Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

সুবর্ণচরে প্রথম ব্রি জাতের বোরো আবাদে বাম্পার ফলন

আরিফ সবুজ, সুবর্ণচর (নোয়াখালী)

মে ৫, ২০২১, ০৭:৫৫ এএম


সুবর্ণচরে প্রথম ব্রি জাতের বোরো আবাদে বাম্পার ফলন

গ্রামের প্রায় পুরোটাই অনাবাদি। শুধু মাঝখানের প্রায় ৪২ বিঘা জমিতে ছড়িয়ে আছে সোনালি আভা। বাতাসে দোল খাচ্ছে পাকা ধানের শিষ। কৃষকের বিস্ময় আর আগামীর স্বপ্নও যেন দোল খাচ্ছে ধানের শিষের সঙ্গে। গ্রামের নাম চর মজিদ।

এর অবস্থান নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার পূর্বচরবাটা ইউনিয়নে ইউনিয়নে। এখানে আবাদি জমির পরিমাণ দুই হাজার বিঘার বেশি। লবণাক্ততাপ্রবণ এ গ্রামে মাত্র একটি ফসল হয়। আর সেটি হলো বর্ষা মৌসুমে আমন ধান। জুনের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু আমন আবাদ। অক্টোবরে ধান ঘরে ওঠে। এরপর পুরো বছরই পড়ে থাকে জমি।

এবারই প্রথম চর মজিদ গ্রামে বোরো ধানের চাষ করেছেন কৃষকেরা। পরীক্ষামূলকভাবে ৪২ বিঘা জমিতে ব্রি-৫৮ , ব্রি-৬৭, ব্রি-৭৮, এবং ব্রি-৮৯ নামের উচ্চ লবণসহনীয় ধানের চাষ করেছেন। বীজ থেকে শুরু করে সার্বিক সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) সোনাগাজী আঞ্চলিক কার্যালয়।

বুধবার চর মজিদ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, জমিতে পড়ে আছে কেটে নেওয়া আমন ধানের গোড়া, মাটিও শুষ্ক। বিলের মাঝ চোখে পড়ে ধানের খেত। পাক ধরেছে ধানে। অনেকে ধান কাটছে। ওই বিলে রয়েছে মো.  নুর উদ্দিন ৩ বিঘা জমি। সেখানে আমন ধানের বাইরে কখনো কোনো ফসলের চাষ হতে দেখেননি তিনি। লবণাক্ততা ও পানির সমস্যার কারণে নিজেও কখনো চেষ্টা করেননি অন্য ফসলের চাষ করতে। 

কিন্তু এবার বোরো মৌসুমে প্রথমবারের মতো ব্রি-৮৯ জাতের ধান চাষ করেন ওই জমিতে। তাঁকে বিনা মূল্যে দেয়া হয় বীজ, সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ। প্রথম দিকে অনিশ্চয়তা থাকলেও দুই মাস পর মুখে হাসি ফুটতে শুরু করে তাঁর। 

এই বিলে আব্দুল্যাহ ফারুক নামের আরেক কৃষকের জমি আছে ৩০ বিঘা। এবার তিন বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছেন তিনি। ধানের ফলন ভালো হওয়ায় ভবিষ্যতে পুরো জমিতেই বোরোর চাষ করবেন বলে জানান।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) সোনাগাজী কার্যালয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. বিশ্বজিৎ কর্মকার বলেন, 'ওই এলাকায় একটির বেশি ফসল হয় না। তাই ব্রি-৮৯ জাতের ধান লাগাতে কৃষকদের বিভিন্নভাবে উৎসাহিত করেছি। 

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) নোয়াখালী (বারী) কার্যালয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মহিউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) এর পরামর্শে ওই এলাকার কৃষকদের বোরো চাষে উদ্বুদ্ধ করতে ব্রি-৮৯ জাতের ধানের বীজ বিনা মূল্যে দেওয়া হয়। 

পাশাপাশি চাষের জন্য কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। 

তিনি জানান, ব্রি-৫৮ , ব্রি-৬৭, ব্রি-৭৮, এবং ব্রি-৮৯ হেক্টার প্রতি যথাক্রমে ৭.১ টন, ৬.৯৫ টন, ৭.২ টন  এবং ৮.৫টন ফসল পাওয়া গেছে।

আমারসংবাদ/এআই