Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

করোনার কারণে ক্রেতা কম, কর্মকারদের মাঝে দুঃশ্চিন্তা

মো: জামাল আহমেদ, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি:

জুলাই ১৬, ২০২১, ১০:২০ এএম


করোনার কারণে ক্রেতা কম, কর্মকারদের মাঝে দুঃশ্চিন্তা

আর ৪ দিন পর কোরবানির ঈদ। ঈদকে সামনে রেখে প্রতি বছর ব্যস্ত সময় পার করতেন কিশোরগঞ্জের ভৈরবের কর্মকার সম্প্রদায়ের লোকজন। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নিরলসভাবে দা, ছুরি ও বটি তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকতেন তারা। কোরবানি উপলক্ষে অর্ডার নেয়া ধারালো অস্ত্র ঠিক সময় তৈরি করে দিতে দিন-রাত কাজ করতেন। কোন বিশ্রামে থাকতে পারতেন না কর্মকারা। এ বছরে করোনাভাইরাসের প্রবাহে এবার অনেকেরই পশু কোরবানি দেয়ার সামর্থ নেই। ফলে এ কারণে তাদের কোন রকম দিন যাচ্ছে চায়নার তৈরি দা, ছুরি ও বটি এবং করোনাকালে স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকায় অনেকে রেডিমেট দা, ছুরি ও বটি ক্রয় করছে। 

কোরবানির ঈদে ঘুম না থাকার কথা কামারপাড়ায়। আগে দিন কি রাত, কান পাতলেই শোনা যায় ঠুংঠাং শব্দ। কোরবানির পশু জবাই ও মাংস বানাতে আগুনের শিখায় লোহাকে পুড়িয়ে তৈরি করা হতো এসব দা, ছুরি, কুড়াল, বটি, চাপাতি অত্যাবশাকীয়। কোরবানির আগে এসব উপকরণ হাতের কাছে না থাকলেই নয়। সেগুলো সংগ্রহ ও প্রস্তুত রাখতে ব্যস্ত সবাই।

তাই এসব কিনতে এখন কামারের দোকানে আগের মত ভির জমাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। ভৈরবে প্রায় ৩০ টি দোকানে ২ সহস্রাধিক কামার রয়েছে ভৈরবের সবচেয়ে বড় কামারপাড়া হিসেবে পরিচিত রাণীর বাজার কামারপাড়া। সেখানকার কর্মকার নতুন নতুন দা, ছুরি ও বটিসহ নানান ধারালো অস্ত্র তৈরির কাজে অন্যান্য বছর ব্যস্ত সময় পার করতেন। কিন্তু এ বছর ভিন্ন। 

এসব দোকানের কারিগররা জানান, কোরবানি দিন সকাল পর্যন্ত দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা ব্যস্ত সময় পার করতেন। শুধু রাণীর বাজার কামারপট্টিই নয়, নগরীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে পল্লী এলাকার বিভিন্ন হাট-বাজারের কামারপট্টিও কামারদের ব্যস্ততা একই রকম ছিল। কথা বলার সময় পেত না। কেউ আবার পুরনো দা, ছুরি,বটি ঝালাই দিয়ে ধারালোর কাজ করতে এ বছর ক্রেতা কম থাকায় কর্মকার মাঝে যেন দুঃশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে আর কয়েক দিন পর কোরবানির ঈদ। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হব।  তারপরও আশাকরি ঈদের আগের দিন হয়ত ক্রেতারা আসবে বলে জানান তিনি।

বর্তমানে কোরবানির কাজে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্রের মধ্যে প্রতি পিস বটি প্রকারভেদে ৩শ থেকে ৮শ, দা ৩৫০ থেকে ৮শ, বড় ছুরি ৪শ থেকে ১ হাজার, ছোট ছুরি ৫০ থেকে ২শ এবং চাপাতি ৭শ থেকে ১২শ টাকায়।

দোকানে আসা কয়েক জন ক্রেতা বলেন, আর ৪ দিন পর ঈদুল আযহা তাই আগে থেকে কোরবানি দেয়ার জন্য ছুরি দা কিনতে এসেছি। পাশাপাশি পুরনো দা, ছুরি,বটি সান দেয়ার জন্য ধারালোর কাজ করতে নিয়ে এলাম। অন্যান্য সময়ের তুলনায় দা, ছুরির দাম অনেক বেশি রাখছেন বলে অভিযোগ করেন। 

আমারসংবাদ/এমএস