Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

মণিরামপুরে সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে ধান বিক্রিতে কৃষকের অনীহা

মিজানুর রহমান, মণিরামপুর (যশোর)

মে ২০, ২০২১, ০৭:৩৫ এএম


মণিরামপুরে সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে ধান বিক্রিতে কৃষকের অনীহা

মণিরামপুরে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ শুরু হয়েছে। কিন্তু বাজারমূল্য ও সরকারি মূল্য প্রায় সমান হওয়াসহ নানাবিধ সমস্যার কারণে কৃষকেরা সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে ধান বিক্রির ব্যাপারে অনীহা দেখাচ্ছেন। ফলে উপজেলায় ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। 

গত ৬ মে মণিরামপুর উপজেলা প্রশাসন আনুষ্ঠানিক ভাবে সরকারি ভাবে ধান ক্রয়ের কার্যক্রম শুরু করেন। ২৭ টাকা কেজি ধরে সরকারি ভাবে ধান ক্রয় করা হচ্ছে। যা প্রতি মণ ধানের মুল্য দাঁড়ায় ১ হাজার ৮০টাকা। 

উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা কার্যালয় থেকে গতকাল জানানো হয়, এ পর্যন্ত ৩৫ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করা সম্ভব হয়েছে। উপজেলার শ্যামকুড় ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির দায়িত্ব নিয়ে শ্যামকুড় গ্রাম থেকে চাষি ইলিয়াস, রাজু এবং মনিরুল ইসলাম কে দিয়ে ৯ মেট্রিক টন ধান বিক্রি করিয়েছেন কার্যালয়ে। 

উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা সেলিম হোসেন বলেন, বাইরে বাজার মূল্য ভালো থাকায় চাষিরা কেউ ধান দিচ্ছেন না সরকারি এ অফিসে। বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ৩৫ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। উপজেলা এ অফিস থেকে বোরো মৌসুমে ৩৩’শ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের নির্দেশনা রয়েছে। সরকারি মূল্য এবং খোলা বাজারের মূল্যের ব্যবধান থাকায় ধান ক্রয় ভেস্তে যাবো এমন আশংকার কথাও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

মণিরামপুর আড়ৎ ব্যবসায়ী গোপাল দাস এবং আব্দুল গফুর জানিয়েছেন বর্তমান চিকন ধান প্রতিমণ ক্রয় করা হচ্ছে পৌনে ১১’শ টাকা মূল্যে। এর বাইরেও হাইব্রিড-২৮ ধান প্রতিমণ ১ হাজার ৬০-৮০টাকা পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে। আর বাশমতি নেওয়া হচ্ছে সাড়ে ১১’শ টাকা মূল্যে। 

পাতন গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন বলেন, খোলা বাজারে চিকন ধান বিক্রি হচ্ছে প্রতিমণ ১১’শ টাকা মূল্যে। তাও আবার গড়ভাবে নিচ্ছেন খোলা বাজারের ব্যবসায়ীরা। আর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা কার্যালয়ে প্রতিমণ ধান কিনছেন ১ হাজার ৮০ টাকা মূল্যে। তাও আবার ফ্রেশ ধান ছাড়া ধান কিনছেন না তারা। এ অফিসে ধান বিক্রি করতে কৃষকদের অফিস পর্যন্ত ধান বহনের খরচও রয়েছে। ফলে কৃষকরা ধান দিচ্ছেন না সেখানে। 

উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন বলেন, সরকারি মূল্যের চাইতে খোলা বাজারে মূল্য ভালো পাওয়ায় কৃষকরা সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে ধান দিচ্ছেন না এবার। ফলে সরকারি ভাবে এ উপজেলা থেকে যে ধান ক্রয়ের টার্গেট নিয়েছে তা সম্ভব হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। 

ধান ক্রয় কমিটির সদস্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হাসান জানান, বাজারে ভালো দাম থাকায় কৃষকরা সরকারি এ অফিসে ধান দিচ্ছেন না। চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলায় যে কোন মৌসুমের চাইতে এ বছর বোরো ফসল উৎপাদন ভালো হয়েছে। ২৭ হাজার ৫’শ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করে চাষিরা এ বছর ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ৮’শ ৪০ মেট্রিক টন ধান পেয়েছেন। বাজারে মূল্য ভালো থাকায় চাষিরা সরকারি ক্রয় কেন্দ্রের দিকে ফিরেও তাকাচ্ছেন না। 

আমারসংবাদ/এআই