Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

সোনালী ব্যাংকের একাউন্ট থেকে গ্রাহকদের টাকা গায়েব!

গৌরীপুর প্রতিনিধি

এপ্রিল ১৫, ২০২১, ০৯:২৫ এএম


সোনালী ব্যাংকের একাউন্ট থেকে গ্রাহকদের টাকা গায়েব!

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে সোনালী ব্যাংকে দরিদ্র মায়েদের মাতৃত্বকালীন ভাতার একাধিক সুবিধাভোগীদের একাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠেছে। 

সুবিধাভোগীরা ব্যাংক চেক নিয়ে ব্যাংকে টাকা তুলতে গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তা জানিয়ে দেন তাদের টাকা উত্তোলন হয়ে গেছে। 

এতে হতবাক হয়ে যাচ্ছেন সুবিধাভোগীরা। ভুক্তভোগী নারীরা তাদের চেক ও ভাতার কার্ড নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও এর কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না।

স্থানীয় সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভূয়া কাগজপত্র তৈরী করে স্থানীয় একটি প্রতারক চক্র ব্যাংক হিসাব থেকে মাতৃত্বকালীন ভাতার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। 

আর এ টাকা হাতিয়ে নেয়ার পেছনে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তা, উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও স্থানীয় কিছু অসাধু জনপ্রতিনিধিদের হাত রয়েছে। 

বর্তমানে এর দায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপর চাপানোর চেষ্টা করছেন ব্যাংক কর্মকর্তা। অপরদিকে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা এর দায় ব্যাংক কর্মকর্তার উপর চাপাচ্ছেন।

২০১৬-১৭ অর্থ বছরের দরিদ্র মা'র জন্য মাতৃত্বকাল ভাতা প্রদান কর্মসূচীর সুবিবধাভোগী পালান্দর গ্রামের শাহানা খাতুন (কার্ড নং-৪৮, ব্যাংক হিসাব-২০১০১৮৫৮৪) জানান, তিনি ভাতা কার্ড নিয়ে টাকা তুলতে মঙ্গলবার দুপুরে গৌরীপুর সোনালী ব্যাংকে গেলে ব্যাংকের কর্মকর্তা তাকে বলেন, তার টাকা হিসাব থেকে উত্তোলন হয়ে গেছে। 

এ কথা শুনে তিনি হতবাক হয়ে ব্যাংক থেকে বের হয়ে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।

সুবিধাভোগী শাহনাজ (ব্যাংক হিসাব-২০১০১৮৬০৭) ও কল্পনা (ব্যাংক হিসাব নং-২০১০১৮৭৮২) ব্যাংক চেক নিয়ে তারা দু'জন টাকা তুলতে গেলে ম্যানেজার বলেন তাদের টাকা উত্তোলন হয়ে গেছে। টাকা না পেয়ে তারা সাংবাদিকদের এ বিষয়ে অভিযোগ করেন। এরকম আরও একাধিক ভাতাভোগীর টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুলতানা বেগম আকন্দ জানান, 'কয়েকজন সুবিধাভোগী আমার কাছে এসে তাদের ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। তাদের অভিযোগ শুনে আমি হতবাক হয়ে পড়ি।'

তিনি বলেন, এ ঘটনার জন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষ দায়ী।

গৌরীপুর সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার শারফুল আজিজ বলেন, উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে যাচাইকৃত ভাতাভোগীদের ব্যাংক থেকে লুজ চেকের মাধ্যমে টাকা দেয়া হয়েছে। 

এক্ষেত্রে উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর একই নামে দুই নারীর এনআইডি/জন্ম সনদ সীল মেরে ব্যাংকে পাঠানোর ফলে এরকম ঘটনা ঘটছে। তিনি এজন্য মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মকর্তা  দায়ী করেন।

এদিকে ব্যাংক কর্মকর্তা শারফুল আজিজের বক্তব্যে'র বিরোধিতা করে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুলতানা বেগম আকন্দ বলেন, ব্যাংক হিসাব যাচাই করে টাকা প্রদানের দায়িত্ব ব্যাংক কর্মকর্তার। 

এটা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দায়িত্ব নয়। উল্লেখিত ভাতাভোগীরা তাদের ব্যাংকের হিসাব থেকে এর আগে আরও টাকা উত্তোলন করেছেন ইতিপূর্বে একজনের টাকা অন্যজনে হাতিয়ে নেয়ার কোন অভিযোগ ওঠেনি।

আমারসংবাদ/এআই