Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪,

মানিকছড়িতে চলছে পাহাড় কাটার মহোৎসব

মো. ইসমাইল হোসেন, মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি)

এপ্রিল ৩, ২০২১, ১২:৫৫ পিএম


মানিকছড়িতে চলছে পাহাড় কাটার মহোৎসব

মানিকছড়িতে পাহাড় কাটা বা বনাঞ্চল ধ্বংস করা যেন নিত্য দিনের ঘটনায় পরিনত হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলায় নির্বিচারে পাহাড় কাটছে পাহাড় খেকোরা। কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রকাশ্যে চলছে পাহাড় কাটার মহোৎসব।

পাহাড় সমতল করে নির্মাণ করা হচ্ছে স্থাপনা। ফসলি জমির টপ সয়েল (উপরি ভাগের মাটি) অন্যত্র বিক্রি করছে জমির মালিকের সাথে যোগ সাজস্যে এক শ্রেণি অসাধু ব্যবসায়ীরা। এতে করে একদিকে পরিবেশ হারাচ্ছে তার প্রাকৃতিক ভারসাম্য। 

অন্যদিকে প্রাণিকূল হারাচ্ছে তার নিরাপদ আবাসস্থল। 

তবে এ ব্যপারে কোনো কার্যকরি প্রদক্ষেপ নিচ্ছে না প্রশাসন। দেখেও যেন না দেখার ভান করায় নির্ভিকার ভূমিকা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে স্থানীয়দের মনে।

উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে ও স্থানীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের শেষের দিকে ও চলতি বছর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রশাসনের চোখকে ফাকি দিয়ে একশ্রেণির পাহাড় কাটা চক্রের সাথে জড়িত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নির্বিচারে ছোট-বড় পাহাড় বা টিলা কাটা হচ্ছে। 

পাহাড় খেকোরা কখনও কখনও রাতের অন্ধকারে ড্রজার মেশিন দিয়ে আবার কখনও কখনও দিনমজুর দিয়ে মাটি কেটে সাবার করছে। নানা সময়ে নানা কৌশল অবলম্বন করছেন তারা । 

অনুসন্ধানে আরো জানান যায়, মাটি কাটার সিন্ডিকেটটি পাহাড় বা টিলার মালিককে ফুসলিয়ে তার জমিন ( পাহাড় বা টিলা) সমান করে দেয়ার কথা বলে মাটি কেটে তা অন্যত্র বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রায় ৩৫-৫০ ফুট ধারণকৃত ট্রলি পাহাড়ি মাটি বিক্রি করছেন ৮০০-১০০০ টাকা করে। 

তাছাড়া পাহাড় কেটে সমতল করে অন্যায়ভাবে ছোট-বড় প্লট তৈরি করে বিক্রিয় করছে তারা। এতে পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানে ফাটলের দেখা দিয়েছে। প্রবল বর্ষনে পাহাড় গুলো ধসে যে কোনো মুহুর্তে ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা। 

মানিকছড়ি উপজেলার সদর ও তিনটহরী ইউনিয়নে বসবাসরত কয়েকজন ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পাহাড় কাটার সাথে জড়িত চক্র বিভিন্ন সময়ে স্থানীয়দের প্রশাসনকে ম্যানেজ করার শর্তে পাহাড় বা টিলা সমতল করে স্থাপনা নির্মাণ করার পরামর্শ দিলে তারাও তাদের শর্তে রাজি হন।

চক্রের শর্ত তারা পাহাড় কাটার মাটি গুলো অন্যত্র সরিয়ে নিবে বা নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করবে। যার ফলে জমি বা পাহাড়ের মালিক কম খরচে পাহাড় বা টিলা সমতল করতে পারছে। যাতে পরবর্তিতে সেখানে স্থাপনা নির্মাণ করতে পারে।  

এছাড়াও উপজেলার কুমারী, বাটনতলী ও যোগ্যাছোলার বেশ কিছু এলাকায় দেখা যায়, কৃষি কাজে ব্যবহৃত জমিতে পুকুর কিংবা দিঘী তৈরি করে দেয়ার নামে চলছে জমির টপ সয়েল (উপরি ভাগের মাটি) অপসারণ। কোথাও কোথাও রাস্তার পাশে প্লট তৈরি করতে কৃষি জমির টপ সয়েল (উপরি ভাগের মাটি) ব্যবহার করতে দেখা গেছে। ফলে কমে যাচ্ছে আবাধি জমির পরিমান।

মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না মাহমুদ জানান, পাহাড় কাটার কোনো অভিযোগ আমরা এখনও পাইনি। অভিযোগ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আমারসংবাদ/এআই