Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

বয়স কম বিয়ে করতে পারবো না, অতঃপর কলেজ ছাত্রের বিরুদ্ধে মামলা

এস.আর শরিফুল ইসলাম রতন, লালমনিরহাট

জুলাই ১০, ২০২১, ১০:০৫ এএম


বয়স কম বিয়ে করতে পারবো না, অতঃপর কলেজ ছাত্রের বিরুদ্ধে মামলা

লালমনিরহাটে বিয়ে না করায় ইব্রাহিম (২০) নামে এক কলেজ ছাত্রের বিরুদ্ধে  নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গেলো ৬ জুলাই শরিফা খাতুন (১৬) নামে এক কিশোরী আদিতমারী থানায় উপস্থিত হয়ে ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করে। 

মামলার বিবরণে জানা যায়, লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের তালুক হরিদাস (গিলাবাড়ী) ৬ নং ওয়ার্ডের আলম মিয়ার মেয়ে শরিফা খাতুন (১৬) এর সঙ্গে সারপুকুর চওড়াটারী গ্রামের নুরজামাল এর পুত্র ইব্রাহিমের (২০) প্রায় চার আগে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সম্পর্কের এক পর্যায়ে ইব্রাহিম শরিফা ইব্রাহিমকে বিয়ে করতে বলে। তখন শরিফার প্রস্তাবে রাজি হয়নি ইব্রাহিম। এরপরই তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।  

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, আলমের মেয়ে শরিফা খাতুন (১৬), নুরজামালের পুত্র ইব্রাহিম (২০) এর সাথে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয় এবং কথাবার্তা হয়। এক পর্যায়ে শরিফা ইব্রাহিমকে বিয়ে করতে বলে। তখন ইব্রাহিম শরিফার কথা শুনে শরিফাকে বলে, আমি তোমার ভালো বন্ধু হতে পারি, আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারবো না। 

কারণ আমার এখনও বিয়ে করার বয়স হয় নাই। আমি এখনও ছাত্র। তাই আমার পক্ষে তোমাকে বিয়ে করা সম্ভব নয়। সেই কথা শুনে শরিফা ক্ষিপ্ত হয়ে নিজের ইচ্ছায় ইব্রাহিমের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের কথা বলার জন্য বাড়িতে ঢুকতে চায়। 

তখন এলাকাবাসী শরিফাকে ইব্রাহিমের বাসায় ঢুকতে না দিয়ে অত্র ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদকে খবর দেন। খবর পেয়ে ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ তাৎক্ষণিক ইব্রাহিমের বাড়িতে আসেন। 

এসে আশেপাশের লোকজনের মুখে সবকথা শুনে শরিফাকে বুঝিয়ে বলে, যে তোমার এখনও বিয়ের বয়স হয়নি। এই বয়সে এরকম পাগলামী করিও না। তখন উক্ত ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ শরিফাকে সঙ্গে নিয়ে তার বাসায় গিয়ে তার বাবা-মার হাতে তুলে দিয়ে আসেন। ইব্রাহিমের বাড়িতে ঢুকতে না পারায় শরিফার বাবা ক্ষোভে ও যন্ত্রণায় তার মেয়েকে দিয়ে আদিতমারী থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন। 

অভিযোগে শরিফা খাতুন বলেন, প্রায় ৪ মাস যাবৎ ধরে ইব্রাহিমের সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক। সম্পর্ক চলাকালীন গত ১৪ জুন রাত ৯টায় ইব্রাহিম আমাকে ফোন করে ডাকে, আমার বাড়ির ৩০০ গজ দূরে একটি পাট ক্ষেতে ডেকে নিয়ে গিয়ে আমার শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেয়।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মামলায় জয়নাল (৪৮), পিতা-কপুর ও হাবিবুর (৪০), পিতা-নুরুল হক এই দুইজনকে স্বাক্ষী করা হয়েছে। তারা বিভিন্ন মামলায় টাকার কারণে স্বাক্ষী হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ইব্রাহিম ঐদিন শরিফাকে যে ফোন নম্বর দিয়ে ডেকে ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে, সে নম্বরটি ইব্রাহিম ব্যবহার করেননি। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফাঁসানো হচ্ছে বলে ইব্রাহিমের বাবা কান্নাজড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের বলেন। 

উক্ত মামলার তদন্ত করার জন্য আদিতমারী থানার এস.আই কাওছার আহম্মেদ ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন এবং মামলাটির তদন্ত করে এসেছেন। 

এ ব্যাপারে আদিতমারী থানার ও.সি (তদন্ত) সাহেবের সঙ্গে ফোনে কথা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, শরিফার বাবা একটি অভিযোগ দিয়েছে এবং বলেছে যে তাকে উপরে উল্লেখিত মোবাইল নম্বর দিয়ে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে পাটক্ষেতে নিয়ে যায়। আমরা সেই নম্বরটি খতিয়ে দেখছি এবং মামলাটি পর্যালোচনা ও ভালো ভাবে তদন্ত করে দেখছি। তদন্ত করে অপরাধ প্রমাণিত হলে আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আমারসংবাদ/এআই