Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

লকডাউন-করোনা: কোরবানির পশু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় খামারিরা

রংপুর প্রতিনিধি

জুন ৩০, ২০২১, ১২:৫৫ পিএম


লকডাউন-করোনা: কোরবানির পশু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় খামারিরা

কোরবানির আগে লকডাউন আর করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় কোরবানির পশু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন রংপুর জেলার সাড়ে ১৮ হাজার  ছোট-বড় খামারের মালিকেরা। সারাবছর খামারে পরিশ্রম ও বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করার পর এখন পশুর বাজার ও দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তারা। 
   
রংপুর বদরগঞ্জ লালদিঘি এলাকায় বিশাল গরু ও ছাগলের খামার গড়ে তুলেছেন শরিফুল ইসলাম। তিনি স্থানীয় একটি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক। এবার কোরবানিকে সামনে রেখে লাভের আশায় তারা ৫৫টি গরু ও ২৫টি ছাগল প্রস্তুত করেছেন। বিনিয়োগও করেছে প্রচুর অর্থ। 

কিন্তু করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় এবং লকডাউন কারণে এখন গরু ও ছাগলের বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে। লকডাউন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে পশুর দাম কমতে শুরু করেছে। 

তিনি জানান, যদি কোরবানিতে পশুর হাট না বসে তাহলে ন্যায্য দাম তারা পাবেন না। এতে আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিতে পড়তে হবে।
একই কথা জানান রংপুর মহানগরীর বড়বাড়ী এলাকার প্রান্তিক খামার মালিক নুরুজ্জামান মিয়া। 

তিনি জানান, কোরবানি সামনে রেখে পরিবারের সর্বস্ব ব্যয় করে তিনি পাঁচটি গরু মোটাতাজা করেছেন। নিজে ঠিকমতো না খেয়ে গরুর পেছনে ব্যয় করেছেন অর্থ ও শ্রম দিয়েছেন। এখন দেশের যে অবস্থা, তাতে সঠিক দাম না পেলে পথে বসতে হবে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি। 

শুধু নুরুজ্জামান বা শরিফুল ইসলাম নয়, একই রকম শঙ্কা প্রকাশ করেছেন রংপুর জেলার সাড়ে ১৮ হাজার খামার মালিক।

এ বিষয়ে রংপুর জেলা ডেইরি ফার্ম এসোসিয়েশনের সভাপতি লতিফুর রহমান মিলন জানান, মহামারি করোনার কারণে অনেক ছোট খামার গুলো বন্ধ হয়ে গেছে। তারা পুঁজি হারিয়ে পথে বসেছেন। পশু খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও ওষুধের দাম বৃদ্ধিও কারণে খামারিরা হিমশিম খাচ্ছেন। তিনি এ বিষয়ে প্রতিটি উপজেলায় বাজার মনিটরিং কমিটি গঠনসহ তদারকির দাবি জানান।

রংপুর জেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জেলা সিরাজুল ইসলাম জানান, গত বছরও কোরবানির সময় করোনা পরিস্থিতি ছিল। করোনা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করেই গত বছর জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের উদ্যোগে অনলাইনে পশু বেচাকেনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।   

এজন্য খোলা হয় ‘অনলাইন পশুর হাট’ নামের একটি ফেসবুক আইডি। এর মাধ্যমে গত বছর কোরবানিতে ৩ কোটি ৪৬ লাখ ৭২ হাজার ৫০০ টাকার পশু বেচাকেনা করা হয়েছে। 

এবারও এ পরিস্থিতিতে অনলাইনের মাধ্যমে আরো ব্যাপক আকারে কোরবানির পশু বেচাকেনা হবে এবং এতে খামার মালিকরা তাদের প্রস্তুত করা পশুর ন্যায্য দাম পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি আরো জানান, কোরবানি সামনে রেখে এবার  রংপুর জেলার ছোট-বড় মিলিয়ে ৩ লাখ হাজার ৯৬ হাজার ৭৯৭টি কোরবানির পশু প্রস্তুত হয়েছে। এর মধ্যে ২ লাখ ৪৬ হাজার ২৭০টি গরু,মহিষ ষাড় প্রস্তুত করা হয়েছে।

১ লাখ ৫০ হজার হাজার ৫২৭টি ভেড়া ও ছাগল প্রস্তুত করা হয়েছে। আসন্ন কোরবানিতে রংপুর জেলার চাহিদা রয়েছে ২ লাখ ৪৪ হাজার ২৬৮টি পশু। জেলার চাহিদা মিটিয়ে ৫৪ হাজার ৫শ’ ১৫টি পশু দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হবে বলেও জানান তিনি। 

আমারসংবাদ/এআই