মোঃ আবদুস সালাম, গুরুদাসপুর (নাটের)
জুলাই ১১, ২০২১, ০৭:৫৫ এএম
পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে নাটোরের গুরুদাসপুরে কোরবানির জন্য ৩৩ মণ ওজনের একটি ষাঁড় প্রস্তুত করেছেন এক খামারি। আট ফুট লম্বা সাদা ও কালো রঙের ষাঁড়টির বয়স সাড়ে ৪ বছর। উপজেলার সবচেয়ে বড় এই ষাঁড়টির মালিক ভালোবেসে নাম রেখেছেন 'নাটোরের সাহেব বাবু '। ৩৩ মণ ওজনের নাটোরের সাহেব বাবুর দাম হাঁকাচ্ছেন ২০ লাখ টাকা।
প্রতিবছর কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ওজন এবং দামে আলোচনায় উঠে আসে বিভিন্ন বাহারি নাম ও জাতের ষাঁড়। এবার সেই তালিকায় উঠে এসেছে গুরুদাসপুরের 'নাটোরের সাহেব বাবু।
খমারির নাম মোঃআশরাফুল ইসলাম। পেশায় একজন কৃষক। কৃষি কাজের পাশাপাশি ২-৪ এরে গরু পালন করেন। এবারের ঈদকে সামনে রেখে তার বাড়িতে দুইটি ষাড় বিক্রির উপযোগি করে তৈরি করেছেন তিনি। তবে বাড়ির সবচেয়ে বড় গরুটির নাম নাটোরের সাহেব বাবু।
হলস্টাইন ফ্রিজিয়ান জাতের এ ষাঁড়টিকে গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের শাহীবাজার গ্রামের উদ্যোক্তা মোঃআশরাফুল ইসলাম ৫ বছর ধরে লালন-পালন করে আসছেন। তার বাড়িতেই সাহেব বাবুর জন্ম। তার বাড়িতে নাটোরের সাহেব বাবু ছাড়াও আসন্ন কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে আরো একটি ষাঁড়।
জানা যায়, শান্ত প্রকৃতির ওই সাদা কালো রঙের হলস্টাইন ফ্রিজিয়ান জাতের এ ষাঁড়টির উচ্চতা ছয় ফুট এবং লম্বায় সাড়ে আট ফুট। এটির ওজন ৩৩ মণ হবে বলে আশরাফুল ইসলাম দাবি করেন। প্রতিদিন সাহেব বাবুর খাদ্য তালিকায় ৩০ কেজি দানাদার খাবার ও সবুজ ঘাস থাকে। শুধু নাটোরের সাহেব বাবুকে দেখাশোনার জন্যই বাড়িতে রয়েছে আলাদা একজন লোক।
সাড়ে ৪ বছর বয়সী নাটোরের সাহেব বাবুকে আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে নাটোরের সাহেব বাবুর হাঁক-ডাক চারদিকে ছড়িয়ে পরায় প্রতিদিনই তাকে দেখতে বাড়িটিতে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা।
জেলা শহর থেকে সাহেব বাবুকে দেখেতে এসেছেন বেশকিছু উৎসুক জনতা। তারা জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাটোরের সাহেব বাবুর খবর শুনে দেখতে এলাম। এত বড় ষাঁড় দেখে অবাক হয়েছি আমরা।
সাহেব বাবু নামক ষাঁড়টির মালিক মোঃ আশরাফুল ইসলাম জানালেন, ষাঁড়টির রং সাদা কালো। আদর করেই এর নাম রাখা হয়েছে নাটোরের সাহেব বাবু।সাহেব বাবু খুবই শান্ত প্রকৃতির। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরামর্শে সম্পূর্ণ দেশীয় খাবার খাওয়ানো হয়েছে। ক্ষতিকর কোনো ওষুধ কিংবা বিকল্প খাবার ছাড়াই সাহেব বাবুর ওজন প্রায় ৩৩, মণ। এর দাম চাইছি ২০ লাখ টাকা।
এদিকে করোনার এ সময়ে হাটে নাটোরর সাহেব বাবু বিক্রি করা নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন আশরাফুল ইসলাম।
তিনি আরও বলেন, সাহেব বাবুর পেছনে প্রতিদিন অনেক টাকা খরচ হয়। তার নিরাপত্তা দিতেও এখন রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমাদের মতো ছোট বাড়ি ঘরে এত বড় ষাঁড় রাখাও কঠিন। এ ঈদে সাহেব বাবুকে বিক্রি করতে না পারলে আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হব।
কৃষক আশরাফুল ইসলাম বলেন, সাত বছর আগে ২০১৩ সালের শেষের দিকে মাত্র একটি গরু দিয়ে গরু পালন করা শুরু করেন তিনি। বর্তমানে তার বাড়িতে ৬টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে ২টি ষাঁড় এবার কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
গুরুদাসপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোস্তফা বলেন, আশরাফুল ইসলাম বাড়ির ছোট খামারের মতো উপজেলায় আরও ৩৫১ টি খামর রয়েছে। তবে এত বড় ষাঁড় আর কোথাও নেই। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরামর্শেই ষাড়টি রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছে।
আমারসংবাদ/এআই