Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

ফেনীতে স্থানীয় পশু দিয়েই মিটবে কোরবানির চাহিদা

মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, ফেনী

জুলাই ১৪, ২০২১, ১১:৫৫ এএম


ফেনীতে স্থানীয় পশু দিয়েই মিটবে কোরবানির চাহিদা

ফেনীতে এবার স্থানীয় পর্যায়ের পশু দিয়েই মিটবে কোরবানির চাহিদা। জেলায় ৭২ হাজার কোরবানির পশুর বিপরীতে ৮০ হাজারের অধিক গরু, মহিষ ও ছাগল প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রাণীসম্পদ বিভাগ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলায় কোরবানির জন্য ৭২ থেকে ৭৫ হাজার গরু, ছাগল ও মহিষের প্রয়োজন পড়ে। এর বিপরীতে গৃহপালিত ও জেলার বিভিন্ন খামারে বর্তমানে বিক্রয়যোগ্য ৮০ হাজার ৮৬৫টি গবাদি রয়েছে। 

এরমধ্যে ফেনী সদর উপজেলায় ২১ হাজার ৩২২টি, দাগনভূঞা আট হাজার ৮৩০টি, ছাগলনাইয়ায় ১৮ হাজার ৭২৫টি, সোনাগাজীতে ১৭ হাজার ৫০৫টি, ফুলগাজীতে পাঁচ হাজার ২০৬টি এবং পরশুরাম আট হাজার ২২৭টি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। 

এবার করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অনেকেই বসতবাড়ি ও তার আশপাশে বাণিজ্যিকভাবে গরু ও মাহিষের খামার গড়ে তুলেছেন। এতে করে অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় এবার অনেক বেশি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত হয়েছে। 

এদিকে করোনার প্রাদুর্ভাবের পাশাপাশি চোরাইপথে ভারতীয় গরু এলে লোকসানের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় খামারিরা। 

ভারতীয় গরুর প্রবেশ প্রসঙ্গে খামারি সাজেল চৌধুরী বলেন, পরশুরামের বক্সমাহমুদের খাজুরিয়া ও মির্জানগর সীমান্ত দিয়ে প্রতি রাতে কয়েকশ গরু প্রবেশ করে। 

এভাবে যদি গরু ঢোকে, তাহলে দেশি খামারিদের সব কষ্ট, শ্রম ও পুঁজি বৃথা যাবে। সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতীয় গরু প্রবেশ বন্ধে নজরদারি বাড়িয়েছে বলে বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

মালয়েশিয়া ফেরত সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আনিসুর রহমান শরীফ জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে তিনি ফের প্রবাসে যেতে না পারায় নিজ বাড়ীতে গরু খামার গড়ে তোলেন। তার খামারে দেশী জাতের বেশ কয়েকটি গরু রয়েছে। প্রতিটি গরু প্রকারভেদে ৮০ হাজার থেকে দুই লাখ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম পাবেন বলে তিনি মনে করছেন। 

সোনাগাজীর উপজেলার চরছান্দিয়া ইউনিয়নের মহিষ খামারি আবুল হোসেন বলেন, তার খামারে এখন ৭৫টি মহিষ রয়েছে। এগুলো কোরবানির বাজারে বিক্রি করতে তিনি প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রতিটি মহিষ ৭০ থেকে ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম পাবেন বলে তিনি প্রত্যাশা করছেন। 

সদর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. নাজমুল হক জানান, করোনা পরিস্থিতিতে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পেশা পরিবর্তন করেছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষ কৃষি ও পশুপালনে নিয়োজিত হয়েছেন।আগ্রহী ব্যক্তিদের প্রাণীসম্পদ বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হয়েছে। 

জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আনিসুর রহমান বলেন, ফেনীতে কোরবানির জন্য ৭২ হাজার পশুর চাহিদার বিপরীতে জেলার বিভিন্ন খামারে প্রস্তুতকৃত ৮০ হাজারের অধিক গুরু, ছাগল ও মহিষ বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে।

ফেনীস্থ ৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুর রহিম বলেন, কোরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে সীমান্তে গরু চোরাচালান রোধে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বিজিবির সদস্যরা। চোরাচালান রোধে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান আমার সংবাদকে জানান, অবৈধ পথে ভারতীয় পশু আসা বন্ধ করার জন্য বিজিবি ও পুলিশকে টহল বাড়ানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিনি গরু বাজারে আসা ক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনুরোধ জানান।

আমারসংবাদ/এআই