Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

বঙ্গোপসাগরে রুপালী ইলিশের দেখা মিলছে

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

আগস্ট ১৪, ২০২১, ১০:২০ এএম


বঙ্গোপসাগরে রুপালী ইলিশের দেখা মিলছে

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর-আলীপুর মৎস্য বন্দর সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে অবশেষে দেখা মিলেছে রুপালী ইলিশের। ইলিশ বোঝাই করে ট্রলার সমুদ্র থেকে মৎস্য বন্দরের ঘাটে আসায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরতে শুরু করেছে বন্দরের। গত দু’দিন ধরে সমুদ্র থেকে ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফেরায় হতাশা কাটতে শুরু করেছে জেলে পল্লীর পরিবারের সদস্যদের মাঝে। 

জেলেদের কাজ থেকে জানা যায়, সমুদ্র থেকে ১০০ ট্রলার ঘাটে ফিরলে কাঙ্খিত ইলিশ বিক্রী করেছে ৮-১০টি ট্রলার। অপর ৯০টি ট্রলারের সমুদ্র যাত্রার বাজার খরচ ওঠেনি মাছ বিক্রি করে। 

মহিপুর মৎস্য বন্দর সূত্র জানায়, বেশ কিছু ট্রলার গত দু’দিনে ইলিশ বোঝাই করে ঘাটে ফিরেছে। তাদের মধ্যে চট্রগ্রামের মহেষখালীর সাদেক মিয়া’র এফবি আল্লাহর দান বড় সাইজের ৮ হাজার পিস ইলিশ বিক্রি করেছে ১৩ লাখ টাকায়। আলীপুর মৎস্য বন্দরের সোবাহান খলিফা’র মালিকানাধীন ট্রলার বিক্রি করেছে ২০ লাখ টাকা। মোস্তফা খলিফা’র মালিকানাধীন এফবি জাবের বিক্রি করেছে ১৫ লাখ টাকা। আহসান’র মালিকানাধীন এফবি ঝিলিক বিক্রি করেছে ১৮ লাখ টাকা। মনি ফিস’র মালিকানাধীন এফবি মনি বিক্রি করেছে ৩০ লাখ টাকা। মহিপুর মৎস্যবন্দরের ফজলু গাজী’র মালিকানাধীন এফবি ফয়সাল বিক্রি করেছে ১৫ লাখ টাকা। ডক আনোয়ারের মাছ ধরা ট্রলার বিক্রি করেছে ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। মো: মনিরুল ইসলাম’র মালিকানাধীন কক্সবাজার ফিস’র এফবি আল্লাহ্র দান বিক্রি করেছে ২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।

বন্দর সূত্র থেকে জানা যায়, বর্তমানে প্রতিমন বড় সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ হাজার টাকা। ৭০০-৮০০ গ্রাম সাইজের ইলিশ প্রতিমন বিক্রি হচ্ছে ২৪-২৫ হাজার টাকা। এছাড়া প্রতিমন জাটকা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১২ হাজার টাকা।

মহিপুর মৎস্য বন্দরের কক্সবাজার ফিস’র মালিক মো: মনিরুল ইসলাম বলেন, গভীর সমুদ্র থেকে ফেরা চট্রগ্রাম এলাকার কিছু ট্রলার কাঙ্খিত ইলিশ পেয়েছে। স্থানীয় জেলেরা এখনও ইলিশ পায়নি। তবে সমুদ্রে ইলিশের দেখা মিলেছে এটাই খুশীর খবর।

মহিপুর মৎস্য আড়ৎ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দিদার উদ্দিন আহমেদ মাসুম ব্যাপারী বলেন, আমাদের এলাকার ট্রলারে তেমন ইলিশ ধরা পড়েনি তবে কক্রবাজারের কিছু ট্রলারে ইলিশ পেয়েছে।

আলিপুর মৎস্য আড়ৎ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো: আনছার উদ্দীন মোল্লা বলেন, সমুদ্র থেকে দু’এক দিনে বন্দরে ইলিশ আসতে শুরু করেছে। তবে তাও আশানুরুপ নয়। এতে সমুদ্রে ইলিশ পড়ছে বলা যায় না।

বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের সাসটেইনেবল কোষ্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্ট’র উপ-প্রকল্প পরিচালক মো: কামরুল ইসলাম বলেন, আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে পৃথিবীর সকল প্রাণীকূলের জৈবিক ক্রিয়া-প্রক্রিয়া, প্রজনন কর্মকাণ্ডের সময়কাল প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। ইলিশও এর বাইরে নয়। বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তনের কারনে ইলিশ’র প্রজনন সময়েও কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। 

তবে তিনি আরও বলেন, ইলিশ সাধারনত সমুদ্রের গভীর অংশে চলাচল করে। প্রজনন সময়ে এরা পানির গভীর স্তর থেকে উপরের অংশে চলে আসতে শুরু করে। আগামী দু’এক সপ্তাহে সমুদ্র উপকূল ও নদ নদীতে জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ মিলবে। বর্তমানে গভীর সুমদ্রে ১০০-১৫০ ফুট জাল ব্যবহারকারী জেলেরা ইলিশ পাচ্ছে। দু’এক সপ্তাহ পর ২০-৩০ ফুট জাল ব্যবহারকারী জেলেদের জালেও ইলিশ মিলবে।

আমারসংবাদ/কেএস