Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

মা হারা শিশুর পাশে দাঁড়ালেন ইউএনও নিলুফা আক্তার

শ্রীবরদী (শেরপুর) প্রতিনিধি

জুলাই ৮, ২০২১, ০১:২০ পিএম


মা হারা শিশুর পাশে দাঁড়ালেন ইউএনও নিলুফা আক্তার

শিশু সানজিদা আক্তার (৩) ও শান্তা আক্তার (১১) কে নিয়ে শেরপুরের শ্রীবরদীতে অতিকষ্টে দিনাতিপাত করছে তাদের পিতা শহীদুল ইসলাম। শিশু দুইটির মা হঠাৎ আড়াই বছর আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। 

এরপর থেকে কুড়িকাহনিয়া বাজারে ইউনিয়ন কৃষি অফিসের পরিত্যক্ত বিল্ডিং এর একটি রুমে শহীদুল তার দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে জীবন যাপন করছেন। শহীদুল পেশায় হোটেল শ্রমিক। লকডাউনের কারণে হোটেল বন্ধ থাকায় অনেক সময় না খেয়ে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে তাদের। 

গতকয়েক দিন আগে কুড়িকাহনিয়া বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় তাদেরকে দেখতে পান শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা আক্তার। ভ্রাম্যমাণ আদালতের গাড়ী দেখে সবাই চলে গেলেও তারা সেখানেই বসে আছে। 

এসময় ইউএনও গিয়ে তাদের সাথে কথা বললে দুরাবস্থার কথা জানতে পারেন। পরে ৮ জুলাই তাদের জন্য খাদ্য সামগ্রী, পোশাক ও আর্থিক সহায়তা নিয়ে হাজির হোন ইউএনও নিলুফা আক্তার। 

সরেজমিনে জানা যায়, শহীদুল ইসলামের স্ত্রী সুবর্ণা আক্তার কয়েক বছর আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এরপর তাদের দুই সন্তানকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে শারীরিকভাবে অসুস্থ শহীদুল। শহীদুলের মায়ের একমাত্র ভিটেবাড়িতে একটি টিনের ঘর আছে। 

কিন্তু সেটি বসবাসের অনুপযোগি হওয়া কুড়িকাহনিয়া বাজারে কৃষি অফিসের পরিত্যক্ত বিল্ডিং এ দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে বসবাস করে। কাজের জন্য হোটেলে গেলে পরিবারের অন্য কোন সদস্য না থাকাই দুই বোন বাড়িতেই থাকে। কাজ শেষে বাড়িতে ফিরে আবার তাদের জন্য রান্না করে শহীদুল। এখন বাবা-মা দুজনেরই দায়িত্ব পালন করছেন পিতা শহীদুল। 

বিষয়টি জানতে পেরে দ্রুত সহযোগিতার ব্যবস্থা করেন ইউএনও নিলুফা আক্তার। ৮ জুলাই দুপুরে খাদ্য সামগ্রী, নগদ টাকা ও শিশুদের জন্য ঈদের পোশাক নিয়ে হাজির হোন ইউএনও নিলুফা আক্তার। ইউএনও’কে দেখে শহীদুল ও তার দুই সন্তান খুব খুশি। স্থানীয় লোকজন সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন ইউএনও’র মানবিক ও  দৃষ্টান্তমূলক কাজের প্রশংসা করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন কুড়িকাহনীয়া ইউপি চেয়ারম্যান নূরে আলম ও গণমাধ্যমকর্মীরা। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা আক্তার বলেন, লকডাউনে তদারকি করতে গিয়ে জানতে পারি মা হারা দুই শিশু সন্তান নিয়ে খুবই অসহায় ভাবে দিন কাটছে শহীদুলের। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিত্যক্ত ভবনের একটি রুমে বসবাস করতেছে। 

প্রাথমিকভাবে দ্রুত সময়ের মধ্যে নগদ টাকা, খাদ্যসামগ্রী ও ঈদের পোশাক দিয়েছি। পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে তাদের ঘরের জন্য টিন, টাকা সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। 

তিনি আরো বলেন, মাতৃহারা শিশু পাশে দাঁড়াতে পেরে খুবই আনন্দ লাগছে। ভবিষ্যতেও ছিন্নমূল, অসহায় পরিবারের মাঝে এই ধরনের সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো।

আমারসংবাদ/এআই