Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

বরিশালের ৩ জেলা করোনার নয়া ‘হটস্পট’, বেড়েছে আক্রান্ত-মৃত্যু

বরিশাল প্রতিনিধি 

জুলাই ২৯, ২০২১, ১১:৩৫ এএম


বরিশালের ৩ জেলা করোনার নয়া ‘হটস্পট’, বেড়েছে আক্রান্ত-মৃত্যু

প্রাণঘাতি করোনা প্রাদুর্ভাবে বরিশাল বিভাগের কয়েকটি জেলায় আবারও সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে শুরু করেছে। গত বছর এসব জেলায় সংক্রমণের হার নিম্নমুখী থাকলেও চলতি জুলাই মাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হারে গত ১৬ মাসের রেকর্ড ভেঙেছে। নতুন করে ‘হটস্পট’ হয়ে ওঠা বিভাগের তিনটি জেলায় করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। গত এক মাসে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু দেখা দিয়েছে বিভাগের বরিশাল, বরগুনা ও ভোলা জেলায়। 

বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) সকালে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, গত ৫ জুলাই বরিশাল জেলায় শনাক্তের হার ছিল শতকরা ২৭%। ক্রমেই তা বেড়ে হয়েছে ৫৩ শতাংশ। ভোলা ও বরগুনায় গত তিন সপ্তাহ আগে থাকা ২১% বেড়ে এখন ৪৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এসব জেলায় চলতি মাসের প্রথম থেকেই সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি থাকলেও বর্তমানে তা বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। 

বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১১ মার্চ থেকে চলতি জুলাই মাসের বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) পর্যন্ত ১৬ মাসে বরিশাল জেলায় মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৫৩০ জন। যার মধ্যে শুধু পাঁচ হাজার ৬৫২ জন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে জুলাই মাসের চার সপ্তাহে। এ পর্যন্ত জেলায় মোট ১৫৪ জনের মৃত্যু হলেও ২৮ জন মারা গেছেন চলতি মাসে। 

ভোলা জেলায় এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছে তিন হাজার ৫১৫ জনের মধ্যে এ মাসেই আক্রান্ত হয়েছে এক হাজার ৪৫৫ জন, মারা গেছে পাঁচজন। বরগুনায় বিগত ১৬ মাসে মোট আক্রান্ত হয়েছে দুই হাজার ৭৭৪ জন। যার মধ্যে শুধু জুলাই মাসেই আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ৩৩২ জন। বরগুনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মারা গেছেন ৬৫ জন, যারমধ্যে চলতি মাসেই মারা গেছে ৩৫ জন। অর্থাৎ বিগত ১৫ মাসে যতোজন আক্রান্ত হয়েছে ও মারা গেছে তার অর্ধেকই আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে চলতি মাসে। 

বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডাঃ বাসুদেব কুমার দাস আমার সংবাদকে জানান, চলতি মাসে হঠাৎ করেই করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বিভাগের কয়েকটি জেলায় উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। রোগী ও স্বজনদের অসচেতনতার জন্য ক্রমেই করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার দুটোই বৃদ্ধি পেয়েছে। 

তিনি আরও জানান, গ্রামের মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানতে চায় না, ফলে এখন গ্রামে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। পাশাপাশি করোনায় আক্রান্ত কিংবা উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর তথ্য গোপন করে রাখা হয়। পরবর্তীতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পৌঁছেলে রোগীদের গ্রাম থেকে বিভাগীয় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। 

প্রসঙ্গত, দেশে করোনা মহামারির শুরুতে ২০২০ সালের ৯ মার্চ নারায়ণগঞ্জ ফেরত পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার এক শ্রমিক বরিশাল বিভাগের মধ্যে সর্বপ্রথম আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন। সেই থেকে বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) সকাল পর্যন্ত বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৩২ হাজার ৮৪ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৫৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৮ হাজার ৬৩৮ জন। এছাড়া করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে আরও ৭৬২ জন।

আমারসংবাদ/কেএস