Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪,

বাল্যবিবাহ একটি সামাজিক ব্যাধি একে প্রতিহত করুন: পুলিশ সুপার জাহিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগস্ট ৩১, ২০২১, ১২:০৫ পিএম


বাল্যবিবাহ একটি সামাজিক ব্যাধি একে প্রতিহত করুন: পুলিশ সুপার জাহিদ

পুলিশ সুপার মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, বাল্যবিবাহ একটি সামাজিক ব্যাধি একে প্রতিহত করুন, এর বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলুন। 

মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) বেলা ১১ ঘটিকার সময় চুয়াডাঙ্গা পুলিশ পার্ক কমিউনিটি সেন্টারে ন্যাশনাল চিলড্রেন'স টাস্কফোর্স (এনসিটিএফ) এর আয়োজনে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে শিশু তরুণ এবং অভিভাবকদের করণীয় শীর্ষক সচেতনতামূলক কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।

এতে প্রধান অতিথি মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে বাল্যবিবাহ একটি মারাত্মক সমস্যা। ইউনিসেফের শিশু ও নারী বিষয়ক প্রতিবেদনে অনুসারে বাংলাদেশের ৬৪% নারীর বিয়ে হয় ১৮ বছরের আগে৷ বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন অনুসারে ছেলেদের বিবাহের বয়স নুন্যতম একুশ এবং মেয়েদের বয়স আঠারো হওয়া বাধ্যতামূলক।

তিনি বলেন, অশিক্ষা, দারিদ্র, নিরাপত্তাহীনতা ও সামাজিক নানা কুসংস্কারের কারণে এ আইনের তোয়াক্কা না করে বাল্যবিবাহ হয়ে আসছে।বাল্যবিবাহের প্রধান কুফল- নারী শিক্ষার অগ্রগতি ব্যাহত হওয়া ছাড়াও বাল্যবিবাহের কারণে মাতৃমৃত্যুর ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের উপায় হিসেবে চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার বলেন, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনটি বাস্তবায়নে ব্যাপক প্রচার/প্রচারণা করা প্রয়োজন। রেডিও, টেলিভিশনে ও সংবাদপত্রের মাধ্যমে বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে জনগনকে সচেতন করা যেতে পারে৷ গ্রাম পর্যায়ে বিট পুলিশিং, কমিউনিটি পুলিশিং, উঠান বৈঠক ও মা সমাবেশ এক্ষেত্রে ফলপ্রসূ হবে৷ বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করার জন্য প্রয়োজনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক বিবাহ বন্ধসহ মামলা রজ্জু করা যেতে পারে।

জাহিদুল ইসলাম আরো বলেন, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৭ এ আইনে ২২টি ধারা আছে। তন্মধ্যে ১৯ ধারা বিশেষ শর্ত-সম্পর্কিত। বাল্যবিবাহ হলেই এর জন্য শাস্তির বিধান রয়েছে। জন্ম নিবন্ধন সনদ ব্যতীত কোন অবস্থায় নিকাহ রেজিষ্টার যেন বিবাহ নিবন্ধন না করেন, সেরূপ আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে৷ প্রতিটি ইউনিয়নে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা যেতে পারে৷ নবম ও দশম শ্রেণীর পাঠ্য বইতে এ বিষয়টি অর্ন্তভুক্ত করা হলে এর সুফল পাওয়া যাবে৷ জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে বেসরকারি সংস্থাগুলোও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে৷ সরকারের দিন বদলের অঙ্গীকার রয়েছে ২০২১ সালের মধ্যে শিশু মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ৫৪ থেকে কমিয়ে ১৫ করা হবে৷ ২০২১ সালের মধ্যে মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ৩.৮ থেকে কমিয়ে ১.৫ করা হবে। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা না গেলে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না। 

সবশেষে তিনি বলেন, প্রতিটি থানাসহ পুলিশ সুপারের কার্যালয় নারী ও শিশু হেল্পডেক্স, উইমেন সাপোর্ট সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে কর্মরত নারী ও শিশু বান্ধব কর্মকর্তারা নিরবিচ্ছিন্ন সেবা প্রদান করে চলেছেন। ইতোমধ্যে উইমেন সাপোর্ট সেন্টারের মাধ্যমে স্বামী স্ত্রী'র মধ্যকার মনোমালিন্যের অবসান ঘটিয়ে অসংখ্য ভাঙ্গা সংসার জোড়া লাগানো হয়েছে। অবুঝ শিশু ফিরে পেয়েছে তাদের বাবা মাকে। আমার নিজ উদ্যোগে চুয়াডাঙ্গায় কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করলেই গর্বিত পিতা-মাতার হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে বিশেষ পুরস্কার। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ সাজিদ হোসেন, ন্যাশনাল চিলড্রেন'স টাস্কফোর্স (এনসিটিএফ) এর সদসবৃন্দ, সাংবাদিকগন, শিশুকিশোর ও অভিভাবকবৃন্দ।

আমারসংবাদ/কেএস