Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

প্রধানমন্ত্রীর উপহার 'ঘর' পেয়ে খুশি ৬১ ভূমিহীন পরিবার

মিজানুর রহমান, মনিরামপুর (যশোর)

এপ্রিল ২২, ২০২১, ০৮:৩৫ এএম


 প্রধানমন্ত্রীর উপহার 'ঘর' পেয়ে খুশি ৬১ ভূমিহীন পরিবার

স্বামী পরিত্যাক্তা মেয়েকে নিয়ে পিতার ভিটেয় থাকেন মাছনা গ্রামের শরিফা বেগম (৬৫)। স্বামী আব্দুল জলিল মারা গেছেন বেশ আগে। সেই থেকে কষ্টের সংসার তার। এই বৃদ্ধা মাছনা মৌজায় ভূমিহীনদের জন্য নির্মিত একটি ঘর পেয়েছেন। 

গেলো সোমবার ঘরের চাবি হাতে পেয়ে খুশি তিনি। একই মৌজায় ঘর পেয়েছেন বেগমপুর গ্রামের স্বামী পরিত্যাক্তা পলি খাতুন (৩০)। দুই সন্তানকে নিয়ে মণিরামপুর বাজারে ভাড়া ঘরে থেকে অন্যের বাসায় কাজ করেন তিনি। ঘর পেয়ে মহা খুশি এই নারী।পলি খাতুনের পাশেই ঘর পেয়েছেন পারভিনা খাতুন (২৯)। 

দিনমজুর স্বামী শরিফ হোসেন ও দুই সন্তানকে নিয়ে সেখানে উঠতে চেয়েছেন তিনি। এই তিন নারীর মত ৬১টি ভূমিহীন পরিবার মাছনা মৌজায় রঙিন টিনের চাউনির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার পাকা ঘর পেয়েছেন। 

চুড়ান্তভাবে গত সোমবার তাদের মাঝে ঘর হস্তান্তর করা হলেও এই মুহূর্তে তাদের কেউ স্বপ্নের ঠিকানায় পাড়ি জমাতে পারছেন না। পানির সরবরাহ ও বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় তাদের ঘরে ওঠা হচ্ছে না। 

কবে এই চাহিদা মিটিয়ে ঘরে উঠতে পারবেন সেটা জানা নেই তাদের।পলি খাতুন বলেন, দুই সন্তানকে নিয়ে ভাড়া ঘরে থাকতাম। গত সোমবার সকালে ঘরের চাবি পাইছি। ঘর পেয়ে আমি খুব খুশি। মাথা গোঁজার একটা স্থায়ী ঠিকানা হলো। এখন বিদ্যুৎ আর পানির ব্যবস্থা হলি ঘরে উঠব। 

শরিফা বেগম বলেন, কোন সময় সরকারি সহায়তা পাইনি। এই প্রথম সরকার সহায়তা হিসেবে আমারে ঘর দেছে। আমি খুব খুশি। ঘরের চাবি পেয়ে তালা খুলে ঘর ঠিকঠাক দেখে নিছি। কারেন্ট নেই; পানি খাওয়ার ব্যবস্থা নেই। ঈদের আগে ঘরে উঠতি পারব বলে মনে হচ্ছে না। এই নারী ঘর পেয়ে খুশি হলেও বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা নিয়ে শঙ্কিত তিনি। 

শরিফা বেগম বলেন, আমার ঘরসহ কয়েকটা ঘর নিচু জায়গায় পড়েছে। বর্ষার সময় এখানে পানি জমে শুনিছি। ওই সময় থাকা নিয়ে চিন্তায় আছি।

মণিরামপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়, মণিরামপুরে পৌর এলাকা, মাছনা, শিরিলি, মধুপুর, চাকলা, কালারহাট ও হাজরাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় ভূমিহীনদের জন্য ২৮২টি ঘর নির্মিত হচ্ছে।

কাজ শেষে ২৬২টি ঘর ভূমিহীনদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে। যার মধ্যে মাছনা এলাকায় হস্তান্তর হয়েছে ৬১টি ঘর। বাকি ২০ টি ঘরের কাজ চলমান রয়েছে। প্রতিটি রঙিন টিনের চৌচালা পাকা ঘরে থাকছে সংযুক্ত টয়লেট, রান্নাঘর ও বারান্দাসহ দুটি বেড রুম।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ বায়েজিত বলেন, ২৮২টি ঘরের মধ্যে ২৬২টির কাজ শেষ করে চাবি ভূমিহীনদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ২০টি পরে বরাদ্দ হওয়ায় সেগুলোর কাজ চলমান আছে। 

বিদ্যুৎ ও পানির জন্য ঘরে উঠতে সমস্যা হচ্ছে। নিচু জমির ঘরগুলোর আশপাশে মাটি ভরাট করা হবে।মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসান বলেন, ২৬২টি ঘরের কাজ সম্পন্ন করে ভূমিহীনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রতি ১০ ঘরের জন্য একটি করে আর্সেনিকমুক্ত টিউবওয়েল স্থাপনের জন্য উপজেলা জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে চিঠি করা হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য পল্লীবিদ্যুৎ কাজ করছে।

জানতে চাইলে উপজেলা জনস্বাস্থ্য সহকারী প্রকৌশলী জয়দেব কুমার দত্ত বলেন, টিউবওয়েল বরাদ্দ চেয়ে ঢাকায় চিঠি পাঠানো হয়েছে। 

বরাদ্দ আসলে জুনের মধ্যে সব নলকূপ স্থাপনের কাজ শেষ করা হবে।যশোর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২ (মণিরামপুর) সদর দপ্তরের জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী অরুন কুন্ডু বলেন, ভূমিহীনদের ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ চলছে। লকডাউনের জন্য কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। আমরা দ্রুত কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি।

আমারসংবাদ/এআই