ঢাকা
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,
জুলাই ১০, ২০২১, ০৭:৪০ এএম
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে ১৫ জন ও উপসর্গ নিয়ে ৩ জন মারা গেছেন। অপরদিকে ৫ মাসের শিশু করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় কুষ্টিয়া জুড়ে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।
শনিবার (১০ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এম এ মোমেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে রোগী ভর্তির চাপ অব্যাহত রয়েছে। ২৫০ বেডের করোনা ডেডিকেটেড এই হাসপাতালটিতে এখন শয্যার চেয়ে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি।
শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ২৯২ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাই ১৯২ জন। আর উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১০০ জন।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাপস কুমার সরকার জানান, হাসপাতালে শয্যা না থাকায় এখন রোগীদের মেঝেতে ও করিডোরে রাখতে হচ্ছে। হাসপাতালে এখন করোনা রোগীদের ভিড়ে তিল ধারণের জায়গা নেই। প্রতিদিনই হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। করোনা আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীর চাপে হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৫৮৯টি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে ১৭৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ৮৮ ভাগ।
এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ১০ হাজার ৬০ জনে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৩৭৯ জন। মৃতের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩১০ জনে।
কুষ্টিয়ায় এবার ৫ মাসের শিশু করোনায় আক্রান্ত
ফুটফুটে চেহারা। বয়স মাত্র পাঁচ মাস। এই বয়সেই মায়ের কোলে চড়ে ছোট্ট আয়েশাকে আসতে হয়েছে করোনা পরীক্ষার নমুনা দিতে। অবশ্য ফলাফলে তার করোনা শনাক্ত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সকালে মেয়েকে কোলে নিয়ে সদর উপজেলা পরিষদে যান আয়েশার মা। সেখানে শিশুটির র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করোনা হয়। সেই রিপোর্টে তার করোনা পজিটিভ আসে।
এদিকে, আয়েশার দাদা-দাদি, চাচা, বাবা-মা, ভাইসহ পরিবারের ৭ জন সদস্য বর্তমানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। তারা বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক ইনজামুল হক জানান, শিশুটির শরীরে সামান্য জ্বর ছাড়া আর কোনো লক্ষণ নেই।
উপজেলায় প্রতিদিন র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করানো হচ্ছে। সেখানে ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সেলিনা আক্তার চম্পা। তিনি বলেন, রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর শিশুটিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
শনিবার কথা হয় আয়েশার চাচা হাফিজুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, বুধবার আমাদের পরিবারের ৭ সদস্যের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। পরে শিশু আয়েশারও রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তার এখন কোনো উপসর্গ নেই। জ্বর ছিল, তাও চলে গেছে। সে খাওয়া-দাওয়া করছে। বিছানায় শুয়ে খেলছে। পরিবারের অন্যরাও ভালো আছেন।কুষ্টিয়ায় সবচেয়ে কম বয়সী শিশুর করোনা আক্রান্তের ঘটনা এটি দ্বিতীয়।
এর আগে গত ২২ জুন প্রিন্স নামে দেড় মাস বয়সী এক শিশু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল। শিশুটি বর্তমানে সুস্থ রয়েছে।
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, গত মাসে দেড় মাস বয়সী এক শিশু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। শিশুটি সুস্থ হয়ে উঠেছে। এখন অনেক শিশুই করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছে। সময়মতো চিকিৎসা নিলে তারা সুস্থ্য হয়ে উঠছে।
তার ধারণা, আয়েশা নামের পাঁচ বছর বয়সী এই শিশুটি পরিবারের সংস্পর্শে এসে করোনা আক্রান্ত হয়েছে।
আমারসংবাদ/এআই
