Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

বীর শ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

নাজমুল হোসেন রনি

এপ্রিল ২০, ২০২১, ১১:১৫ এএম


বীর শ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

১৯৪৩ সালের ১ মে ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার স্থানীয় এক মসজিদের ইমাম মুন্সি মেহেদি হাসান ও মুকিদুন্নেসার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন এই মহান যোদ্ধা। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২নং কমান্ডো ব্যাটেলিয়ানের দুই কোম্পানি সৈনিক ৭টি স্পিড বোট ও ২টি লঞ্চ সহযোগে রাঙ্গামাটি-মহালছড়ি নৌপথের আশেপাশে অবস্থানরত মুক্তিবাহিনীর উপর আক্রমণ করেন।

উইকিপিডিয়ার তথ‍্যে ৮ এপ্রিল হলেও তারিখটি হবে ২০ এপ্রিল ১৯৭১ এই দিনটি নানিয়ারচর বাসীর জন‍্য রক্তে ঝরা দিন, আমরা হয়তো কেউ জানি না বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফের শাহাদৎ বার্ষিকী আজ।

রাঙ্গামাটি-মহালছড়ি যুদ্ধে ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামানের নেতৃত্বে ৮ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এবং ইপিআর-এর ১৫০ জন সৈনিকের দায়িত্বে দেওয়া হয়েছিল রাঙ্গামাটি-মহালছড়ি নৌ পথের নিরাপত্তা একান্ত প্রহরীর। দলের সর্বকনিষ্ঠ এক নম্বর এলএমজি চালক মুন্সি আব্দুর রউফ পার্বত্য চট্টগ্রামের নানিয়ারচর উপজেলাধীন বাকছড়ির বাঙ্কারে দায়িত্বরত ছিলেন।

২০ এপ্রিল ১৯৭১ এ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২ নং কমান্ডো ব্যাটেলিয়ানের দুই কোম্পানি সৈনিক ৭টি স্পিড বোট ও ২টি লঞ্চ সহযোগে রাঙ্গামাটি-মহালছড়ি নৌপথের আশেপাশে অবস্থানরত মুক্তিবাহিনীর উপর আক্রমণ করে। লঞ্চগুলোতে ৬টি ৩" মর্টার সজ্জিত ছিলো। পাকিস্তানী বাহিনী মুক্তিবাহিনীর অবস্থান টের পাওয়া মাত্রই তাদের অবস্থানের উপর মর্টারের গোলাবর্ষণ শুরু করেন। তাদের এই অতর্কিত আক্রমণে মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। এই সুযোগে কিছু পাকিস্তানী সৈন্য পাড়ে নেমে মুক্তিবাহিনীর অবস্থান ঘিরে ফেলে।

ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামান পেছনে হটার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু নিরাপদে অবস্থান ত্যাগের জন্য দরকার নিরবিচ্ছিন্ন কভারিং ফায়ার, অকুতোভয় মুন্সি আব্দুর রউফ এর এলএমজির কভারিং ফায়ারেই ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামান তার সৈন্যদের নিয়ে পেছনে হটতে থাকেন। তার অব্যর্থ গুলিতে স্পিড বোটগুলো ডুবে যায়  এবং অবস্থানরত পাকিস্তানী সৈন্যরা হতাহতসহ পিছু হটতে থাকে। পাকিস্তানীর এলএমজির রেঞ্জের বাইরে গিয়ে মর্টারের গোলাবর্ষন করতে থাকে। অসীম সাহসী মুন্সি আব্দুর রউফ তখনো গুলি চালানো অব্যাহত রেখেছিলেন। হঠাৎ করে শত্রুর একটি গোলা তার  উপরে এসে পড়ে। মুহূর্তই ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় বাংলার অসীম সাহসী বীর মুন্সি আব্দুর রউফ এর দেহ। পরবর্তীতে সহযোদ্ধারা তার লাশ উদ্ধার করে নানিয়ারচরের চিংড়ি খাল সংলগ্ন টিলার উপরে সমাহিত করেন।যা বর্তমানে রউফ টিলা নামে সুপরিচিত।

মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান বিবেচনা করে বাংলাদেশ সরকার তাকে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করেন। বাংলাদেশ রাইফেলস ১৯৭৩ সালে সিপাহী মুন্সি আব্দুর রউফকে ল্যান্স নায়েক পদে মরোণোত্তর পদোন্নতি প্রদান করেন, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ তার জীবনের বিনিময়ে রক্ষা করেন ১৫০ জন সহযোদ্ধার জীবন এবং পাকিস্তানী বাহিনীর বহু সৈন্যকে হতাহত করেছেন। স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ তাকে 'বীরশ্রেষ্ঠ' খেতাবে ভূষিত করা হয়েছে।

একটি সূত্র থেকে জানা যায়, এবারে মহামারি করোনা ভাইরাসের কারনে মৃত্যু বার্ষিকীর কোন আয়োজন করা যায়নি।

আমারসংবাদ/কেএস