Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

কালীগঞ্জে "বীর নিবাস" থেকে বঞ্চিত ভূমিহীন ও অসচ্ছল মু্ক্তিযোদ্ধারা

মোঃ সাজু মিয়া, কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট)

মার্চ ৩০, ২০২১, ০৪:০৫ এএম


কালীগঞ্জে

কথা ছিল একটি পতাকা পেলে ভূমিহীন মুক্তিযোদ্ধারা গাইবে তৃপ্তির গান। কিন্তু অতৃপ্ত মন নিয়ে তাঁরা এখন আর সেই গান গাইতে পারছেন না। প্রায় পাঁচ দশক আগে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করে 'পতাকা' ছিনিয়ে আনলেও লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে অনেকেই এখনো ভূমিহীন এবং "বীর নিবাস" থেকে বঞ্চিত।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে সারাদেশে অসচ্ছল ও ভূমিহীন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য দেশের ৬৪টি জেলায় আবারো 'বীর নিবাস' নামে এবং জাতীর পতাকার আদলে লাল সবুজ রংয়ে ৩০ হাজার বাড়ী নির্মাণ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। 

এই প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে চার হাজার ১২২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার কথা।

প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, এই প্রকল্পটি 'বাস্তবায়িত হলে  শহীদ ও প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিধবা স্ত্রী ও সন্তানদের সামাজিক মর্যাদা ও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নে সহায়তা করবে। অথচ প্রকৃত ভূমিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা ভবন পায়নি। এতে করে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারগুলো দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। 

"বীর নিবাস" সম্পর্কে জানতে চাইলে কাকিনা ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড বীর মুক্তিযোদ্ধা আলতাব হোসেন সাংবাদিককে বলেন, কাকিনা ইউনিয়নের দু-একজন মুক্তিযোদ্ধা ভবন পেয়েছেন। তবে প্রকৃত ভূমিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের "বীর নিবাস" নির্মাণ করে দেয়া উচিত।

কাকিনা ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা ছপর উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বীর নিবাস পাচ্ছে কারা? জীবনের মায়া না করে দেশের জন্য দু-ভাই যুদ্ধ করেছি। বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য! আমাদের দু-ভাইকে এখনো প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে বেচেঁ থাকতে হচ্ছে। নিজের পরিবার পরিজন নিয়ে এখনো খাস জমিতে বাস করি। 

"বীর নিবাস" এবার পাবেন কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সঠিক জানি না। 

মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়,'ভূমিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাসস্থান নির্মাণ প্রকল্প'-এর আওতায় ২০১২ থেকে ২০১৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের ৪৮৪টি উপজেলায় প্রায় ৩ হাজার আবাসন ভবন নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। 

কিন্তু প্রকৃত অনেক ভূমিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা এ আবাসন ভবন বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। শুধু তাই নয়, যে সমস্ত মুক্তিযোদ্ধাদেরকে আবাসন ভবন নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে সে সমস্ত ভবন নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। 

ভবনগুলো নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের পণ্য ও উপকরণ। কিছু "বীর নিবাস" নির্মাণের বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরে সেটি ব্যবহারে অনুপযোগী হয়ে পরছে। ফাটলকৃত ভবনে এখন মুক্তিযোদ্ধার পরিবার আতংকে বাস করছেন।

আমারসংবাদ/এআই