Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪,

ভালো নেই পাকুন্দিয়ার পত্রিকা বিক্রেতারা

এম এ হান্নান, পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ)

জুলাই ১৪, ২০২১, ০৯:৪০ এএম


 ভালো নেই পাকুন্দিয়ার পত্রিকা বিক্রেতারা

কিশোরগঞ্জে পাকুন্দিয়া পুলেরঘাটে বুধবার (১৪ জুলাই) ইসলামীয়া লাইব্রেরী এন্ড পেপার হাউজ নিজ দোকানে বিষন্ন মনে অলস বসে আছেন পত্রিকা এজেন্ট মোঃ শরিফুল ইসলাম। তার এই দোকানে বসেই গত ৪০ বছর যাবত সকল জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা বিক্রি করেন তিনি। 

একসাথে সব পত্রিকা এই দোকানে পাওয়া যায় বলে- অনেকেই পত্রিকা ক্রয়ের জন্য চলে আসেন তার কাছে। সে কারণে পত্রিকা বিক্রির জন্য পাকুন্দিয়া ব্যাপক পরিচিত বিপণনকর্মী শরিফুল ইসলাম। সেখানে বসে আজও পত্রিকা বিক্রি করেন তিনি।

কিন্তু করোনার এই কঠিন সময়ে চরম অর্থসঙ্কটে রয়েছেন তিনি। পত্রিকা কেনার গ্রাহক অনেক কমে গেছে। মানুষ ঘরবন্দী থাকায় সারাদিনেও আগের মতো পত্রিকা বিক্রি হয় না তার। দৈনিক আমার সংবাদ এই প্রতিবেদককে দেখে তার চলমান সঙ্কটের কথা তুলে ধরার চেষ্টা করলেন। অবশেষে তার সাথে অনেক্ষণ কথোপকথন হলো। 

তিনি জানালেন, আগে প্রতিদিন তার দোকানে যে পরিমাণ পত্রিকা বিক্রি হতো এখন তা অর্ধেকেরও নিচে নেমে এসেছে। সারাদিন পত্রিকা বিক্রি করে এখন আর তার সংসার চলে না। প্রতিদিন সকালে তার পত্রিকার দোকান খোলার আগে তিনি বেশ কয়েকজন গ্রাহকের বাসা ও অফিসে পত্রিকা সরবরাহ করতেন, ওই নিয়মিত গ্রাহকদের অনেকেই এখন পত্রিকা রাখা বন্ধ করে দিয়েছেন। সবমিলিয়ে করোনার এই সময়ে চরম অর্থসঙ্কটে চলছে তার দিনকাল।

শুধু এজেন্ট শরিফুল ইসলাম নন, তার মতো এই উপজেলা ২০/২৫ পত্রিকা বিক্রেতা এখন মারাত্মক আর্থিক সঙ্কটে দিন কাটাচ্ছেন।  আমার সংবাদ পত্রিকা বিক্রি করেন মোঃ চন্নু মিয়া। তিনি এই পেশা ছেড়ে দেবেন বলে ভাবছেন। তিনি পত্রিকা কম বিক্রির কারণ হিসেবে ইন্টারনেটকে দায়ী করেছেন।

এত সমস্যার পরেও যোগ হয়েছে নতুন করে করোনা লকডাউন এতে বেশি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন পত্রিকার হকাররা। উপার্জনের শেষ অবলম্বন হারিয়ে এখন চোখে সরষে ফুল দেখছেন তারা। 

হকাররা দাবি করেন, যত দিন করোনা লকডাউন না গেছে আমাদের এই অবস্থায় চলতে হবে এই হতাশার কথা বললেন পাকুন্দিয়া পত্রিকা হকার চন্নু। 

দৈনিক আমার সংবাদ উপজেলা প্রতিনিধি পাকুন্দিয়া উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ হান্নান বলেন, মানুষ এখন পেপার পড়া কমিয়ে দিয়েছে, তারা বলছে- অধিকাংশ পেপারে যে খবর ছাপা হয় তা আগের দিনই আমরা অনলাইনে ও টিভিতে পেয়ে যাচ্ছি। ইদানিং করোনার অজুহাতে অনেকে পেপার রাখা বন্ধ করে দিয়েছেন। সবমিলিয়ে আমাদের পেপার বিক্রি অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। পত্রিকার বিপণনকর্মীদের এমন সঙ্কটময় মুহূর্তে সরকারের সহায়তা আবশ্যক। নচেৎ পরিবার নিয়ে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে। 

দৈনিক যুগান্তর উপজেলা প্রতিনিধি পুলেরঘাট আঞ্চলিক প্রেসক্লাবের সভাপতি এম সাঈদুল ইসলাম বলেন, ১৯৭৪ সাল থেকে এই একই রেটে চলছে পত্রিকা বিপণন। অনেক সময় গড়িয়েছে। দুই টাকার পত্রিকা ৫ /১০ টাকা হয়েছে, সবার লাভ বেড়েছে। কিন্তু হকারদের আয় বাড়েনি। 

এদিকে আর একজন পেপার বিক্রেতা সোহেল মিয়া কথা বলেন, করোনাকালীন এই সঙ্কটে গণমাধ্যমের সবাই কমবেশি সঙ্কটে রয়েছেন। বিশেষ করে আমাদের পত্রিকা বিপণনকর্মীদের (হকার) পরিবারগুলো মারাত্মক আর্থিক দৈন্যতার মধ্য দিয়ে দিনযাপন করছেন, তাদেরকে প্রণোদনার আওতায় এনে সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা এখন সময়ের দাবি।

আমারসংবাদ/এআই