Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

বাঁশখালীতে নির্মাণ কাজ হওয়ার আগেই ‘মুজিব কিল্লার’ ফাটল

জসীম উদ্দীন, বাঁশখালী প্রতিনিধি

জুন ১৭, ২০২১, ১০:২৫ এএম


বাঁশখালীতে নির্মাণ কাজ  হওয়ার আগেই  ‘মুজিব কিল্লার’ ফাটল

চট্টগ্রাম বাঁশখালীর ছনুয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বালুখালী এলাকায় নির্মিতব্য ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রের (মুজিব কিল্লা) কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে করে জনসাধারণের মাঝে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। 

জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অধীনে ২০২০ সালের ১৯ আগস্ট ছনুয়া টেক আপদকালীন ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র (মুজিব কিল্লা) নির্মাণ কাজ শুরু হয়। আর এ ভবনের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি সাত লাখ ২৫ হাজার টাকা। নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায় জয়নাল আবেদীন কাজলের মালিকানাধীন 'কাজল এন্ড ব্রাদার্স' নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। মুজিব বর্ষের উপহার স্বরুপ সারাদেশের ন্যায় এই (মুজিব কিল্লা) নির্মিত হচ্ছে বলে জানা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ২০২০-২১ অর্থ বছরে বরাদ্দ পাওয়া এ প্রকল্পটি নির্মাণ কাজ চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা থাকলেও ঠিকাদারের গাফলতির কারণে তা শেষ হয়নি। প্রকল্পে মাটির কাজ, স্লোপ প্রোটেকশন, ক্যাটল শেড সহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ করা হলেও তা অত্যন্ত নিম্নমানের। 

ফলে স্লোপ প্রোটেকশন ও ক্যাটল শেডে ফাটল দেখা দিয়েছে। ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা প্রকল্পটি পরিদর্শনে গেলে আগে ভাগেই ফাটলগুলো সিমেন্ট দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়।

স্থানীয়রা দুদকে অভিযোগ দিয়ে বলেন, এ প্রকল্পের ঠিকাদার মেসার্স কাজল এন্ড ব্রাদার্সের সত্ত্বাধিকারী কাজল যেনতেনভাবে কাজ করে গেলেও; তার অনিয়ম নিয়ে কোনরূপ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। 

এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মাধ্যমে এসব প্রকল্পের কিরূপ অনিয়ম হয়েছে, তা তদন্ত করার দাবি জানান এলাকাবাসীরা। নির্মাণাধীন আশ্রয় কেন্দ্রের ভবনের তলায় যথাযথভাবে মাটি ভরাট করা হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা এমরানুল হক বলেন, 'আমাদের ১২০ টা পরিবারের চলাচলের রাস্তা কেটে (মুজিব কিল্লা) ভরাটের কাজে মাটি ব্যবহার করায় রাস্তা ধ্বসে গেছে। রাস্তার গোড়া থেকে মাটি নেয়ার কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কাজ শুরুর কিছুদিন পর নিম্নমানের কাজের অভিযোগে স্থানীয়দের প্রতিরোধে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সঠিকভাবে কাজ করার শর্তে পুনরায় কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ছাদ ঢালাই দেয় ২ ইঞ্চি। 

বিষয়টি আমি স্থানীয় মেম্বার রেজাউল করিমকে অবগত করার পর তিনি সরেজমিনে যান। এরপর উনার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ৫ ইঞ্চি ঢালাই দিতে বাধ্য হয় ঠিকাদার। ভবনটি টেকসই হবে বলে মনে হচ্ছে না। বর্তমানে কাজ শেষ না হওয়ার আগেই ফাটল দেখা দিয়েছে। মুজিব কিল্লা মূল অংশের পাইলিং ঠিক থাকলেও পেছনের অংশে ঠিকভাবে পাইলিং না করার কারণে দেওয়াল ধেবে গিয়ে ফাটল দেখা দিয়েছে।'

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন কাজল বলেন, আমি কেন ওঠার কাজের দায়িত্ব পাবো? আমি কি কোন সরকারি কর্মকর্তা? বলে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাঈদুজ্জামান চৌধুরী তিনি বলেন, ওখানে সবকিছু ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের। উনাদের ঠিকাদার, ইঞ্জিনিয়ার সবকিছু ঢাকা থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের কোন হাত নেই।'

এ বিষয়ে জানার জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আবুল কালাম মিয়াজীর অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায় নি। সেই সাথে ওনার ফোন নাম্বারে একাধিক বার কল দেয়া হলে ও পাওয়া যায় নি। ওনার অফিসে আশা কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানায় তিনি কয়েক দিন যাবৎ অফিসে আসতেছে না। এবং কেন আসতেছে না এটার কোন কারণ ও বলে যাই নি। ওনার অফিসিয়াল কিংবা ব্যক্তিগত ফোন নাম্বার গুলো বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।

আমারসংবাদ/এআই