Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

সোনাতলায় রেলস্টেশনে উন্মুক্ত পাঠাগার ‘যোগাযোগ’ এর উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিনিধি

মার্চ ২৮, ২০২১, ০৩:৩০ পিএম


সোনাতলায় রেলস্টেশনে উন্মুক্ত পাঠাগার ‘যোগাযোগ’ এর উদ্বোধন

বই পড়ার ফলে মানুষের মস্তিষ্কে যে উদ্দীপনা ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয় তা মানুষের মস্তিষ্কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। মানুষের শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মতো মস্তিষ্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। শরীর সুস্থ রাখতে আমরা যেমন ব্যায়াম করি তেমনি মস্তিষ্ককে সবল ও কর্মচঞ্চল রাখতে বই পড়া বিশেষ জরুরী। আর তাই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বগুড়া জেলার সোনাতলা রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের অবসর সময়ে বই পড়ার আনন্দ দিতে উন্মেষ সাহিত্য সাময়িকী’র উদ্যোগে ও সোনাতলার অন্যতম ব্যতিক্রমী সামাজিক উন্নয়নমূলক সংগঠন আলোর প্রদীপ এর বাস্তবায়নে ‘যোগাযোগ’ নামক একটি উন্মুক্ত পাঠাগার উদ্বোধন করা হয়েছে। স্বাধীনতা দিবসে এই পাঠাগারটি উন্মুক্ত করেন সোনাতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন। 

এসময় অনলাইনের মাধমে ভিডিও কলে সরাসরি যুক্ত থেকে এই উন্মুক্ত পাঠাগারের সার্বিক সাফল্য কামনা করে সাধারণের উদ্দেশ্য বক্তব্য রাখেন শরীয়তপুর জেলার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মনদীপ ঘরাই। তিনি তাঁর বক্তব্য বলেন, ‘আজকে আমি এই উদ্যোগে স্বশরীরে না থাকতে পারলেও ভিডিওকলে যুক্ত হয়ে অনেক আনন্দিত। কারণ এমন একটি উদ্যোগ সত্যি অনেক প্রশংসনীয়। সোনাতলা উপজেলা থেকে আমার অবস্থান যদিও অনেক দূরে কিন্তু স্থানীয় এমন একটি উদ্যোগের খবর পেয়ে নিজের সাধ্যমত সেখানে এই কাজের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করেত চেষ্টা করছি। আমি চাই মানুষ অবসর সময়টাকে বই পড়ার আনন্দের মধ্যে দিয়ে উপভোগ করুক। 

পাঠাগারটি উন্মুক্ত করে সোনাতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন সবাইকে মহান স্বাধীনতার শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘আসলে এমন একটি উদ্যোগের কথা যখন জানতে পারি তখন আর না করতে পারিনি। ভেবেছি এমন একটি উদ্যোগে আমার থাকা উচিত। আসলে প্রযুক্তির কল্যাণে এখনকার প্রজন্মের অনেকেই বই বিমুখ হয়ে পড়ছে। যার ফলে আমাদের ছেলে মেয়েরা জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে। 

আমরা আমেরিকা বা ইউরোপের দেশে এমন উন্মুক্ত পাঠাগার দেখতে পেলেও আমাদের দেশে এই প্রচলনটি এখনো শুরু করা যায়নি। আমি উন্মেষ সাহিত্য সাময়িকী ও আলোর প্রদীপ কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এমন একটি ভালো উদ্যোগ নেয়ায়’। 

পাঠাগারের উদ্যোক্তা উন্মেষ সাহিত্য সাময়িকীর সম্পাদক সাজেদুর আবেদীন শান্ত বলেন, ‘আমি নিয়মিত বিভিন্ন কাজে সোনাতলা থেকে বগুড়া বা ঢাকায় যাতায়াত করি ট্রেনে। ট্রেন বিলম্ব হওয়াতে অবসর সময় পার করতে হয়। তখনি আমার মাথায় চিন্তা এলো যে, যদি এখানে একটা উন্মুক্ত পাঠাগার করা যায় তাহলে ট্রেনের অপেক্ষমাণ যাত্রীরা বিনামূল্যে বই পড়তে পারবে এবং অবসর সময় কাজে লাগাতে পারবে। 

তারপর আমি এই উদ্যোগটা গ্রহণ করি এবং সামাজিক সংগঠন আলোর প্রদীপের সহযোগীতায় পাঠাগারটি উন্মুক্ত করি। এক্ষেত্রে যারা আমাদের অর্থ, বই ও বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করেছেন আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আশাকরি পাঠাগারটিতে নিয়মিত নতুন নতুন বই ম্যাগাজিন, সাহিত্য পত্রিকা ও জাতীয় পত্রিকা রাখার। এক্ষেত্রে আপনাদের সবার সহযোগীতা চাই’।

পাঠাগার প্রসঙ্গে আলোর প্রদীপ সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন সজিব বলেন  ‘আমরা চাই মানুষ বেশি বেশি বই পড়ুক। কেননা বই মানুষের মন কে পরিশুদ্ধ করে। সেই ভাবনা থেকেই যখন সাজেদুর আবেদীন শান্ত উন্মেষের পক্ষ থেকে আমাদের এমন একটি কাজ করার প্রস্তাব দিলো তখন সেই প্রস্তাবটি আমরা গ্রহন করি এবং বাস্তবায়নে উদ্যোগী হই।এটি বাস্তবায়নে সাজেদুর আবেদীন বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। তাকে সেজন্য ধন্যবাদ দিচ্ছি। আমরা চাই মানুষ অন্তত রেলের জন্য যে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে সেই সময়টা যাত্রী ছাইউনিতে বসে বই পড়ুক। আনন্দে সময় কাটানোর মধ্যে দিয়ে মন জগতকে পরিশুদ্ধ করুক’। 

উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সোনাতলা উপজেলা খেলাঘর আসরের সভাপতি মোঃ মহসিন আলী তাহা, গুণী লেখক ও সম্পাদক প্রভাষক ইকবাল কবির লেমন, ক্রিকপ্লাটুন বগুড়া জেলার সমন্বয়ক রাশেদুজ্জামান রন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সোনাতলা রেলওয়ে স্টেশন মাষ্টার রবিউল ইসলাম, আলোর প্রদীপ সংগঠনের সাবেক চেয়ারম্যান এম এম মেহেরুল, উই আর ওয়ান ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ফিরোজ কবির ফারুক, আলোর প্রদীপ সংগঠনের সদস্য রাজিবুর রহমান শীতল, সাকি সোহাগ, আলী আহসান মুজাহিদ, আল শাহরিয়ার পাপ্পু, লেখক জামিল উদ্দিনসহ প্রমুখ।

আমারসংবাদ/এএসএম