Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

পায়ে হেটে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে বের হলেন লাশ হয়ে!

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি

জুন ১৭, ২০২১, ০৯:২০ এএম


পায়ে হেটে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে বের হলেন লাশ হয়ে!

মকবুল হোসেন (৫০) নামের এক ব্যক্তি ভুল চিকিৎসায় মারা গেছেন। গুরুদাসপুর পৌর সদরের হাজেরা ক্লিনিকে বুধবার (১৬ জুন) রাত আটটার দিকে ওই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি গোপন রাখতে রোগীর স্বজনদের ভয়-ভীতি দেখানোর অভিযোগও পাওয়া গেছে। 

বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) সকালে লাশটি দাফন করা হয়েছে। নিহত মকবুল হোসেন উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের বিলকাঠোর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি হার্নিয়া অপারেশনের জন্য বুধবার বিকালে ওই ক্লিনিকে ভর্তি হয়ে ছিলেন। 

চিকিৎসক আমিনুল ইসলাম সোহেল ও তার ছোট ভাই আমিরুল ইসলাম সাগর ওই ক্লিনিকটি পরিচালনা করেন। আমিনুল ইসলাম সোহেল তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার হলেও তিনি নিয়োমিত বিকাল থেকে গভির রাত পর্যন্ত হাজেরা ক্লিনিকে রোগি দেখেন। সপ্তাহখানেক আগেও ওই ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটারেই এক প্রসূতি মৃত্যু ঘটনা ঘটেছে।

নিহত মকবুল হোসেনের স্ত্রী লাইলি বেগম বিলাপ করতে করতে বলেন, হার্নিয়া ছাড়া তার স্বামীর কোন রোগ বালাই ছিলনা। অপারেশনের জন্য বুধবার সকাল ১০টার দিকে তারা হাজেরা ক্লিনিকে আসেন। কিন্তু চিকিৎসক না থাকায় বিকাল পর্যন্ত ক্লিনিকেই অপেক্ষা করতে হয়। একপর্যায়ে চিকিৎসক আমিনুল ইসলাম সোহেল তার স্বামীকে ভর্তি করিয়ে অপারেশনের প্রসস্তুতি নেন। এসময় স্যালাইন ও ইনজেকশান দেয়া হয়।

মকবুলের মেয়ে রোকসানা আক্তার জানান, রাত আটটার দিকে তার বাবাকে অপারেশান থিয়েটারে নিয়ে কোমড়ে ইনজেকশান পুষ করা হয়। তখন থেকেই তার বাবা চিকিৎকার করতে করতে নিস্তেজ হয়ে পরেন। তরিঘড়ি করে বেডে নিয়ে ক্লিনিকের লোকজন বুকের ওপর উপর্যপুরি চাপ দিচ্ছিলেন। একপর্যায়ে ক্লিনিকের ছাড়পত্র ছাড়াই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ এ্যাম্বুলেন্স ডেকে রাজশাহী পাঠান।

তিনি বলেন, তার বাবাকে রাজশাহী নেওয়ার জন্য যে এ্যাম্বুলেন্সটি ক্লিনিকের লোকজন ঠিক করেছিলেন, সেই এ্যাম্বুলেন্সটি তার বাবাকে নিয়ে রাজশাহী মেডিকেলে যায়নি। এ্যাম্বুলেন্সের চালক শফিউল আলম পথেই ভয়-ভীতি দেখিয়ে ফেরত নিয়ে আসেন। ওই চালকই বলেন তার বাবা মারা গেছেন। 

তবে হাজেরা ক্লিনিকের চিকিৎসক মো. আমিনুল ইসলাম সোহেল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হলেও এ্যনেসথেসিয়া পুষ করা হয়নি। তাড়াছা এ্যনেসথেসিয়ার ওপর বিশেষ প্রশক্ষণ থাকায় বিভিন্ন রোগীকে তিনিই এ্যনেসথেসিয়া পুষ করে থাকেন। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেন বলেন, অপচিকিৎসায় মৃত্যুর বিষয় নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে ভ্রম্যমান আদালত পরিচালনা করা হবে।

গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, হাজেরা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে একাধীক রোগী মৃত্যুর অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া চিকিৎসক আমিনুল ইসলাম একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার হয়ে হাজেরা ক্লিনিকে নিয়োমিত চিকিৎসা দিতে পারেন না। বিষয়টি নিয়ে সিভিল সার্জনের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আমারসংবাদ/এআই