ওসমানীনগর (সিলেট) প্রতিনিধি
জুন ২০, ২০২১, ০৩:১০ পিএম
সিলেটের ওসমানীনগরে গৃহকর্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা তপতী দে’কে (৫৫) নৃশংসভাবে হত্যার পর খুনি বাড়ির কাজের ছেলে গৌর চান বিশ্বাস ওরফে গৌরাঙ্গ (২৪) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
শনিবার (১৯ জুন) রাতে উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের সোয়ারগাঁও খয়েরপুর গ্রামে এই নির্মম ঘটনাটি ঘটে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মধ্যরাতে বসত ঘরের জানালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে লাশ দুটি উদ্ধার করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম। তপতি দে স্থানীয় সোয়ারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ও উপ-সহকারি মেডিকেল অফিসার ডা. বিজয় ভূষণের স্ত্রী এবং খুনি গৌর চান বিশ্বাস বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর ইউনিয়নের মোহন লাল বিশ্বাসের ছেলে।
জানা যায়, প্রতিদিনের মতো তপতী দের ডাক্তার স্বামী ছেলে নিজ নিজ কর্মস্থলে চলে যান। রাত আটটার দিকে ছেলে ডা. বিপ্লব চেম্বার থেকে বাড়ি ফিরে কলাপসিপল গেট তালাবদ্ধসহ বাড়ির সব দরজা জানালা বন্ধ পেয়ে মা ও কাজের ছেলেকে ডাকাডাকি এবং ফোন করে কোন সাড়া না পেয়ে অন্যত্র খোঁজাখুঁজি করেন। কিন্তু কোথাও না পেয়ে তার বাবা, বোন, এবং মামাসহ অন্যান্যদের মুঠোফোনে বিষয়টি অবগত করেন।
একপর্যায়ে বিষয়টি পুলিশকে জানালে ওসমানীনগর থানার ওসি শ্যামল বণিকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্টীলের জানালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে রক্তাক্ত অবস্থায় তপতির দে’র মৃত দেহ ঘরের মেঝেতে এবং কাজের ছেলে গৌর চানের লাশ তীরের সাথে গামছা দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়।
খবর পেয়ে গভীর রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম ও ওসমানীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গৌর চান এবং তার ছোট ভাই শ্রী চান প্রায় ৬-৭ বছর ধরে ডা. বিজয় ভুষণের বাড়িতে কাজ করছে। বর্তমানে শ্রী চান বিজয় ভুষণের ডা. মেয়ের সিলেট শহরস্থ স্বামীর বাসায় কাজ করছে। তপতির দের সাথে প্রায়ই কাজ কর্ম এবং খাবার দাবার নিয়ে গৌর চান ঝগড়ায় লিপ্ত হতো।
ডা. তন্ময় দে বিপ্লব জানান, রাতে বাসায় ফিরে ডাকাডাকি এবং ফোন করে মা এবং কাজের ছেলের কোন সাড়া না পেয়ে আশপাশের বাড়িতে খোঁজাখুজি করেও কোথাও পাইনি। পুলিশ আসার পর জানালা ভেঙে ঘরে ঢুকার পর মায়ের রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়।
সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন আমার সংবাদকে বলেন, ঘরের ভেতর থেকে সবগুলো দরজা জানালা বন্ধ ছিল। আমাদের কাছে বিষয়টি পরিস্কার যে, তপতি দে’কে হত্যার পর খুনি গৌর চান নিজেই আত্মহত্যা করেছে। তপতি দে’র মৃত দেহের পাশে একটি দা এবং একটি চাকু রাখা ছিল ধারণা করা হচ্ছে এগুলো দিয়েই তার গলা এবং পিটে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে।
আমারসংবাদ/কেএস