চাঁদপুর প্রতিনিধি
জুলাই ১২, ২০২১, ১১:৩০ এএম
ইলিশের সবচেয়ে বড় বাজার (মোকাম) চাঁদপুর মাছঘাট। যার পরিচিতি ইলিশ বন্দর হিসেবে। সেই ঘাটের চিরচেনা রূপ বদলে গেছে। গত আড়াই মাসের মন্দাভাব কাটিয়ে এখন কিছু ইলিশ আসতে শুরু করেছে।
সোমবার (১২ জুলাই) দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় নদ নদী থেকে জেলেদের আহরিত চার থেকে পাঁচ’শ মণ ইলিশ ঘাটে আমাদানি হয়েছে। তাতে ইলিশ বন্দর শ্রমিকদের ব্যস্ততা, ক্রেতাদের ভিড় বেড়ে গেছে। আড়তদারদের মুখে ফুটে উঠেছে হাসি। ঘাটে নোঙর করা কয়েকটি ট্রলারের খোল ভরে আছে রুপালি ইলিশে।
প্রতিবছর এ সময়ে এই মোকামে বিপুল পরিমান ইলিশ আসতো। আর আড়তের সামনে ইলিশের রাখার জায়গা থাকত না। সেখানে পুরো ঘাটে কিছু ইলিশ আশায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে বড় স্টেশন মাছঘাটে।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সভাপতি আব্দুল বারী জমাদার মানিক জানিয়েছেন, মৌসুমের যে পরিমাণ মাছ থাকার কথা ওই পরিমাণ ইলিশ আসছে না। মৌসুম অনুযায়ী ওই পরিমাণ মাছ হয় নাই।
তিনি বলেন, ভোলা, হাতিয়া ও মনপুরা উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় তিন থেকে চার’শ মণ ইলিশ একদিনে আমদানি হয়েছে। আমাদের লোকাল নদীতে মাছ নেই। দক্ষিণ অঞ্চলের জেলেরা এখন কিছু মাছ পাচ্ছে। এ কারনে ঐতিহ্যবাহী এই ইলিশ ঘাটের কিছুটা প্রাণ ফিরে এসেছে।
মৎস্য ব্যবসায়ীদের এই নেতা আরো বলেন, গত কয়েক মাস মাছ না থাকায় এখানকার আড়ৎদার ও ইলিশ ব্যবসায়ীদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। অথচ উপকূলীয় এলাকার মাছকে গভীর সাগরের ইলিশ বলে স্থানীয় প্রশাসনকে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে একটি চক্র। নৌ পুলিশ দুই দফা ঘাটে এসে দেখে গেছেন। সাগরের ইলিশের কোনো প্রমাণ তারা পায় নাই।
সরজমিনে ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, রোববার দুটি এবং সোমবার তিন-চারটি ট্রলার ঘাটে এসেছে।
হাজী আব্দুল গফুর জমাদ্দার, হাজী আব্দুল মালেক খন্দকার, আঃ খালেক মালের আড়তে এই মাছ উঠানো হয়। মুহুর্তের মধ্যে সেখানে ক্রেতাদের ভিড় জমে যায়। চলে দরদামের হাঁকডাক।
হঠাৎ লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠে থাকা জেলা প্রশাসনের মোবাইল টিমও সেখানে আসে। সেনা সদস্যদের উপস্থিতিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন।
এদিকে, ইলিশের আমদানি হওয়ায় দাম কিছুটা কমেছে। পাইকারি প্রতিমণ ইলিশ আড়তে বিক্রি হয়েছে ১৬ হাজার ৫০০ টাকা থেকে সাড়ে ২২ টাকা হাজার টাকা দরে। দামও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে। এক সপ্তাহ ধরে দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীতে ইলিশের এমন প্রাচুর্য অবাক করেছে ব্যবসায়ী, জেলে, ক্রেতাসহ সবাইকে। কারণ, এবার ইলিশ মৌসুমে এত ইলিশ চাঁদপুর ঘাটে দেখা যায়নি। সামনের দিনগুলোতে আরও বেশি পরিমাণে ইলিশ ঘাটে আসবে বলে আশা করেন স্থানীয় আড়তদাররা।
আর দেশের ইলিশ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মৌসুমে ইলিশের এমন প্রাচুর্য অস্বাভাবিক নয় বরং ইতিবাচক।
আমারসংবাদ/কেএস