Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪,

সিরাজদীখানে কচুরিপানার দখলে ইছামতি নদী

সিরাজদীখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি

এপ্রিল ১০, ২০২১, ০১:৩০ পিএম


সিরাজদীখানে কচুরিপানার দখলে ইছামতি নদী

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলার ইছামতি নদী দীর্ঘ দিন ধরে কচুরিপানার দখলে রয়েছে। এতে হুমকির মুখে রয়েছে নদীটি। কচুরিপানার জঞ্জালে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে মরে যাচ্ছে নদীটি। হুমকিতে পড়েছে জলজ জীববৈচিত্র্য। মাছের উৎপাদন কমে যাওয়ায় জেলেদের জীবন-জীবিকাও অনিশ্চিত হয়ে গেছে অনেক দিন আগে। 

সরেজমিনে ইচ্ছামতি নদী কচুরিপানা দিয়ে একাকার হয়ে আছে। উপজেলার বয়রাগাদী ইউনিয়নের বাহেরঘাটা নামক এলাকায় এমনটাই চিত্র দেখা গেছে। এছাড়া নদীর পানি কমে চর হওয়ায় এক শ্রেণীর অসাধু মাটি ব্যবসায়ীরা ভেকু দিয়ে এবং ড্রেজার বসে মাটি উঠিয়ে বিক্রি করছেন।

জানা যায়, এক সময়ে ইছামতির নদীর বুকে লঞ্চ-স্টিমার চলাচল করত। কিন্তু কালের আবর্তে এখন মৃতপ্রায় নদীটি। নাব্য সংকট ও দখলের কবলে হারিয়ে যেতে বসেছে খরস্রোতা ইছামতি। 

এখন ইছামতির বুকে লঞ্চ আর স্টিমারের হুইসেল বেঁজে উঠে না। হাজারো মানুষ নৌযান চালিয়ে এখন আর জীবিকা নির্বাহ করে না। তাই মৃত ইছামতির বুক জুড়ে এখন জটলা পেকেছে শুধুই কচুরিপানা। 

এছাড়া কিছু জেলে কচুরিপানার জটলা পাকিয়ে মাছের কৃত্রিম অভয়ারণ্য তৈরি করে মাছ শিকার করে। ফলে কচুরিপানা স্রোতের সাথে অন্য স্থানে যেতে পারে না। এ কারণে কচুরিপানা অন্য স্থানে যেতে পারে না। 

যৌবনদীপ্ত ইছামতির তীরে সিরাজদীখান বাজার গড়ে উঠেছিল। তৎকালীন সময়ে এ বাজার হাজারো মানুষের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠত।  

ইছামতি নদী ঘিরে উপজেলার ইমামগঞ্জ, গ্রীগঞ্জ, ইছাপুরা, নোয়াপাড়া, শিংপাড়া, বৌবাজার, নিমতলা, শেখরনগর, মরিচা, সৈয়দপুর, রামকৃঞ্চদী, রাজানগর, বাহের ঘাটা, টেকেরহাট এলাকায় বাজার সরগরম করত।

কিন্তু এখন ওই সব বাজারের সামনে ইছামতি মরা খালে পরিণত হয়ে উঠেছে। এসব বাজারে যাতায়াত করতে এখন আর ডিঙ্গি নৌকা চলাচল করে না। চলে না ট্রলার কিংবা লঞ্চ। এতে অসংখ্য পরিবার বেকার হয়ে পড়ে। এখন ওই সব পরিবার অন্য পেশা বেছে নিয়েছে। 

নদী তীরবর্তী বাসিন্দা আওয়াল হোসেন বলেন, স্রোত কমে যাওয়ায় নদীটির বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে নাব্য সংকট। জেগেছে ছোট-বড় চর। এভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে নদীটি দখল হয়ে যাবে বলে তাদের আশঙ্কা। 

সিরাজদীখান বাজারের বাঁশ ব্যবসায়ী মো.মোফাজ্জল হোসেন বলেন,আমার বাবা এই ইছামতি নদীর তীরে প্রায় ৫০ বছর বাশের ব্যবসা করেছেন। সে এখন বৃদ্ধ হয়ে গেছেন। আমি প্রায় ৩০ বছর ধরে বাঁশ ব্যবসার সাথে জড়িত। 

এক সময় ইছামতি নদী ছিল খরস্রোতা। নদীর এক তীর থেকে অন্য তীরের দৈর্ঘ্য ছিল অনেক। এখন ইছামতি নদী ছোট হয়ে গেছে। নদীর বুকজুড়ে কচুরিপানায় ভরে যাওয়ায় এখন বাঁশ আনা নেওয়া করা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। এখন নদীতে কোন ট্রলার বা নৌকা চলাচল করে না। তাই বাজারে বাঁশ সরবরাহ করতে এখন সড়ক পথ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এতে খরচও বেশি লাগে। 

বাজারের রাইছ মিলের ব্যবসায়ী নজরুল শেখ বলেন, ইছামতি নদীকে ঘিরে রাইচ মিল ছিল জমজমাট। এখন কচুরিপানার কারণে নৌকা বা ট্রলার টলার চলাচল করতে পারে না। দূর-দূরান্ত থেকে বাজারের রাইছ মিলেও আসে না।

আমারসংবাদ/এআই