Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

বাঁশি বাজালে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি বসে মাহাতাবের শরীরে

কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি 

জুন ১০, ২০২১, ০৯:১৫ এএম


বাঁশি বাজালে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি বসে মাহাতাবের শরীরে

হ্যামিলিনের গল্প শুনিয়ে মা, দাদীরা ছোট বেলায় বাচ্চাদের ঘুম পড়ানোর গল্প আমরা সকলেই জানি। এ গল্প আজ সত্য হয়ে মানুষের মুখে মুখে। নাম তার মাহাতাব। ছোট বেলা থেকেই মধু সংগ্রহ করা ছিল তার নিত্য দিনের শখ। বন্ধুরা যখন খেলা করতে যেত, সেই সময় সে মধু সংগ্রহে থাকতো ব্যাস্ত। 

ওই রুপ কথা আজ সত্যে পরিণত হয়েছে মৌমাছি মাহাতাবের জীবন কর্মকাণ্ডে। যশোরের কেশবপুর উপজেলার ১১নং হাসানপুর ইউনিয়নের মোমিনপুর গ্রামের মৃত কালাচান মোড়লের ছেলে মাহাতাব আলি। বারো বছর বয়স থেকে মধু সংগ্রহ করা ছিলো তার এক প্রকার শখ। সেই সখ আজ তার জীবন ধারনের এক মাত্র আয়ের উৎস। মাহাতাব বাগানে যেয়ে বিভিন্ন কৌশলে মৌমাছির চাক থেকে মধু সংগ্রহ করতো। কখনও কখনও হাতে থাকা টিনের বালতি শব্দ করে মৌমাছি উড়িয়ে দিয়ে মধু সংগ্রহ করতো। কিন্তু বড় বিষয় হলো কোন মৌমাছি তাকে কামড়াতো না। 

এভাবে বছরের পর বছর ধরে মধু সংগ্রহ করতে করতে শব্দেরও পরিবর্তন ঘটালেন তিনি। এক পর্য্যায়ে টিনের থালা দিয়ে টুংটাং শব্দ করতেই মৌমাছি দল বেধে উড়ে যেত আবার কিছু মৌমাছি এ শব্দ শুনে তার শরিরে এসে বসতো। ভাবতে থাকেন তিনি হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালার কথা। যে ভাবা সেই কাজ বালতি থালা বাদ দিয়ে সম্প্রতি শুরু করেন বাঁশি বাজানো। ওই বাঁশিতে এক মধুর সুর তুলেতে থাকেন। এ যেন যাদুকারি এক মধুর সূর। এ সুরের শব্দে মৌমাছি তার শরীরের উপর বসতে থাকে। কৌশলগত এ সুরে হাজার হাজার মৌমাছি বিভোর হয়ে উড়ে এসে তার শরিরের উপর তৈরী করে মৌচাক, বাঁশি বাজানো বন্ধ করলে তারা আবার উড়ে যায় বাগানে। এ দৃশ্য দেখার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ তার বাড়িতে ভীড় জমায়। এ যেন সেই স্বপ্নের কাহিনী হ্যামিলিনের বাঁশি ওয়ালা ৭শ’বছর পরে ফিরে এসেছে মাহাতাব আলির রুপ নিয়ে।  

মৌমাছি তার শরিরে যখন বসে সে সময় তাকে হুল ফুটায় কি না জানতে চাইলে মাহাতাব বলেন, মৌমাছির সাথে তার এমন সক্ষতা গড়ে উঠেছে যে কোন প্রকার হুল ফুটায় না। তিনি গর্বের সাথে বলেন, এটা তার মৌমাছির সাথে ভালোবাসার কারণেই হয়েছে। পাঁচ মিনিট বাঁশি বাজালে হাজার হাজার মৌমাছি জড়ো করতে পারেন তিনি। কাজটি যদিও ঝুকি রয়েছে তারপরও এটা আমার অভ্যাস হওয়ায় কোন সমস্যা হয় না।

মধু সংগ্রহ করে তার এক ছেলে এক মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে সুখেই দিনাতিপাত করছেন। মানুষের কাছে তিনি মৌমাছি মাহাতাব হয়ে বেচেঁ থাকতে চান। 

আমারসংবাদ/কেএস