আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সিরাজদীখান (মুন্সীগঞ্জ)
জুলাই ১৩, ২০২১, ১০:৩০ এএম
করোনা ভাইরাস মহামারির এসময়ে আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সশরীরে উপস্থিতি নিরুৎসাহিত করতে অনলাইনে পর্যায়ে গবাদিপশু বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেছে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস।
এতে গত ১০ দিনে অনলাইন পশুর হাট থেকে প্রায় ৭৪ গবাদিপশু বিক্রি হয়েছে। ক্রেতারা প্রায় ৮০ লাখ টাকায় ওই সংখ্যক পশু কিনেছেন। গত ১ জুলাই অনলাইনে পশুর হাটের কার্যক্রম উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস শুরু করে। আর ৩ জুলাই থেকে বিক্রি শুরু হয়ে মঙ্গলবার ১৩ জুলাই পর্যন্ত ১০ দিনে ৭৪টি গবাদিপশু বিক্রি হয়েছে।
অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ৭টি করে পশু বিক্রি হয়েছে। এই ১৩ দিনে কোরবানিযোগ্য ৬৮৫ গবাদিপশুর তথ্য অনলাইনে আপলোড করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণে এবার অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রি বাড়বে বলে আশা করছেন বিক্রেতারা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে দিন দিন অনলাইন বাজার চাঙ্গা হয়ে উঠছে। অনলাইন বাজারের মধ্যে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের উদ্যোগে ১টি হাট পরিচালিত হচ্ছে। তবে ব্যক্তি পর্যায়ে অনলাইনে পশু বিক্রি তথ্য জানা যায়নি।
এ উপজেলায় ছোট বড় প্রায় ৩ হাজার গরুর খারার রয়েছে। প্রায় ১শ ছাগলের ছোট বড় খামার গড়ে উঠেছে। এখন অনেক শিক্ষিত যুবক ডেইরী ফার্ম ও গরু মোটা তাজাকরণকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। যে কারণে প্রত্যন্ত এলাকায় ছোট ছোট গরু, ছাগলের খামার গড়ে উঠেছে। সারাবছর কসাইদের কাছে বিক্রির পাশাপাশি কিছু কিছু স্পেশাল গরু তৈরি করা হয় কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে।
এছাড়া গ্রামের একজন বিধবা নারী বা সাধারণ কৃষক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ গরু, ছাগল পালন করে যাচ্ছে। ছোট বড় গরুর খামারে প্রায় ৬ হাজার ৫শর বেশি গরু রয়েছে। এছাড়া ছাগল প্রায় ২ হাজারের বেশি।
খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনা ভাইরাস বৃদ্ধি পাওয়ায় খামারীরা এখনো দুশ্চিন্তামুক্ত হতে পারেননি। মূলত কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সারাবছর গরু লালন-পালনে তারা বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেন। তাই এখন পশু বিক্রি করতে না পারলে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়বেন খামারীরা। এই জন্য অনলাইনে গবাদিপশু বিক্রির চেষ্টা করছেন তারা।
মিথুন ডেইরী এন্ড এগ্রো নামের খামারের মালিক শীতল হাওলাদার বলেন, এবারের ঈদুল আজহায় ৮০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকার মধ্যে আমার খামারের ৪০টি গরু বিক্রি করবো। গরুর ওজন ২০০ থেকে ৯০০ কেজি পর্যন্ত। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে গরু গুলো মোটাতাজা করা হয়েছে।
এসব গরু সংগ্রহ করা হয় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে। খামারে এসব গরু ১০ থেকে ১২ মাস লালন পালনের পর বিক্রির উপযোগী হয়ে ওঠে। এখন আমরা অনলাইনের মাধ্যমে কোরবানির পশু বিক্রি শুরু করেছি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.মো.হাসান আলী বলেন, করোনা ভাইরাস মহামারীর ঊর্ধ্বগতির সময় তাই অনলাইনে গবাদিপশু বিক্রি জোরদার করা হয়েছে। খামারীরা আমাদের কাছে আসছেন অথবা খামাদীদের নিজস্ব ফেসবুক পেইজ, বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে তারা পশুর তথ্য আপলোড করছেন।
এছাড়া আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারী আছে তাদের মাধ্যমে খামারীর আপলোড করা পশুর সুস্থতা, ওজন, দাম নজরদারি করছি। কেউ অসুস্থ পশু বা ভুল তথ্য দিলে তা সরিয়ে দিচ্ছি। এ বছর অনলাইনে গবাদিপশু বিক্রির পরিস্থিতি ভালো। গতবারের তুলনায় মানুষ বেশি সচেতনও হয়েছে। বিক্রিও ভাল হচ্ছে।
আমারসংবাদ/এআই