Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

করোনাকালে পথে পথে ছুঁটছেন ইউএনও

হরিণাকুন্ডু (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি 

জুলাই ১৩, ২০২১, ০৭:৫৫ এএম


করোনাকালে পথে পথে ছুঁটছেন ইউএনও

মহামারি করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ (কোভিড-১৯) মোকাবিলায় সারাদেশে চলছে লকডাউন। কঠোরভাবে এই লকডাউন কার্যকর করতে মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী মানুষকে ঘরে রাখতে কাজ করছেন মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। চলছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান। প্রতিদিনই হচ্ছে জেল-জরিমানা। এর পাশাপাশি চলছে সচেতনতামূলক নানা কর্মকাণ্ড।

লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায় মানুষদের সরকারের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা হিসেবে দেওয়া হচ্ছে উপহারসামগ্রী। আর এসব কিছু নিয়ন্ত্রণে রাতদিন নিরলস কাজ করছেন মাঠ প্রশাসনের এক কর্মকর্তা। তিনি ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা নাফিস সুলতানা। 

করোনা মহামারি থেকে মানুষকে ভালো রাখতে তার অক্লান্ত ছুঁটে চলা ইতোমধ্যে প্রশংসিত হয়েছে সবমহলে। এসবের পরেও সরকারের নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড দেখভাল ও পরিচালনায়ও রয়েছে এই কর্মকর্তার সততা ও দক্ষতার ছাপ। বাল্যবিবাহ নিরোধ, আত্মহত্যা নিয়ন্ত্রণ আর সামাজিক নানা সমস্যা সমাধানেও তার প্রচেষ্টার অন্ত নেই। ইতোমধ্যে এই কর্মকর্তার প্রশংসনীয় কর্মকাণ্ডে এসব অপরাধ অনেকটায় কমে এসেছে। অসহায় মানুষের সহযোগিতায় তার জুড়ি মেলা ভার বলে প্রচার রয়েছে সর্বত্র। অসহায় মানুষকে খুঁজে ঘর দেওয়াসহ সরকারের সামাজিক নিরাপত্তার নানা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত ও মানবিক সহায়তার কারণে উপজেলাজুড়ে অসহায় মানুষের স্বজন হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন এই কর্মকর্তা।

প্রতিদিনি সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত উপজেলার এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ছুঁটছেন এই কর্মকর্তা। কখনও হাটেবাজারে আবার কখনও গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে হ্যান্ডমাইক হাতে করছেন সচেতনতামূলক প্রচারণা। আবার দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে চালাচ্ছেন নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত। অসহায় মানুষের বাড়ি বাড়ি ছুঁটছেন সরকারের খাদ্য সহায়তা নিয়েও। এ যেন ক্লান্তিহীন ছুঁটে চলা। 

সচেতন মহল বলছেন, একজন নারী কর্মকর্তা হয়েও তিনি যেভাবে মানুষকে ভালো রাখতে রাতদিন ছুঁটে চলেছেন তা সত্যিই অকল্পনীয়। এর আগে এই উপজেলায় মাঠ প্রশাসনের কোন কর্মকর্তাকে এভাবে কখনও জনসাধারণের জন্য কাজ করতে দেখা যায়নি বলেও চাওর হচ্ছে উপজেলাজুড়ে।

মঙ্গলবার ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে জাহানার বেগম নামে এক অসহায় নারী এসেছিলেন ইউএনও‘র কার্যালয়ে। কী বিষয়ে এসেছেন জানতে চাইলে তিনি জানান, স্বামী দিনমজুর, লকডাউনে কাজ নেই, শুনেছি স্যার খুব বালো মানুষ। তাই প্রতিবেশির কাছে  শুনে ফোন করেছিলেন। উনি অফিসে আসতে বললেন। দিলেন খাদ্যসামগ্রী।

আসাদুজ্জামান আলম নামে এক স্কুল শিক্ষক বলেন, এর আগে কখনও মাঠ প্রশাসনের শীর্ষ কোন কর্মকর্তাকে এভাবে পরিশ্রম করতে দেখিনি। করোনার প্রথম থেকেই এ কর্মকর্তা মানুষকে ভালো রাখতে নিরলস কাজ করছেন। একজন ফ্রন্টলাইন করোনাযোদ্ধা হিসেবে তিনি নিজেকে সাধারণ মানুষের জন্য নিয়োজিত করেছেন। তার সততা ও কর্মদক্ষতা সবমহলে সমাদৃত।

জামাল উদ্দিন নামে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ইউএনও মহোদয় অত্যন্ত ভালো মনের মানুষ। আমরা প্রায়ই নানা কাজে তার কাছে যায়। তিনি আন্তরিকতার সাথে আমাদের কথা শোনেন এবং দ্রুত সমাধান দেন।

ইউএনও সৈয়দা নাফিস সুলতানা বলেন, সরকারের একজন কর্মকর্তা হিসেবে নয়, জনগনের সেবক হিসেবে কাজ করছি। সাধারণ মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন। তার ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ গঠনে একজন ক্ষুদ্র সারথী হিসেবে নিজেকে নিয়োজিত করতে চাই। মহামারি করোনা প্রতিরোধ, বাল্যবিবাহ নিরোধ, আত্মহত্যা নিয়ন্ত্রণ, বাজার নিয়ন্ত্রণসহ সরকারের উন্নয়নমূলক সকল কাজ সততার সাথে পরিচালনা করতে তিনি উপজেলাবাসীর সহযোগিতা কামনা করেণ।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, ইউএনও মহোদয় একজন সৎ ও কর্মদক্ষ মানুষ। করোনাকালেও তার ভূমিকা প্রশংসনীয়। উপজেলার মানুষের জন্য তিনি নিরলস কাজ করছেন। আমরাও তাকে এসব কাজে সহযোগিতা করছি।

আমারসংবাদ/কেএস