Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

রঙিন স্বপ্ন পূরণের অপেক্ষায় বালিয়াকান্দির ৭০ গৃহহীন পরিবার 

বালিয়াকান্দি (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি

জুন ১৮, ২০২১, ১১:৩৫ এএম


রঙিন স্বপ্ন পূরণের অপেক্ষায় বালিয়াকান্দির ৭০ গৃহহীন পরিবার 

রঙিন স্বপ্ন পূরণের অপেক্ষায় রয়েছে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার ৭০ গৃহহীন হতদরিদ্র পরিবার। সরকারের আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় ‘মুজিব শর্তবষে থাকবে না কোন গৃহহীন’ কর্মসূচিতে দ্বিতীয় পর্যায়ে এসব ঘর পাবেন তারা। আগামী ২০ জুন সারা দেশে একযোগে ঘরগুলো হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্তী শেখ হাসিনা। অধিকাংশ ঘরের কাজ ইতোমধ্যে প্রায় শেষের দিকে। আনুষ্ঠানিক হস্তান্তর হলেই স্বপ্নের ঘরে উঠবেন গৃহহীন পরিবারগুলো। 

বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারের আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় দ্বিতীয় পর্যায়ে বালিয়াকান্দি উপজেলায় গৃহহীনদের জন্য ৭০টি ঘর প্রস্তুত করা হচ্ছে। ভূমি ও গৃহহীন প্রতিটি পরিবার ২শতাংশ জমিসহ ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২কক্ষ বিশিষ্ট একটি আধাপাকা ঘর পাবেন। ঘরটিতে একটি রান্নাঘর, টয়লেট ও সামনে খোলা বারান্দা থাকবে। 

এছাড়াও বিশুদ্ধ খাবার পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা থাকবে।  ঘরের পাশে সবজি চাষসহ আয়বর্ধক নানা সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থাও রয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘরগুলোর তদারকি করছেন। ইতোমধ্যে প্রথম পর্যায়ে বালিয়াকান্দির ৭টি ইউনিয়নে ৭০টি গৃহহীন পরিবারকে বুঝে দেয়া হয়েছে। 

একাধিক গৃহহীন ঘর পাওয়া ব্যক্তিরা জানান, উপজেলা থেকে জানতে পেরেছি আগামী ২০ তারিখ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা থেকে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হন্তান্তরের পর উপজেলা থেকে আমাদের কাছে ঘরের চাবি দেয়া হবে। ঘর পেয়ে আমরা খুবই আনন্দিত। আমরা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি কোনদিন এরকম ঘরে বাস করতে পারবো। এসময় তারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। 

ঘর পাওয়া নারুয়া ইউনিয়নের বড় ঘিকমলা গ্রামের গোলাপী বেগম বলেন, টিনের চালা পাটকাঠির বেড়া দেয়া ছাপড়ায় বাস করতাম। নুন আনতে পান্তা ফুরায় সেখানে ইটের ঘর করবো কিভাবে। কখনো কল্পনাও করিনি নিজেদের ঘর হবে, তাও আবার ইটের ঘর। সরকার প্রধানকে আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখুক। শেখের বেটি আমাদের নিজের জমি ঘর ও জমি দিয়েছে। আমরা এখন অনেক খুশি।

বহরপুর ইউনিয়নের বিধবা ভানু বিবি বলেন, স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে নিয়ে কোনমতে ছাপড়ায় বাস করতাম। ইটের ঘরে কোনদিন বাস করবো এটা স্বপ্নেও ভাবিনি। ইউএনও’র কাছে আমার সমস্যার কথা শুনে আমার বাড়ীতে এসে আমার অবস্থা দেখে ঘরের ব্যবস্থা করেছেন। 

তিনি বলেন, শেখের বেটির (বঙ্গবন্ধু কন্যা) দেয়া উপহার আমার বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখিয়েছে, শেখের বেটির জন্য আমি আজীবন দোয়া করবো। আল্লাহ যেন ওনাকে হাজার বছর বাঁচিয়ে রাখেন। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আম্বিয়া সুলতানা বলেন, মুজিব শতবর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহহীনদের জন্য উপহার স্বরুপ আশ্রয়স্থল করে দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে পেরে বালিয়াকান্দি প্রশাসন গর্বিত। ইতোমধ্যে ঘরের কাজ শেষ, বৃষ্টির কারণে রঙের কাজ শেষ হতে সময় লাগছে। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশনায় আমরা অধিকতর গুরুত্বের সাথে কাজের মানগুলো তদারকি করেছি। ঘরের কাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মাননীয় সংসদ সদস্য মোঃ জিল্লুল হাকিম, উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কালাম আজাদ, সহকারী কমিশনার ভূমি, উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তর, পিআইও, আশ্রয়ন বিষয়ক উপজেলার টাস্কফোর্স, ইউপি চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পর্যায় নিয়োজিত কর্মকর্তা, ইউনিয়ন ভূমি অফিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। আগামী রোববার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিক হস্তান্তরের পর বালিয়াকান্দি প্রশাসন হতদরিদ্র পরিবারকে তাদের ঘর বুঝে দিতে পারবে যা আমাদের জন্য খুবই আনন্দের। 

বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আবুল কালাম আজাদ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করে। আশ্রয়ন প্রকল্পর মাধ্যমে হতদরিদ্র গৃহহীনদের জন্য যা করেছে সেটি সারা বিশ্বের জন্য মডেল। বঙ্গবন্ধু যেভাবে দেশের মানুষের কল্যানে কাজ করেছেন, তার কন্যা আজ সেভাবেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। দ্বিতীয়বারের মতো আগামী ২০ তারিখে অত্র উপজেলার ৭০টি গৃহহীন পরিবারের কাছে ঘরগুলো হস্তান্তর করতে পারবো এটিও আমাদের জন্য গর্ব করার মতো।

আমারসংবাদ/কেএস