Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

কমলনগরে হাঁস-মুরগি উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

মো. ফয়েজ, কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) 

মে ২৬, ২০২১, ০১:১৫ পিএম


কমলনগরে হাঁস-মুরগি উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার উপকূলীয় চরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আক্তারুজ্জামানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। এ প্রকল্পের অধীনে কমলনগরে সাড়ে তিন হাজার সুবিধাভোগী রয়েছেন। এর মধ্যে ৬০ ভাগ সুবিধাভোগীর হাঁস, মুরগি, ভেঁড়ার খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, সরবরাহকৃত হাঁস, মুরগি ও ভেড়া মরে যাওয়া এবং শেড নির্মাণে অনিয়ম ও নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করায় প্রকল্পটি ভেস্তে যেতে বসেছে। তালিকা তৈরীতে রয়েছে অনেক অনিয়ম। জরিপ না করে সুবিধাভোগীর তালিকা প্রণয়ন, প্রশিক্ষণে ভাতা বিতরণ ও সঠিক সময়ে খাবার বিতরণ করা হয়নি।

এ উপজেলায় ৭টি ইউনিয়নে সুবিধাভোগীদের মাঝে হাঁস-মুরগি ও ভেড়া বিতরণের পরপরই মারা যাওয়া ও খাবার নিম্নমানের হওয়ায় বিড়ম্বনায় পড়েছেন সুবিধাভোগী মানুষ। এতে ভেস্তে যাচ্ছে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্দেশ্য।

ডিপিপি অনুযায়ী প্রতিটি সুবিধাভোগীকে ২০টি হাঁস, ২০টি মুরগি, ৩টি ভেঁড়া, একটি শেড ভ্যাকসিন ও ১৪৩ কেজি খাদ্য সামগ্রী দেয়ার কথা। কিন্তু নামে বেনামে যেসব উপকরণ ও প্রাণি সরবরাহ করা হয়েছে তাতে অনিয়ম ও দুর্নীতি হওয়ায় প্রকল্পটি ভেস্তে যেতে বসেছে বলে দাবি করেছেন সচেতন মহল।

এতে দেখা যায়, সরবরাহ করা হাঁস-মুরগি বিতরণের পরপরই মারা যায়। অন্যদিকে জীবিত হাঁস-মুরগির জন্য বর্তমানে যেসব খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে তাও পঁচা ও খাবার অনুপযোগী।

গত মঙ্গলবার (২৫ মে) সকালে উপজেলার চরলরেঞ্চ গ্রামের স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাঠে ভেঁড়া বিতরণের সময় একটি ভেঁড়া অসুস্থ্য থাকায় তা বিতরণ করা হয়নি। এদিকে একই দিনে চরমার্টিন গ্রামে বিতরণের সময় দেখা গেছে অনিয়ম। সুফলভোগিদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে স্বাক্ষর করা সাদা স্টাম্প। নিয়মভঙ্গ করে নেওয়া স্টাম্পের কথা স্বীকার করলেও পরে ফেরত দেওয়া ও তাতে একটি প্রত্যায়নপত্র লেখা হবে বলেও জানান। 

এসব অনিয়মের কথা অস্বীকার করে কমলনগর উপজেলার দায়িত্বে থাকা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আক্তারুজ্জামান বলেন, সুফলভোগিদের কাছ থেকে কোন অনিয়মের অভিযোগ পাইনি। শতভাগ বাস্তবায়নে আরো একবছর সময় লাগবে বলে মনে করেন তিনি। 

প্রকল্প পরিচালক ডা. নিতাই চন্দ্র দাসের কাছে এসব অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, সুফলভোগির তালিকা অনেক আগেই হয়েছে। খাদ্য, ঔষধ ও শেড দিতে দেরি হলেও সবাই পাবে। তিনি আরো জানান আপনারা সাংবাদিকরা এসব নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই। 

বিশেষ অগ্রাধিকার প্রকল্পের অধীনে ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘উপকূলীয় চরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প’ গ্রহণ করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। এর আওতায় লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলায় ৭টি ইউনিয়ন রয়েছে। ২০১৯ সালের শেষ দিকে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করে প্রকল্প পরিচালক ডা. নিতাই চন্দ্র দাসের তত্ত্ব্বাধানে। 

অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রকল্পটির শুরুতেই প্রকল্প পরিচালকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে। উপকূলের কমলনগর উপজেলার সাড়ে ৩ হাজার লোক এ প্রকল্পের সুবিধাভোগী। এখন পর্যন্ত ৬০ ভাগ সুবিধাভোগীর মধ্যে হাঁস, মুরগি, ভেঁড়া, শেড ও খাবার সরবরাহ করা হয়। ২০২১ সালের জুনে এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে। 

আমারসংবাদ/কেএস