আব্দুল হালিম, জৈন্তাপুর (সিলেট)
জুন ২৩, ২০২১, ০৫:৫০ এএম
ইতিহাস-ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ জৈন্তাপুর উপজেলা। বহু খণিজ সম্পদ আর প্রাকৃতিক দৃষ্টিনন্দন স্থানগুলো ছাড়াও জৈন্তাপুরে রয়েছে শত শত বছরের পুরনো ঐতিহাসিক নিদর্শণ। যা এখন এক শ্রেণীর স্বার্থপর মানুষের কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে। সংস্কার ও রক্ষাণাবেক্ষণের অভাবে যেমন বিনষ্ট হচ্ছে পুরাকীর্তি একইভাবে বিশাল আকৃতির পাথরগুলো চুরি করে বিক্রিরও হিড়িক পড়েছে।
সিলেটের জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার একাংশ নিয়ে ছিল এক সময়ের স্বাধীন জৈন্তিয়া রাজ্য। একাধারে ২৩ জন রাজার রাজত্ব করা এই রাজ্যের রাজধানী ছিল জৈন্তাপুর উপজেলা সদরে। রাজ প্রাসাদ রাজবাড়ী ছাড়াও বহু স্থাপনা কালের স্বাক্ষী হয়ে পড়ে আছে যেখানে-সেখানে। মন্দির সহ ছোট-বড় অনেকগুলো পাথর রয়েছে, যা শক্তিশালি যন্ত্রধানব ছাড়া একটুও নাড়াছাড়া করা অসম্ভব।
সম্প্রতি একটি চত্রু বিভিন্ন স্থানের ছোট আকৃতির পাথরগুলো কেটে গৃহস্থালী পণ্য মসলা বাটার পাটা তৈরী করছে। উপজেলা সদরের তোয়াসিহাটিতে রাজকীয় আমলের একটি পানির কূপ রয়েছে। এই কূপের চারিদিকে সুরক্ষার জন্য একরকম প্লেটের মত পাথর দিয়ে আচ্ছদিত করা ছিল।
কিন্তু পার্শ্ববর্তী বাসিন্দা বিলট খাসিয়া, আব্দুল্লাহ, খোকন খাসিয়া দিয়ে পাটা তৈরী করেছেন এবং বিলট খাসিয়ার মাধ্যমে তৈরীকৃত অনেক পাটা মৌলভীবাজারের কুলাউড়াতে পাচার করা হয়েছে বলে একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। শুধু তাই নয় উপজেলা সদরের আশপাশের অনেক জায়গায় এরকম পাথর এখন মানুষের স্বার্থসিদ্ধির থাবায় বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
রাজকীয় এই স্থাপনাগুলো সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আওতায় থাকলে তা শুধু কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ। কোনোরকম সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ত্রুমশ হারিয়ে যেতে পারে জৈন্তিয়া রাজ্যের ইতিহাস-ঐতিহ্য।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুসরাত আজমেরী হক’ সাথে আলাপাকালে তিনি বলেন, এই পূরাকীর্তি সংরক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। কিন্তু জৈন্তাপুরে এখনো কোন তত্ত্বাবধায়ক না থাকায় সমস্যাগুলো হচ্ছে। পাথর চুরির বিষয়ে তিনি কঠোর ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান।
আমারসংবাদ/এআই