Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

চিরকুট লিখে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা, ৪ মাস পর মায়ের সংবাদ সম্মেলন

তপু সরকার হারুন, শেরপুর প্রতিনিধি

মার্চ ১৯, ২০২১, ০৩:৫৫ পিএম


চিরকুট লিখে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা, ৪ মাস পর মায়ের সংবাদ সম্মেলন

শেরপুরে চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করা সেই স্কুলছাত্রীর মা চার মাস পর সংবাদ সম্মেলন করেছেন। ওই স্কুল ছাত্রী আত্মহত্যার পর গেলো বছর ১১ ডিসেম্বরে শেরপুর সদর থানায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩ এর ৯ (১)৩০ ধারায় একটি মামলা হয়।

গত ৪ মাস হলেও মামলার কোনো আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় স্কুলছাত্রীর মা শুক্রবার (১৯ মার্চ) বিকেলে শেরপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

সদর উপজেলার কুঠুরাকান্দার পশ্চিমপাড়া এলাকা থেকে গেলো বছর ১০ ডিসেম্বর রাতে তার মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় পুলিশ।  

এসময় ঘটনাস্থল থেকে স্কুল শিক্ষার্থীর একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়। নতুনকুড়ি নামের একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপড়া করতো সে। 

পরিবারের দাবি, স্থানীয় অগ্রদূত স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র রাশেদ (১৫) প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। 

এতে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে সে। কিন্তু রাশেদ সম্পর্ক অস্বীকার করায় লজ্জায় চিরকুট লিখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে স্কুলছাত্রীর মা বলেন, মেয়েকে তার নানীর কাছে রেখে তিনি জীবিকার সন্ধানে ঢাকায় একটি পোষাক কারখানায় চাকরি করতেন। সেই উপার্জিত অর্থ দিয়ে তার মেয়েকে লেখাপড়ার খরচ চালাচ্ছিলেন। 

এরমধ্যে একই এলাকার মো. হারুন মিয়ার বখাটে ছেলে মো. রাশেদ তার কোমলমতি মেয়ের সঙ্গে প্রথমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন। পরবর্তীতে দৌহিক সম্পর্কও গড়ে তুলেন এবং এতে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।
 
পরে এ ঘটনায় আমার মেয়ে প্রেমিক মো. রাশেদকে বিয়ের করার জন্য চাপ দেন। পরে সে এসব প্রেম ও ভালোবাসার কথা অস্বীকার করলে তার বাড়িতে যায় আমার মেয়ে। পরে প্রেমিক মো. রাশেদের আত্মীয়-স্বজনরা তাকে শারীরিক নির্যাতন করে মো. রাশেদের বাড়ি থেকে বের করে দেয়। 

এদিকে আমার মেয়ে অপমানিত এবং প্রেমিক রাশেদের প্রেমে প্রতারিত হয়ে অবশেষে ওই দিন একটি ডায়েরিতে প্রেম ঘটিত অন্তঃসত্ত্বার ঘটনা একটি সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। 

আত্মহত্যার পর খবর পেয়ে সদর থানার পুলিশ আমার মেয়ের লাশের সাথে সুইসাইড নোট সহ ডায়েরী উদ্ধার করেন। 

পরে লাশের সূরতহাল রিপোর্ট তৈরি শেষে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে তার লাশ প্রেরণ করে। 

এদিকে, এ ঘটনায় শেরপুর সদর থানায় স্কুলছাত্রীর মা বাদি হয়ে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩, ৯ (১) ৯-ক/৩০ ধারায় মো. হারুন মিয়ার ছেলে প্রেমিক মো. রাশেদ (১৮) কে ১ নং আসামি, মিজানের ছেলে তামজিদ (১৯), হাবিল উদ্দিনের ছেলে ময়নাল (২০), তজির ছেলে মোশারফ (১৮), অমরের ছেলে মো. শফিক (১৮), মো. মকবুল মিয়ার ছেলে মো. হানিফ মিয়া (৩২) কে চিহ্নিত এবং ৫/৬ জনকে অজ্ঞাত নামা আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। 

সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, তার মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরেও প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্টাপাল্টা করা হয়েছে। 

এব্যাপারে মামলার তদন্তকারী অফিসার সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আনোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আসামিরা আত্মগোপন করেছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

আমারসংবাদ/এআই