Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

উঠানে লাশ, পাশেই অশ্লীল নৃত্য

মে ১৬, ২০২১, ০৩:৪৫ পিএম


উঠানে লাশ, পাশেই অশ্লীল নৃত্য

কোন পথে আজ দেশের তরুণ সমাজ। একযুগ আগেও ঈদ মানে যেখানে ছিলো চাঁদ দেখার তাড়া, হাতে মেহেদী, কাক ডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠা, ঈদগাহে নামাজ, কোলাকুলি আর ফিন্নি সেমাইয়ের আপ্যায়ন সেখানে আজ ঈদ, পহেলা বৈশাখ, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস আর শোকদিবস মিলে একাকার। দিবস যাইহোক, নাচ-গান ছাড়া যেনো সবকিছুই অপূর্ণ। খুশির দিনের উদযাপন শোকদিবসেও দেখা মিলে আমাদের সমাজে।

এমনই এক ঘটনা ঘটছে ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার লাখিরচর-তুলশীখালী ব্রিজের দক্ষিণ পার্শ্বে মুন্সিগঞ্জে জেলার সিরাজদিখান অংশের ডাকের হাটি গ্রামে। নদী ভাঙনের কবলে পড়া গ্রামের ধলেশ্বরী নদীর পাড়েই জনৈক মফশের মিয়ার স্ত্রী মারা যাওয়ায় বাড়িতে চলছিলো শোক। নদী থেকেও দেখা যাচ্ছিলো মৃতের লাশের খাট। পাশে স্বজনদের আহাজারি আর বুক ফাটা কান্না। কিন্তু বাড়ির পাশেই ঘাটে ট্রলারে ঈদ উপলক্ষে ঘুরতে আসা উশৃংখল কিছু বখাটে ছেলেমেয়েদের উচ্চস্বরে গানবাজনার তালে অশ্লীল নৃত্য মৃতের আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী আর পথচারীদের মনে দাগ কেটেছে। ধলেশ্বরী নদীতে ঘুরতে আসা প্রায় প্রতিটি ট্রলারেরই গন্তব্য যেনো তুলশীখালী ব্রিজ ও তার আশপাশই। তাই জনসাধারণের বাধা সত্যেই তাদের ডিজে পার্টিকে নির্বিত্ত করা যায়নি।

স্থানীয় মেম্বার শফিউদ্দিন মাসুম জানান, বোটে আশা যুবকদের বারবার বলার পরও তাদের থামানো যায়নি। মৃত্যু থেকে লাশ দাফন পর্যন্ত বখাটেদের সাউন্ড সিষ্টেম আর নৃত্য থামেনি। এছাড়া যেকোন দিবসে আমাদের বাড়ী থাকা মুশকিল হয়ে পরে। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ব্যার্থ হচ্ছি। এভাবে চলতে থাকলে আমাদেত গ্রামে বসবাস করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।

এদিকে ঈদের তৃতীয়দিনেও করোনার হটস্পট কেরানীগঞ্জ ও তার আশেপাশে ঘুরে দেখা গেছে, এলাকার অধিকাংশ কফি-শপ, রেস্টুরেন্ট, পার্ক এবং বিনোদন স্পটগুলো বেশ জমজমাট। বেশি ভিড় দেখা গেছে পার্ক, রেস্টুরেন্ট, ব্রিজ ও নদীর পাড়গুলোতে। পর্যটক, দোকানদার, ফেরিওয়ালা কারো মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবণতা দেখা যায়নি। কেউ কেউ ইচ্ছে করেই মাস্ক ব্যবহার করছেন না। 

জানতে চাইলে তারা বলছেন, মাস্ক প্যান্ট নয়তো শার্টের পকেটে। আবার কেউ কেউ মাস্ক পরতে ভুলে গেছেন এমন অজুহাতও দেন। কেরানীগঞ্জ প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিদিন স্বাস্থ্যবিধি তদারকির জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে দেখা গেলেও ঈদের দু'দিন তেমন দেখা যায়নি তাদের কার্যক্রম। কোথাও কোথাও পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেলেও পরিমানে তা যথেষ্ট ছিলোনা।

তবে কেরানীগঞ্জকে চার দিকে ঘিরে রাখা নদীগুলোতে ট্রলারে এবং সড়কে পিকাপ, অটোতে উচ্চস্বরে গানবাজনার সাথে উঠতি বয়সী তরুণ তরুণীদের অশ্লীল নৃত্য, পাশাপাশি মোটরসাইকেলে উশৃংখল যুগলদের চলাচল ভ্রমণ পিয়াসুদের বিব্রত করছে। সামাজিক অবক্ষয় রোধে প্রশাসনের নজরদারি বৃদ্ধির দাবি এলাকাবাসী।

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী মাইনুল ইসলাম (পিপিএম) বলেন, যে কোন প্রকাশ বিশৃঙ্খলা এড়াতে নিয়মিত টহল দিচ্ছে পুলিশ, আমরা কিছু অভিযোগ পেয়েছি। ইতোমধ্যে পুলিশ ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে। কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত দেবনাথও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রতিবেদককে। 

আমারসংবাদ/কেএস