইল এলাকায় বনের ভিতর আছে ৪টি করাত কল। স’মিল মালিকদের অনেকের অভিযোগ আবেদন করেও বছরের পর বছর ধরে লাইসেন্স পাচ্ছেন না।

সহকারি বণ সংরক্ষক ড. প্রাণতোষ চন্দ্র রায় বলেছেন লোকবল সংকট, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে ব্যবস্থা নিলেও আবার সেই আগের অবস্থায় চলে আসে। মোবাইল কোর্টের জন্য বারবার আবেদন করলেও প্রশাসনের ব্যস্ততার কারণে তারা সময় দিতে পাচ্ছেন না। বনাঞ্চল থেকে স’মিল সরাতে জরুরী ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

শ্রীবরর্দী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা জানিয়েছেন সত্বর মোবাইল কোর্ট করা হবে। তবে বিষয়টি শুধু মোবাইল কোর্ট দিয়ে সমাধান নয় বন বিভাগকে আরও সক্রিয় হতে হবে।

আমারসংবাদ/এআই