Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

আউটসোর্সিং শ্রমিকদের বেতনে নয়-ছয়

মো: মামুন মিয়া, মানিকগঞ্জ

জুলাই ১৭, ২০২১, ০৩:২৫ পিএম


আউটসোর্সিং শ্রমিকদের বেতনে নয়-ছয়

মানিকগঞ্জের কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অস্থায়ী নিয়োগপ্রাপ্তদের বেতন থেকে অর্থ কেটে রাখছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মিম ট্রেডার্স। প্রতি শ্রমিকের কাছ থেকে দুই হাজার ১৩০ টাকা করে কেটে রাখা হচ্ছে। ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে মোট শ্রমিক রয়েছেন ৩৪ জন। 

অর্থাৎ ৩৪ জন শ্রমিকের কাছ থেকে প্রতি মাসে ৭২ হাজার ৪২০ টাকা কেটে রাখছে প্রতিষ্ঠানটি। গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এভাবে বেতন কাটা হচ্ছে বলে শ্রমিকরা জানিয়েছেন। সে হিসেবে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত মোট ১২ লাখ ৩১ হাজার ১৪০ টাকা আত্মসাৎ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। 

জানা যায়, কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিচ্ছন্নতাকর্মী, অফিস সহকারি, নিরাপত্তা প্রহরী ও লাশ বহনকারীসহ একাধিক পদে ৩৪ জন জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মিম ট্রেডার্স জনবল নিয়োগের কার্যাদেশ পান। জনবল নিয়োগের সময়ই শ্রমিকদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার অভিযোগ উঠে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। 

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নয়, জনবল নিয়োগ দিয়েছেন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। নিয়োগের কথা বলে তারা শ্রমিকদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন।

শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাসপাতাল থেকে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত সবার বেতন দেওয়া হয় ১৬ হাজার ১৩০ টাকা করে। আর ৩৪ জন শ্রমিকের মোট বেতনের ৫ শতাংশ হারে লাভ দেওয়া হয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। শ্রমিকরা তাদের বেতন শীটে ১৬ হাজার ১৩০ টাকার অনুকূলে স্বাক্ষর করেন। তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাদেরকে ১৪ হাজার টাকা করে পরিশোধ করেন।   তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে নিরাপত্তা প্রহরীর দায়িত্ব পালন করছেন হুমায়ুুন কবির।

তিনি বলেন, আমি যে বেতন র্শীটে সাইন করি, সেখানে উল্লেখ আছে ১৬ হাজার ১৩০ টাকা। তবে আমাকে দেওয়া হয় ১৪ হাজার  টাকা। প্রায় এক বছর ধরেই এভাবেই দিচ্ছে। আমরা এই বিষয়টি নিয়ে প্রিন্সিপালের সঙ্গে কথা বলেছিলাম, তবে কোনো সুরহা হয়নি।

পরিচ্ছন্নতাকর্মী অমল, নিরাপত্তা প্রহরী শিব চন্দ্র দাস, করোনা ল্যাবে দায়িত্বরত নাসিমা বেগম ও অফিস সহায়ক বিপ্লব হোসেনসহ একাধিক শ্রমিক জানান, তাদের প্রত্যেকের বেতন থেকে প্রতি মাসে দুই হাজার ১৩০ টাকা করে কেটে রাখেন ঠিকাদার মোশারফ। তবে চাকরি হারানোর ভয়ে আমরা এর প্রতিবাদ করতে পারি না।

বেতন কেটে রাখার বিষয়টি স্বীকার করে মিম ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারি মোশাররফ হোসেন বলেন, ঠিকাদারী লাইসেন্স আমার হলেও মানিকগঞ্জে আমি কাজ করি না। শাহীন আমার লাইসেন্স নিয়ে মানিকগঞ্জে কাজ করে। তাই এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. জাকির হোসেন বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি, তাই এ বিষয়ে কোন কিছু বলতে পারবো না। আমাকে সব নথিপত্র দেখে বলতে হবে।

আমারসংবাদ/এআই