Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

লোহাগড়ায় শিশুদের উপবৃত্তির টাকা ‘নগদ এজেন্ট’র পকেটে

লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি

জুলাই ৮, ২০২১, ০১:৫৫ পিএম


 লোহাগড়ায় শিশুদের উপবৃত্তির টাকা ‘নগদ এজেন্ট’র পকেটে

নড়াইলের লোহাগড়ায়  শিশুদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত করেছে ‘নগদ এজেন্ট’। বুধবার (৭ জুলাই) ভূক্তভোগীরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিকট এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। শালনগর  ইউনিয়নের ২০নং মাকড়াইল দক্ষিণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নগদ এজেন্ট ব্যবসায়ির  এ প্রতারণার স্বীকার হয়েছেন।

জানা গেছে, মাকড়াইল দক্ষিণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৮৮ জন শিক্ষার্থী উপবৃত্তির আওতায় রয়েছেন। প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা মাসে ৭৫ টাকা এবং প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পান মাসে ১৫০ টাকা। সাধারণত তিন-বা ছয় মাস  পরপর শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা দেয় সরকার। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মোবাইলের ‘নগদ’ একাউন্টে উপবৃত্তির টাকা আসে।

জানা গেছে, মোবাইল ব্যাংকিং সম্পর্কে অজ্ঞ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। টাকা উত্তোলনের গোপন পিন নামবারটি  তারা জানেন না। তাই অভিভাবকরা সহযোগিতা নেন ‘নগদ এজেন্টে’ ব্যবসায়ির। অভিভাবকরা  উপবৃত্তির টাকার ম্যাসেজ মোবাইলে পেলে টাকা উত্তোলন করতে ছুঁটে যান নিকটবর্তী ‘নগদ এজেন্ট’ এর দোকানে। আর নগদ এর এজেন্ট অভিভাবকদের সরলতার সুযোগ নিয়ে ইচ্ছামতো পিন কোড পরিবর্তন করে নিজেই টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করছেন।

ওই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র তামিম শেখের মা নাসরিন জানান,  নগদ এজেন্ট মোঃ ফয়জুর রহমান সিকদার আমার একাউন্ট থেকে ১৮শ টাকা তুলে নিয়েছে। 

শিশু শ্রেণির ছাত্রী রিমার মা সোনিয়া বলেন, ওই এজেন্ট ৪শ ৫০ টাকা আত্মসাৎ করবার পর গ্রাম্য মাতুব্বরদের চাপে পরের দিন টাকা ফেরত দিয়েছে। 

অভিভাবক আছিয়া, রিমা, সাবিনাসহ অন্তত ২০ জনে বুধবার বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে জানান, আমরা সরল বিশ্বাসে নগদ একাউন্টের টাকা উত্তোলন করতে মোঃ ফয়জুর রহমান সিকদার এর দোকানে যাই। আমাদের সকলের একাউন্টের গোপন পিন নম্বর ফয়জুর জানেন। এমনকি কখনোই আমাদের পিন নম্বর আমাদেরকে দেন না। তাই টাকা তুলতে গেলে তার কাছেই যেতে হয়। টাকার এসএমএস মোবাইলে ঢুকলে আমরা ফয়জুরের দোকানে যাই। ফয়জুর ১০/১২ মিনিট আমাদের মোবাইল ঘাটাঘাটি করার পরে জানায়  একাউন্টে টাকা আসেনি। আবার কখনো কখনো জানায় পিন নামবার না বলতে পারলে টাকা পাওয়া যাবে না। আমরা নিশ্চিত হয়েছি নগদ এ্যাপসের মাধ্যমে ফয়জুর আমাদের টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে।

ওই গ্রামের একাধিক লোক জানান, এ পর্যন্ত উপবৃত্তির অন্তত ৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে নগদ এজেন্ট ব্যবসায়ি ফয়জুর। ফয়জুরের নগদ একাউন্ট মোবাইল নং-০১৯৯৬-২৭৬৫৫২। বিভিন্ন কৌশলে শতকরা ২০ জন শিক্ষার্থীর সমুদয় টাকা দীর্ঘদিন যাবৎ আত্মসাত করে আসছেন  ‘নগদ এজেন্ট’ মোঃ ফয়জুর রহমান সিকদার।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হিমায়েত হোসেন এ বিষয়ে বলেন, অভিযোগ হাতে পাবার পর উপজেলা শিক্ষা অফিসারের দপ্তরে এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যবসায়ি ফয়জুর রহমান সিকদার নিজেকে মাকড়াইল ১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি পরিচয় দিয়ে বলেন, আমি কারো টাকা আত্মসাৎ করিনি। 

লোহাগড়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ সাইফুজ্জামান খান বলেন, অভিযোগ পেয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে  জানিয়েছি। শিক্ষার্থীদের আত্মসাত হওয়া টাকা উদ্ধার হবে। প্রয়োজনে এ বিষয়ে মামলা দায়ের করা হবে। 

আমারসংবাদ/কেএস