Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪,

শরীয়তপুরে জোড়া হত্যা মামলার রায়ের প্রতিবাদে হরতাল

রুপক চক্রবর্তী, শরীয়তপুর সদর প্রতিনিধি

মার্চ ২২, ২০২১, ১০:১৫ এএম


শরীয়তপুরে জোড়া হত্যা মামলার রায়ের প্রতিবাদে হরতাল

শরীয়তপুর জেলা জজ আদালতের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) হাবীবুর রহমান ও তার ভাই মনির হোসেন হত্যা মামলার রায়ের প্রতিবাদে অর্ধদিবস হরতাল পালন করেছেন জেলা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, নিহতদের পরিবার-পরিজন, সমর্থকরা। 

সোমবার (২২ মার্চ) সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ হরতাল পালন করা হয়। হরতাল চলাকালীন শরীয়তপুর জেলা শহর থেকে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন ছেড়ে যায়নি। বন্ধ থাকে শরীয়তপুর সদর থেকে সকল ধরনের যান। 

এছাড়াও শহরের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকে। হরতালকে কেন্দ্র করে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

এদিকে সকাল থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা, নিহতদের পরিবার-পরিজন ও হরতাল সমর্থকরা শহরের পাকার মাথা, শরীয়তপুর পৌরসভার সামনে, পুলিশ বক্সের সামনে, সদর হাসপাতালের সামনের সড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে সড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে পিকেটিং করেন।

নিহত পিপি হাবীবুর রহমানের ছেলে জেলা জজ আদালতের এপিপি ও শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র পারভেজ রহমান জন বলেন, আমার বাবা ও চাচাকে সরাসরি গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। ২০ বছর পর হত্যার রায় হয়েছে। 

রায়ে ৩৯ জনকে খালাস প্রদান করা হয়েছে। আমার দুই পরিবারসহ শরীয়তপুরবাসী এই রায় প্রত্যাক্ষাণ করেছে। এ হত্যার রায় আমরা মানি না। প্রকৃত খুনিদের ফাঁসির আদেশ যদি না হয়, তাহলে আমার বাবা-চাচার আত্মা শান্তি পাবে না। তাই শরীয়তপুরের মানুষ ফুঁসে উঠেছে, হরতাল পালন করছেন।

হরতালের বিভিন্ন কর্মসূচিতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান উজ্জল, সদস্য আলামগীর হোসেন মুন্সী, জেলা যুবলীগের সভাপতি ও শরীয়তপুর পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএম জাহাঙ্গীর মৃধা, সাধারণ সম্পাদক আমীর হোসেন খান, নিহত হাবীবুর রহমানের ছেলে শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র পারভেজ রহমান জন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ফাহাদ হোসেন তপু, জেলা তৃণমূল আওয়ামী লীগ যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ তালুকদার, আন্ত:জেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এলিম পাহাড়, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও যুবলীগ নেতা সিদ্দিকুর রহমান পাহাড়, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন পাহাড়, শরীয়তপুর পৌরসভা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম সরদার, জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মো. মহসিন মাদবর, যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুজ্জামান রাশেদ, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন খান, সাধারণ সম্পাদক রাশেদুজ্জামান সিকদার, জেলা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা নিহতদের পরিবার-পরিজন ও সমর্থক প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য, বহুল আলোচিত শরীয়তপুরের আওয়ামী লীগ নেতা ও জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান ও তার ছোট ভাই মনির মুন্সি হত্যা মামলার ২০ বছর পর রায় দিয়েছেন আদালত। 

জেলার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শওকত হোসাইন রোববার (২১ মার্চ) দুপুরে এ রায় দেন। তিনি ১২টা হতে ২টা পর্যন্ত টানা দুই ঘন্টা ১৩৩ পাতার এ রায় আদালতে এডভোকেট, সাংবাদিক বাদী ও আসামীরদের সম্মুখে পাঠ করেন। 

চাঞ্চল্যকর এ মামলায় সাক্ষ্য ও প্রমানের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ছয় আসামিকে মৃত্যুদন্ড, চারজনকে যাবজ্জীবন ও তিনজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দিয়েছেন বিচারক। মামলার আরও ৩৯ আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে। 

ফাঁসির দন্ড পাওয়া আসামিরা হলেন-শাহিন কোতোয়াল, শহীদ কোতোয়াল, সফিক কোতোয়াল, মো. সোলায়মান, শহীদ তালুকদার ও মো. মজিবর। যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্ত আসামীরা হলেন সরোয়ার হোসেন বাবুল তালুকদার, বাবুল খান, ডাব্লিউ তালুকদার, টোকাই রশিদ। বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত অন্য আসামীরা হলেন মন্টু তালুকদার, আসলাম সরদার, মজনু। আসামিদের মধ্যে পাঁচজন পলাতক রয়েছেন।

আমারসংবাদ/এআই