Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

শ্রীবরদীতে রাতের আধাঁরে ভিজিএফের চাল বিতরণ

শ্রীবরদী (শেরপুর) প্রতিনিধি

জুলাই ১৬, ২০২১, ১১:৩৫ এএম


 শ্রীবরদীতে রাতের আধাঁরে ভিজিএফের চাল বিতরণ

শেরপুরের শ্রীবরদীতে রাতের আধাঁরে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলার শ্রীবরদী সদর ইউনিয়ন পরিষদে চাল বিতরণের অনিয়মের খবর জানতে পেরে বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) রাত ৯ টার দিকে সরেজমিনে গেলে উঠে আসে এমন চিত্র। পরে সাংবাদিকরা উপস্থিত হলে বিতরণ বন্ধ করে চলে যান সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, ট্যাগ অফিসার ও ইউপি সদস্যরা। রাতের আধাঁরে চাল বিতরণ করায় এলাকার সচেতন মহলের মাঝে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। 

বৃহস্পতিবার রাত ৯ টার দিকে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, শ্রীবরদী সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম, ট্যাগ অফিসার সাইফুল ইসলাম ও ইউপি সদস্যদের উপস্থিতিতে চাল বিতরণ চলছে। ইউনিয়ন পরিষদের বারান্দায় চাল ব্যবসায়ীরা অপেক্ষা করছে। ভিতরে চাল ব্যবসায়ীদের নিজস্ব লোকজন স্লিপ (ক্রমিক নাম্বার সহ জাতীয় পরিচয়পত্র) নিয়ে অপেক্ষ করছে চাল নেওয়া জন্য। প্রত্যেকজনের নিকট ৫-১০টি করে স্লিপ। চাল বিতরণের মাস্টাররোল নিয়ন্ত্রণ করছে চেয়ারম্যানের নিজস্ব লোক সুজন সরকার ও ইউপি সদস্যরা। চাল নিতে আসা অধিকাংশ ব্যাক্তির সাথে স্লিপের নাম-ঠিকানা’র মিল নেই। একজনের নিকট থেকে একাধিক স্লিপ জমা নিচ্ছেন, কিন্তু মাস্টার রোলে টিপসই দিচ্ছেন সুজন সরকার ও এক ইউপি সদস্য। ভিতর থেকে চাল নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের বারান্দায় চাল ব্যবসায়ীরা বস্তাবন্দি করে অটোরিকশায় তুলছে। 

চাল বিতরণের এরকম পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের উপস্থিত হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন চেয়ারম্যান। এ সময় তিনি চাল নিতে আসা লোকজনের সাথে অশালীন আচরণ শুরু করেন। একপর্যায়ে রাতেই ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে স্থানীয় এলাকাবাসীরা বিক্ষোভ শুরু করে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে চাল বিতরণ বন্ধ করে চেয়ারম্যান সহ অন্যান্যরা চলে যান। স্থানীয়দের অভিযোগ চাল বিতরণের অধিকাংশ স্লিপ টাকার বিনিময়ে চাল ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রি করে দিয়েছে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা।  

সাংবাদিকের উপস্থিতি থাকাকালীন এক ব্যাক্তি অন্যোর আইডি কার্ড নিয়ে চাল নিতে আসে। এ সময় তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন এটা তার স্ত্রী’র আইডি কার্ড। পরে আইডিকার্ড হাতে নিয়ে তার স্ত্রীর নাম জানতে চাইলে তিনি তখন নাম বলতে পারেন নাই। একপর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন আইডিকার্ডধারী তার পরিচিত না। ইউপি মেম্বার চাল নেওয়ার জন্য কার্ড দিয়েছে। 

শ্রীবরদী সদর ইউনিয়ন পরিষদের ট্যাগ অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, মাস্টার রোল ও চাল বিতরণ একসাথে দেখা সম্ভব না। চালের পরিমাপ সঠিক দিচ্ছে কিনা আমি সেটা তদারিক করতেছিলাম। ইউপি সদস্যরা মাস্টার রোল অনুয়ায়ী স্লিপ যাচাই করে দিচ্ছেন। 

সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম বলেন, রাতে চাল বিতরণের নিয়ম নেই। কিন্তু লোকজন থাকায় চাল বিতরণ করেছি। 

একই ব্যাক্তির কাছে একাধিক স্লিপ থাকার বিষয়ে বলেন, তারা তাদের পরিবারের লোকজনের স্লিপ নিয়ে এসেছে। তিনি আরো বলেন ট্যাগ অফিসার একই ব্যাক্তিকে দুটি স্লিপ দিয়ে চাল দেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা আক্তার বলেন, বিয়য়টি নিয়ে আমি চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলবো। বাকী চাল বিতরণ মাস্টাররোল অনুযায়ী স্বচ্ছ ও সুষ্ঠ ভাবে বিতরণের ব্যবস্থা করা হবে। 

রাতের আধারে চাল বিতরণের নিয়ম আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, যদি একদিনে বিতরণ শেষ করার প্রস্তুতি নিলে, সেক্ষত্রে সন্ধ্যা হতে পারে। 

আমারসংবাদ/কেএস