Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

সহকারী পুলিশ সুপার-এসআইয়ের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

শাহ জামাল, পেকুয়া

এপ্রিল ১৪, ২০২১, ০৩:১০ পিএম


সহকারী পুলিশ সুপার-এসআইয়ের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

কক্সবাজারের পেকুয়ায় পুলিশ পাহারা রেখে তিনটি দোকানঘর স্কেভেটার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বুধবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের চৌমুহনীর উত্তর পাশে এবিসি সড়ক লাগোয়া স্থানে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের এমন বর্বর ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিক নুর মুহাম্মদ, ভাড়াটিয়া পারভেজ ও মোকাম্মেল সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।

চকরিয়া-পেকুয়ার সার্কেল তফিকুল আলম ও পেকুয়া থানার এসআই হেবজুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশের উপস্থিতিতে সাবেক গুলদি এলাকার মকসুদ আহমদ গং ওই দোকানঘর তিনটি গুড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী নুর মুহাম্মদ গং।

পেকুয়া সদর ইউনিয়নের শেখের কিল্লা ঘোনার বাসিন্দা মৃত আমির হোসেন এর ছেলে নুর মুহাম্মদ পেকুয়ার কর্মরত সাংবাদিকের উপস্থিতিতে তার বাসভবনে করা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিগত কয়েকমাস আগে ইসলাম মিয়ার স্ত্রী মাসুমা খাতুন থেকে বিএস ৩৯৮ খতিয়ান থেকে জায়গা ক্রয় করে তিনটি দোকানঘর তৈরি করি। চট্টগ্রামের পারভেজকে এসি ফ্রিজের সার্ভিসিং সেন্টার ও পেকুয়া সদর বাইম্যাখালীর মোকাম্মেলনকে মোটর পার্টসের দোকান হিসাবে দুটি দোকান ভাড়া প্রদান করি গত ৫ মাস আগে। এছাড়াও আ.লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা একটি দোকান ভাড়া নিয়ে আ.লীগের এক সহযোগী সংগঠনের কার্যালয় হিসাবে ব্যবহার করে থাকেন।

ইতোমধ্যে আমার ক্রয়কৃত জমিতে নির্মিত দোকানঘর তিনটি জবর দখল করার চেষ্টা করে আসছিল সদর সাবেক গুলদি এলাকার মৃত মোজাহের আহমদের ছেলে মকসুদ আহমদ গং।

যার কারণে আমরা বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে ১৪৪ ধারা মতে স্থিতিশীল অবস্থা বজায় রাখার জন্য আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত স্থিতিশীল অবস্থা বজায় রাখার পাশাপাশি সহকারি কমিশনারকে (ভূমি) এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দেয়ার জন্য দায়িত্ব অর্পন করেন। বর্তমানে বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। এ ঘটনার পর থানা পুলিশকে ব্যবহার করে দোকানঘরটি ভেঙে দিয়ে জবর দখল করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিল মকসুদ গং। সর্বশেষ মকসুদ আহমদ গং টাকার বিনিময়ে চকরিয়া-পেকুয়ার সার্কেল তফিকুল আলম ও পেকুয়া থানা এসআই হেবজুর রহমানকে ম্যানেজ করে তাদেরকে সরাসরি ঘটনাস্থলে উপস্থিত করে ভয় ও আতংক ছড়িয়ে স্কেভেটার দিয়ে দোকান তিনটি গুড়িয়ে দেয়। 

বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক কোন ধরণের আদেশ না থাকলেও পুলিশ শুধু মাত্র টাকার বিনিময়ে বা অন্য কোন কিছুর বিনিময়ে ম্যানেজ হয়ে প্রকাশ্যে দোকান তিনটি ভেঙে দিতে সন্ত্রাসীর ভূমিকা পালন করে। আমাদেরকেও কোন ধরণের নোটিশ দেয়া হয়নি পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে। প্রথম রোজা রেখে আমরা যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়ছিলাম তখনি এ কাজটি করেছে পুলিশসহ মকসুদ, তার মেয়ে আয়েশা, ভাড়াটি মৃত আবুল খায়েরের ছেলে সামশু নামের এক ব্যক্তি। পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের এমন কাণ্ড দেখে ভয়ে পাড়ালীয়ারা এগিয়ে আসতে পারেনি। দোকান গুড়িয়ে দেয়ায় ভাড়াটিয়া ছাড়া আমার প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। স্কেভাটার দিয়ে দোকান গুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। সহকারী পুলিশ সুপার তফিকুল আলম গাড়ী নিয়ে রাস্তায় টহল দিচ্ছে। দুইপাশে পুলিশ বসিয়ে রাখে।

তিনি আরো বলেন, চকরিয়া-পেকুয়ার সার্কেল তফিকুল আলমের উপস্থিতি ও এসআই হেবজুর রহমানের উপস্থিতির মাধ্যমে যে দোকানঘরটি ভেঙে দেয়া হচ্ছে তার ভিডিও চিত্র আমার হাতে রক্ষিত রয়েছে। এমন বর্বর ঘটনাটি ঘটার পর পুলিশ সুপার কক্সবাজারকে বিষয়টি অবগত করি। পুলিশ সুপার মহোদয় বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। আমার প্রশ্ন পুলিশ বিজ্ঞ আদালতের আদেশ ছাড়া নিজ উদ্যোগ নিয়ে কোন ধরণের দোকানঘর ভেঙে দিতে পারে কিনা। অন্যতায়  বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে আমি আইনের আশ্রয় নিব।

দোকানের ভাড়াটিয়া পারভেজ কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, বিগত ৫ মাস আগে আমি নুর মুহাম্মদ থেকে সালামি দিয়ে দোকানটি ভাড়া নিয়ে এসি ফ্রিজের সার্ভিসিং সেন্টার করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। আমাকে দোকানের মালামাল বের করার কোন ধরণের সুযোগ না দিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে দোকানটি ভেঙে দেন। তাতে আমার এসি ফ্রিজসহ মালামাল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে ৫ লক্ষাধীক টাকার ক্ষতি হয়। আমি খুব গরীব মানুষ। লকডাউনের সময় এমনিতে কাজ বন্ধ। তার উপর পুলিশ ও মকসুদ গংয়ের রোষানলে পড়ে আমার অনেক বড় ক্ষতি হল।

পেকুয়া থানার এসআই হেবজুর রহমান বলেন, লকডাউন পরিস্থিতি নিয়ে আমার ডিউটি চলার সময় স্থানীয়রা দোকান দখল বেদখল নিয়ে সংঘর্ষের কথা বলায় ওখানে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে এসেছি। কারা দোকান ভেঙে দিয়েছে সেই বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। 

চকরিয়া-পেকুয়ার (সার্কেল) সহকারী পুলিশ সুপার তফিকুল আলম জানায়, আমি পেকুয়ায় গিয়েছিলাম লকডাউন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য। দোকান ভেঙে দেয়ার বিষয়টি আমি অবগত নয়। আমার বিরুদ্ধে যেই অভিযোগ উঠেছে তা মিথ্যা।

আমারসংবাদ/কেএস