Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

আদিতমারীতে নলকূপ স্থাপনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

এস. আর শরিফুল ইসলাম রতন, লালমনিরহাট

মার্চ ২৩, ২০২১, ১২:০০ পিএম


আদিতমারীতে নলকূপ স্থাপনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

জমি আছে ঘর নেই এই প্রকল্পের আওতায় লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় ৫০টি গৃহ নির্মাণ কাজ সমপ্রতি শেষ করেছেন উপজেলা প্রশাসন। 

এসব গৃহহীনদের ঘর নির্মাণের পর ওই ৫০টি পরিবারে বিশুদ্ধ পানির জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি করে নলকূপ বসানোর কাজ শুরু করেছেন। 

নলকূপ বসানোর শুরুতেই নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও (মুহাম্মদ) মনসুর উদ্দিনের বিরুদ্ধে। 

তবে এসব নলকূপ বসানোর কাজে কত টাকা বরাদ্দ দোয়া তা বলতে অনিহা প্রকাশ করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। 

এদিকে অনিয়মের অভিযোগ উঠায় শনিবার (২০ মার্চ) সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের গাড়ী চালককে তদন্তে পাঠান তিনি। 

সরেজমিনে নলকূপ উত্তোলনের পর ফজিলার বাড়ীতে ১৭ ফিট পাইপ বসানোর সত্যতা পেয়েছেন। সেই সাথে নিম্নমানের ইট দেয়ারও সত্যতা পেয়েছেন তদন্তকারী। 

এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন বলেন, ৫০টির মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ থেকে ২০টি পরিবারে নলকূপ বসানোর হয়েছে। এসব কাজে অনিয়ম হলে নতুন করে এসব নলকূপের কাজ করানো হবে। 

অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজেই এসব কাজের তদারকি ও বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা। কিন্তু জমি আছে ঘর নেই এই প্রকল্পের আওতায় ৫০টি পরিবারে নলকূপ বসানোর কাজটি তিনি নিজেই তদারকি ও বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা না থেকে স্থানীয় এক ব্যক্তিকে সাব ঠিকাদার হিসেবে কাজটি দিয়েছেন। 

আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ওই ব্যক্তি নিয়মমাফিক সামগ্রী না দিয়ে নিজের ইচ্ছেমত কাজ করছেন। 

সিডিউল অনুযায়ী প্রতিটি নলকূপের জন্য ৪৫ ফিট পাইপ, ১০ ফিট একটি ফিল্টার ও ৩ ফিট একটি লোহার পাইপ বসানোর কথা। কিন্তু তার পরিবর্তে কোথাও একটি ১৫ ফিট পাইপ, ফিল্টার ও লোহার পাইপ বসিয়ে নলকূপ বসানোর কাজ শেষ করেছেন। 

আর সেখান থেকে ২টি ১৫ ফিট পাইপ না বসিয়ে কাজ সমাপ্তি দেখিয়েছেন বলে ওই ভুক্তভোগিরা পরিবারগুলো অভিযোগ করেছেন। 

এদিকে নলকূপ বসানোর জন্য প্রত্যেক পরিবারকে প্রথম শ্রেণির ইট দেয়ার কথা থাকলেও দেয়া হয়েছে নিম্নমানের ইট। 

শুধু তাই নয়, নলকূপ বসানোর জন্য ওই ৫০টি পরিবারকে এক ভ্যান বালু নিজের টাকায় কিনে দিতে হচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করেন। 

সরেজমিন উপজেলা সদরের ভাদাই ইউনিয়নের আদিতমারী গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা ফজিলা বেগমের বাড়ী গিয়ে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ)  তার বাড়ীতে ১৫ ফিট একটি পাইপ, ফিল্টার ও লোহার পাইপ দিয়ে একটি নলকূপ বসানোর কাজ শেষ করেছেন। বাকি ২টি পাইপ না বসিয়ে নলকূপ বসানোর কাজের মিস্ত্রি নিয়ে গেছেন। কেন বাকি দুটি পাইপ না বসানো হলো এমন কথা বলতেই তারা ফজিলার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। 

এসময় তারা কাজের ঠিকাদারের মেবাইল নম্বর দিয়ে চলে আসেন তার বাড়ী থেকে। পরে এ প্রতিনিধি এমন অভিযোগের বিষয়ে সরেজমিনে গেলে সত্যতা বেরিয়ে আসে। 

এদিকে জমি আছে ঘর নেই এ প্রকল্পের আওতায় ঘর পাওয়া আরেক পরিবার নুর নাহারের বাড়ীতে গেলেও বেরিয়ে আসে না অনিয়মের অভিযোগ। 

নুরনাহারের স্বামী রফিক জানান, তার বাড়ীতে ১৫ ফিটের প্রায় ২টি পাইপ, ফিল্টার ও লোহার পাইপ দিয়ে নলকূপ বসানোর কাজ শেষ করেন। বাকি পাইপ নিতে চাইলে তিনি তা দিতে অনীহা প্রকাশ করেন। পরে পাইপ রেখে চলে যান ঠিকাদরের লোকজন। 

তিনি আরো বলেন, এক বস্তা সিমেন্ট দিলেও নলকূপ বসানোর জন্য এক ভ্যান বালু কিনে আনতে বলেন তারা। তিনিও তার বাড়ীতে দেয়া নলকূপ বসানোর গোড়ায় একশ ইট নিম্নমানের বলে অভিযোগ করেন। 

এসব বিষয়ে আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন, বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে সাংবাদিকদের জানান।

আমারসংবাদ/এআই