Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

মানিকছড়ি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও ওসিএলএসডি’কে কারণ দর্শানোর নোটিশ

মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি

এপ্রিল ১৯, ২০২১, ১২:১৫ পিএম


মানিকছড়ি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও ওসিএলএসডি’কে কারণ দর্শানোর নোটিশ

মানিকছড়ি উপজেলাধীন চার ইউনিয়ন পরিষদের অনুকূলে ভিজিডি কর্মসূচির আওতায় চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বরাদ্ধ হতে চলতি এপ্রিল মাসে ৪৩ মেট্রিক টন আতপ চাল উপ-বরাদ্ধ প্রদান করা হয়। যা উপজেলার ১৪৬৪ জন সুবিধাভোগীদের মাঝে ৩০ কেজি করে বিতরনের নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু ভিজিডি’র বরাদ্ধকৃত খাদ্যশস্যের ছাড়পত্রের (ডি.ও) তথ্য গোপন করে আতপের পরির্বতে সিদ্ধ চাল ছাড় করার ঘটনায় তোলপাড় চলছে উপজেলা জুড়ে। বিভিন্ন সংবাদপত্র ও অনলাইন পোর্টালে সংবাদ প্রকাশের পর মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রাথমিক তদন্ত শেষে আতপের স্থলে সিদ্ধ সরবরাহ করার সত্যতা পেয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক ও ওসিএলএসডিকে আগামী ৩ কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সোমবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে তাদের দুজনকে এ নোটিশ প্রদান করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বরাদ্দপত্র ও তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, মানিকছড়ি উপজেলায় ১ হাজার ৪শ ৬৪জন ভিজিডি সুবিধাভোগী রয়েছে। তারা প্রতি মাসে ৩০ কেজি হারে খাদ্যশস্য (চাল) ভোগ করে আসছিলেন। এরই অংশ হিসেবে চলতি এপ্রিল-২১ মাসের ভিজিডি’র খাদ্যশস্যের ছাড়পত্রে গত ১১ এপ্রিল  স্বাক্ষর করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না মাহমুদ। একই দিন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জুলিয়াস চাকমা (ডিও নং ৬৫৩৯১৬৮-৬৫৩৯১৭১) ছাড়পত্র  প্রদান করেন।

উক্ত ছাড়পত্রে আতপ চাউল বিতরণের নিদের্শনা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে ওসিএলএসডি মো. শামীম উদ্দীন একটি ইউনিয়ন (৪ নং তিনটহরী) ব্যতিত অন্য তিনটি ইউপিতে রেকর্ডপত্রে আতপ চাউল দেখালেও বাস্তবে সিদ্ধ চাউল সরবরাহ করেন। ফলে অফিসিয়াল রেকর্ডপত্র এবং সরজমিনের বাস্তবচিত্রে গড়মিল দেখা যায়। 
বিষয়টি সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অবগত হওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশনা প্রদান করেন। এ নিয়ে গত ১৮ এপ্রিল বিকালে থেকেই প্রশাসনসহ জনপদে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। 

যার ফলে আজ সোমবার (১৯ এপ্রিল) সকালে ইউএনও তামান্না মাহমুদ সরজমিনে পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে ছাড়পত্র অনুযায়ী বর্হিভূত আতপের পরির্বতে ১নং মানিকছড়িতে ৩৬৬ বস্তা সিদ্ধ, ২নং বাটনাতলীতে ২৯০ বস্তা এবং ৩নং যোগ্যাছোলা ইউপিতে ৩০৯ বস্তা সিদ্ধ চাল সরবরাহের সত্যতা  খুঁজে পান। কিন্তু ওসিএলএসডি  সিদ্ধ চাউল বিতরণের কথা অস্বীকার করায় বিষয়টি নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে! তাহলে প্রশ্ন থেকে যায়, খাদ্যগুদাম থেকে ইউপি গোডাউনে যেতে মাঝ পথে ৭/৮ কিলোমিটার রাস্তায় আতপ চাউল সিদ্ধ হলো কী করে? 

অন্যদিকে বিতরণকালে নিন্মমানের চাউলের বস্তা পাওয়া গেল তা গুদামে ফেরত দিয়ে পরিবর্তন করে নিতে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সচিবদেরকে মৌখিকভাবে নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না মাহমুদ।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না মাহমুদ বলেন, ভিজিডি’র চাউল সরবরাহে অনিয়মের কথা শুনে বিষয়টি অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। বরাদ্দপত্রানুযায়ী চাউল সরবরাহ না করে কেন আতপের পরির্বতে সিদ্ধ চাউল সরবরাহ করা হলো, তার জবাব চাওয়া হয়েছে। ঘটনায় যেই জড়িত থাকুক না কেন তার বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

এদিকে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জুলিয়াস চাকমা কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভিজিডি’র চাল সরবরাহে অনিয়মের ব্যাখা চেয়ে আমাকে শোকজ করায় আমি নিয়মানুযায়ী খাদ্যগুদামের দায়িত্বরত ওসিএলএসডি মো. শামীম উদ্দীনের কাছে লিখিত ব্যাখা চেয়েছি। অনিয়ম প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

আমারসংবাদ/কেএস